ঢাকা     বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১০ ১৪৩১

ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী

ফেরদৌস জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ৩০ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী

ফেরদৌস জামান :  ব্রিটিশ শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির সংগ্রাম তীব্র থেকে আরো তীব্র গতি লাভ করে বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে। শোষণ পাকাপোক্ত করার নীতি ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ কার্যকর হয় বাংলাকে ভেঙ্গে আলাদা করার মধ্যদিয়ে। বাংলার মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালে ঘোষণা করেন বঙ্গভঙ্গ।

 

বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ব্রিটিশবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলন। বিলেতি দ্রব্য বয়কট, বিলেতি লবণের নৌকা ডোবানো, আন্দোলনের গোপন কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বার্থে অর্থের প্রয়োজনে লুট ইত্যাদির মধ্যদিয়ে স্বদেশি আন্দোলন জোরদার হয়। সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আন্দোলনে নামে ছাত্র, কিশোর, যুবকরা।

 

আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একই বছরের সাত আগস্ট স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রংপুর টাউন হল। গর্জে উঠে ছাত্রজনতা। ‘বঙ্গভঙ্গ মানি না মানব না, ইংরেজ তুমি বিদায় হও, গো ব্যাক কার্জন।’ সেদিনের প্রতিবাদীদের মধ্যে ছিল রংপুর জেলা স্কুলের ছাত্র প্রফুল্ল চাকী, প্রফুল্ল চক্রবর্তী, অরবিন্দ ঘোষসহ অনেকেই। ১৯০৬ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী ও স্বদেশি  আন্দোলনে যুক্ত হয় প্রফুল্ল চাকী। শরীর ছিল বেশ সুঠোম। কুস্তি খেলা ছিল তার প্রিয়। রংপুরের ঈশান চক্রবর্তী একটি কুস্তির আখড়া গড়ে তোলেন। বান্ধব নামের এই সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বা কুস্তির আখড়ায় গোপনে গোপনে স্থানীয় ছাত্র-যুবকরা বিপ্লবী কাজের দীক্ষা নেওয়া শুর করে।

 

পরবর্তীতে প্রফুল্ল এই সংগঠনের পরিচালক হয়। এ সংগঠনের অন্যতম স্লোগান ছিল- ‘প্রয়োজন হলে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করব।’ এ সংগঠনে যোগ দিতে প্রতিজ্ঞাপত্রে স্বাক্ষর করতে হতো বুক কেটে তাজা রক্ত দিয়ে। এরইমধ্যে প্রফুল্ল জিতেন্দ্রনারায়ণ রায়ের নেতৃত্বে গুপ্ত সংগঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ইংরেজ শোষণের কবল থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে বুক কেটে রক্ত দিয়ে স্বাক্ষর করা প্রতিজ্ঞা রেখে গেছে প্রফুল্ল চাকী। তার সেই আত্মাহুতির দিনটি ছিল ১লা মে, ১৯০৮।

 

মধ্যবিত্ত এক কায়স্থ পরিবারে প্রফুল্ল চাকী জন্মগ্রহণ করে ১৮৮৮ সালের ১০ ডিসেম্বর। পূর্ববঙ্গ বর্তমান বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। বাবার নাম রাজনারায়ণ চাকী। তিনি ছিলেন বগুড়া নবাব এস্টেটে কর্মরত। মায়ের নাম স্বর্ণময়ী। ৪ ভাই (প্রতাপ নারায়ণ চাকী, জগৎ নারায়ণ চাকী, চারু চাকী ও প্রফুল্ল চাকী) ২ বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল প্রফুল্ল। মাত্র ২ বছর বয়সে পিতা হারানো প্রফুল্লের পড়াশুনার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। স্কুলে যাওয়ার বয়স হলে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় জ্ঞানদাপ্রসাদ বিদ্যালয়ে। মাইনর পাশ করার পর তাকে ভর্তি করানো হয় রংপুর জেলা স্কুলে। এরপর রংপুর ন্যাশনাল স্কুলে। এখানে পড়া অবস্থাতেই সে গুপ্ত সমিতির সদস্য হয়।

 

শুরু হয় বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে জন্ম নেওয়া স্বদেশি  আন্দোলন। আন্দোলনের সমর্থনে করমচাঁদ গান্ধীর আহ্বানে অহিংস সংগ্রাম যেমন চলছিল, তেমনি সহিংস কর্মকাণ্ড ভিত্তিক গোপন বিপ্লবী সংগঠনেরও জন্ম হতে থাকে। মূলত অকার্যকর অহিংস আন্দোলনের প্রতি আস্থাহীনতার কারণেই এসবের জন্ম হতে থাকে। শুরু হয়ে যায় বিপ্লবী সংগ্রাম। বাংলার অসংখ্য তরুণ, যুবক এই সংগ্রামে যুক্ত হয়ে ব্রিটিশ রাজকে উৎখাতের লক্ষ্যে বিপ্লবী জীবন বেছে নিতে কুণ্ঠাবোধ করল না। জিতেন্দ্রনারায়ণ রায়ের নেতৃত্বে গুপ্ত সংগঠনের মাধ্যমে স্বদেশি  আন্দোলনে প্রফুল্ল সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়ে। ক্রমেই অনুপ্রাণিত হতে থাকে বিপ্লবী ভাবাদর্শে।

 

নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকারের ‘কার্লাইল সার্কুলার’ লঙ্ঘন করে ছাত্র সমাবেশে অংশগ্রহণের দায়ে প্রফুল্লকে রংপুর জেলা স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর আবারো নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয় রংপুর ন্যাশনাল স্কুলে। রংপুরে ইতিমধ্যেই গঠিত হওয়া বিভিন্ন গুপ্ত সমিতির সমন্বয়ে নতুন আঙ্গিকে একটি বিপ্লবী সমিতি গঠনের লক্ষ্যে কলকাতা থেকে আসেন বিপ্লবী বারিন্দ্রকুমার ঘোষ। প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যাশিক্ষার পাঠ চুকিয়ে সে বছরই প্রফুল্ল নিজেকে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে উৎসর্গ করতে পাড়ি জমায় কলকাতায়। বারিন ঘোষের নেতৃত্বে গঠিত  বিপ্লবীদলের মূলকেন্দ্র ছিল বত্রিশ নম্বর মুরারিপুকুরের বাগাবাড়িটি। বারিন ঘোষ এখানেই থাকতেন। কলকাতায় গিয়ে প্রফুল্ল এই বাড়িতেই থাকত। এবং বারিন ঘোষের নির্দেশে যোগ দেয় বিপ্লবী সংগঠন ’যুগান্তর’-এ। ছদ্মনাম ’দীনেশ রায়’ ধারণের মাধ্যমে জন্ম হয় এক তেজদ্বীপ্ত বিপ্লবীর। বিপ্লবীদের প্রতি চরম রুঢ় মানসিকতার জন্য গভর্নর ব্যামফিল্ড ফুলার জনগণের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হন।

 

১৯০৬ সালে গুপ্ত সমিতির বিপ্লবীরা পূর্ববঙ্গের ছোট লাট স্যার ব্যামফিল্ড ফুলারকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একই বছর স্বামী বিবেকানন্দের ভাই ভূপেন্দ্র নাথ দত্তকে রাজদ্রোহমূলক প্রবন্ধ লেখার অভিযোগে এবং তার কয়েক সপ্তাহ পর ’বন্দেমাতরম’ সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষকে একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। কারাদণ্ড দেওয়া হয় সুরেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ব্রিটিশ সরকার সমগ্র দেশবাসীর ওপর বিশেষ করে বাঙ্গালি কিশোর, যুবকদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বহু গুণে বৃদ্ধি করে। প্রতিবাদ প্রচণ্ড রুপ নেয়। সমগ্র বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।

 

১৯০৭ সালের শেষের দিকে দেশে ব্রিটিশ শাসক আর সশস্ত্র বিপ্লবীদর সংঘর্ষ, ধরপাকড় আর নির্যাতন চলে। স্বাধীনতাকামী বিপ্লববাদী দলগুলোকে দমন করার জন্য ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী মরিয়া হয়ে ওঠে। একের পর এক বিপ্লবীকে ধরে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা রুজু করে তাদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে প্রেরণ করা হয় আন্দামান, আলীপুরসহ বিভিন্ন কারাগারে।

 

কলকাতার তৎকালীন চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ড ছিল বর্বর, নীতি নৈতিকতাহীন, অত্যাচারী এক বিচারক। এ অবস্থায় সুশীল সেন নামে ১৩ বছরের ছেলে ঘুষি মেরে এক পুলিশ সার্জেন্টের নাক ফাটিয়ে দেয়। এই সামান্য অপরাধে তার বিরুদ্ধে দায়ের হয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। তার ওপর কিংসফোর্ড বেত্রাঘাতের হুকুম দিলে রক্তাক্ত সুশীল সেন অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে। সে সময় ১৫ বছরের নিচে কোনো  মানুষকে বেত্রাঘাত করারা আইন ছিল না। অধিকন্তু সারা ভারতবর্ষে এমন কোনো নজিরও ছিল না। ঘটনার পর সারা দেশে ধিক্কার পড়ে যায়। কিংসফোর্ডের বিরুদ্ধে শুরু হয় বিক্ষোভ। সব তরুণ-যুবক বিপ্লবী সে ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইংরেজকে বিতাড়িত করার সংকল্প করে। ১৯০৮ সাল, বিপ্লবী দলের সুবোধ মল্লিক, হেমচন্দ্র, চারু দত্ত, রারীন ঘোষ ও অরবিন্দসহ অন্যান্য অত্যাচারী বর্বর কিংসফোর্ডকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

 

সভায় প্রশ্ন ওঠে এ কাজের দায়িত্ব কাকে দেওয়া যেতে পারে? আড়াল থেকে সভার আলোচনা শুনে প্রফুল্ল বলে, ‘আমি প্রস্তুত, বলুন কী করতে হবে আমাকে?’ ঠিক আছে, কিন্তু সবাই ভাবলেন এ কাজের জন্য আরো একজন দরকার। ভেবেচিন্তে মেদিনীপুরের ক্ষুদিরাম বসুর নাম ঠিক হয়। ক্ষুদিরামের অভিভাবক সত্যেন বসুর নিকট বিষয়টি অবহিত করে পত্র প্রেরণ করা হল। ক্ষুদিরাম কলকাতায় এসে পৌঁছাল। তৈরি করা হল ‘বুক বোমা’। ভেতর রাখা বিশেষ বোমা সংবলিত বইটি সুযোগ বুঝে অতি কৌশলে কিংসফোর্ডের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হল। কিন্তু বইটি না খোলার কারণে সে যাত্রায় বেঁচে যায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার কিংসফোর্ডকে সেশন জজ হিসেবে বদলি করে বিহারের মোজাফফরপুর। শুরু হয় আবার নতুন করে প্রস্তুতি। প্রফুল্ল ও ক্ষুদিরাম দুজনেই কলকাতা রেলস্টেশনে উপস্থিত হলো। এখানেই তাদের প্রথম মোলাকাত হয়। এর আগে কেউ কাউকে চিনত না। তাদের দুজনেরই বয়স ছিল বিশের নিচে। দুজন মোজাফফরপুর গিয়ে টানা ছয় সাতদিন একটি মন্দিরে অবস্থান করে এবং খুব কাছ থেকে কিংসফোর্ডের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। অতঃপর রসদ চেয়ে কলকাতায় সাংকেতিক ভাষায় পত্র পাঠায়-‘বরের সন্ধান পাওয়া গেছে এবার কিছু মিষ্টি পাঠান।’ কিংসফোর্ড সাদা ফিটন গাড়ি (জোড়ঘোড়ায় টানা) করে স্থানীয় ইউরোপীয়ান ক্লাবে যাতায়াত করে। সিদ্ধান্ত হয় ৩০ এপ্রিল তার ওপর বোমা হামলা করা হবে। ক্লাবের কাছাকাছি গিয়ে দুজনে আত্মগোপন করে অপেক্ষা করে কিংসফোর্ডের ফিটন গাড়ির জন্য। এরপর রাত ৮টায় কিংসফোর্ডের গাড়ির অনুরুপ একটি গাড়ি গেটের কাছে আসলে তারা বোমা হামলা চালিয়ে গাড়িটি উড়িয়ে দেয়। কিন্তু তা ছিল মিসেজ কেনেডী এক ইংরেজ নারী ও তার মেয়েকে বহণকারী গাড়ি। ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মার যান। উল্লেখ্য, ভারতীয় বিপ্লবীদের পক্ষ থেকে ইংরেজ শক্তিকে লক্ষ করে এটাই ছিল প্রথম বোমা হামলার ঘটনা। 

 

হামলার পর দিশাহারা হয়ে দুজনে দুদিকে ছুটতে থাকে। তখনও  তারা জানে না ভূল লক্ষ্যে বোমা হামলা হয়েছে। ক্ষুদিরাম রেল লাইনের পাশ ধরে সারারাত পাড়ি দেয় প্রায় ২৪ কিলোমিটার  পথ। ভোর নাগাদ পৌঁছে যায় ওয়েনি নামক রেলস্টেশনের কাছে। কিশোর ক্ষুদিরাম ভেবেছিল বিপদ কেটে গেছে। সারা রাতের ধকলের পর প্রচণ্ড পানির তৃষ্ণা নিবারন ও কিছু খেতে প্রবেশ করে একটি রেস্তোরাঁয়। ওদিকে বোমা হামলার এক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আততায়ীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। আততায়ীদের ধরতে সমস্ত এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ। রেস্তোরাঁতে খাওয়ার সময় ক্ষুদিরাম পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। তার আগে পিস্তল দিয়ে গুলি করে আত্মাহুতি দেওয়ার চেষ্টা চালালে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে এক প্রহসণের  বিচারে একই বছর ১১ আগস্ট তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়।

 

এদিকে প্রফুল্ল চাকী অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য ছদ্মবেশে গভীর রাতে (১মে, ১৯০৮) ট্রেনে করে কলকাতার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। টিকিট চেকার রশিকলাল গুহ নিয়মিত চেকিং-এ এসে লক্ষ করেন পাদুকাবিহীন হন্তদন্ত প্রফুল্লকে। তখনই তার সন্দেহ হয় কারণ হামলার বর্ণনায় প্রচারিত হয়েছিল ঘটনাস্থলে আততায়ীর পায়ের বেশ বড় আকারের পাদুকা পাওয়া গেছে। আর প্রফুল্লর দেহ লম্বা-চওড়া সুতরাং, পায়ের আকার স্বাভাবিকভাবেই বড় ছিল। কৌশলে রশিকলাল গুহ (পরবর্তীতে নিজ বিয়ের বাজার করতে গেলে বিপ্লবীরা রশিকলাল গুহকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে) দারোগা নন্দলাল ব্যানার্জীকে অবহিত করে। দারোগা সমস্তিপুর (মোকামাঘাট) রেলস্টেশনের কাছাকাছি জায়গায় প্রফুল্লকে দেখে সন্দেহ করে। গতিবিধি বুঝতে পেরে প্রফুল্ল চাকী পালাবার চেষ্টা করে। ট্রেন থেকে নেমে দৌঁড়ে অনেক দূর চলে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু দারোগা পিছু না ছেড়ে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে। তখন স্টেশনে পাহারারত পুলিশ ও উপস্থিত জনতা তাকে ধরার জন্য পিছু ছুটে। প্রফুল্ল আত্মরক্ষার্থে দারোগাকে লক্ষ করে একটি গুলিও ছোড়ে কিন্তু তা লক্ষভ্রষ্ট হয়ে যায়। কোণঠাসা হয়ে পড়লে অর্থাৎ ধরা পড়ার আগে সংগঠনের নীতি অনুযায়ী মুহুর্তেই নিজ কোমরে গুঁজে রাখা রিভলবার দিয়ে চিবুকের নিচে গুলি চালালে তা লক্ষভ্রষ্ট হয়ে কানের পাশ দিয়ে চলে যায়। এরপর দ্বিতীয় গুলিটি চালালে মাটিতে লুটে পড়ে এবং তার মৃত্যু ঘটে। সাম্রাজ্যবাদ ব্রিটিশ শোষণের কবল থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করার আন্দোলনে সমগ্র বাংলার প্রথম আত্মাহুতি দানকারী শহীদ প্রফুল্ল চাকী এভাবেই প্রাণ বিলিয়ে দেয়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ এপ্রিল ২০১৬/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়