ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লাখো পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার সৈকত

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লাখো পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার সৈকত

মুখরিত কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার প্রতিনিধি : ভর পর্যটন মৌসুমে টানা তিন দিনের ছুটিতে আসা লাখো পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।

 

 

 

অনেকের ঠাঁই মিলছে না হোটেল-মোটেলে। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই সৈকতের কোথাও।

 

টানা ছুটিতে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটায় খুশি হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় বাড়তি নজরদারি ও টহল জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

 

চলতি পর্যটন মৌসুমে সাপ্তাহিকের সঙ্গে বড়দিনের ছুটিসহ টানা গত তিন দিনে কক্সবাজারে অন্তত তিন লাখেরও বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটেছে ।

 

এসব পর্যটক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানীর পাথুরে সৈকত, রামুর ঐতিহাসিক রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার ও রামকোট মন্দির, ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু সাফারিপার্ক, পাহাড়-সমুদ্রের অপূর্ব মিতালীর হিমছড়ি ঝর্ণা ও দরিয়ানগর, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির ও সোনাদিয়া দ্বীপ ও বার্মিজ মার্কেটসহ দর্শনীয় বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরছেন।

 

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ এসব দর্শনীয় পর্যটন স্পটগুলো বেড়াতে আসা পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে গত কয়েকদিনের টানা ছুটিতে। স্কুলের সমাপনী পরীক্ষা শেষ হওয়ায় অনেকে ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বেড়াতে ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে।  

 

রোববার দিনের বিভিন্ন সময় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, বেড়াতে আসা পর্যটকদের সৈকতজুড়ে হই-হুল্লোড় আর সমুদ্রের নীল লোনাজলে অবগাহনের দৃশ্য। সৈকতের লাবণী, সী-গাল ও সুগন্ধা পয়েন্টে হাজার হাজার পর্যটকের এক সঙ্গে স্নানের দৃশ্য যেন আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশের ঐকতানিক উদযাপন।

 

এ ছাড়া পর্যটকদের কেউ কেউ দৌড়-ঝাঁপ দিয়ে সৈকতে সময় কাটান। অনেকে উপভোগ করেন সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে ছুটে চলা দ্রুতগতির জেডস্কি ও স্পিডবোটে করে বিশাল জলরাশিতে ঘুরে বেড়ানোর। কেউ কেউ বীচ বাইকে চড়ে সৈকতজুড়ে ঘুরে বেড়ান সমুদ্রের উঞ্চ হাওয়ার পরশের ছোঁয়া পেতে। বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকে প্যারাসেলিং করে আকাশ থেকে অবলোকন করেন পাহাড় আর সমুদ্রের অপূর্ব মিতালীর বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের নয়নাভিরাম দৃশ্য।

 

তা ছাড়া পর্যটকদের জন্য বাড়তি উপভোগ্য ছিল সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে সার্ফারদের ছুটে চলা।

 

ঢাকার কলাবাগান থেকে বেড়াতে সপরিবারে বেড়াতে আসা সানজিদা নাসরিন বলেন, স্বামী সরকারি চাকুরে আর ছেলে-মেয়েরা স্কুলে পড়াশুনা করায় বছরের অন্য সময় সচরাচর বেড়াতে আসার সুযোগ হয়ে ওঠে না। গত সপ্তাহখানেক আগে সন্তানদের স্কুলের সমাপনী পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এরসাথে টানা ৩ দিন সরকারি ছুটি থাকায় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি।

 

সময় ও সুযোগ পেলেই কক্সবাজার বেড়াতে আসার কথা জানান ঢাকার ধানমন্ডির বাসিন্দা শাহাদাত হোসাইন।

 

তিনি বলেন, ঢাকার মতো জনবহুল নগরে থাকাতেই জীবনটা একপ্রকার যান্ত্রিক হয়ে ওঠে। তাই কোলাহলমুক্ত ও নির্মল প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে কক্সবাজার ছুটে আসি। তা ছাড়া কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের দীর্ঘতম এবং আমাদের ঐতিহ্য। এর সৌন্দর্য্যই আলাদা। তাই বারে বারে ছুটে আসি কক্সবাজারে।

 

কক্সবাজার হোটেল ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতান বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের থাকার জন্য সাড়ে ৪ শতাধিকের বেশি হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। টানা ছুটিতে গত কয়েকদিনে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটেছে। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে হোটেল-মোটেলের সব কক্ষ অগ্রিম বুকিং হওয়ায় বেড়াতে আসা অনেক পর্যটক থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। এ নিয়ে বিশেষ করে ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আসা পর্যটকেরাই বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন।

 

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের কক্সবাজার ইউনিট ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের থাকার জন্য সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। এসব হোটেল-মোটেলে প্রতিদিন গড়ে দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বছরের নভেম্বরের শেষের দিক থেকে মার্চ পর্যন্ত কক্সবাজারে পর্যটকদের বেড়াতে আসার ভর মৌসুম।

 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী বলেন, গত শুক্রবার থেকে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটেছে। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় দিনে-রাত ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের নিয়মিত টহল ছাড়াও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। এ ছাড়া রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের তিনটি ভ্রাম্যমাণ দল।

 

 

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/২৫ ডিসেম্বর ২০১৬/সুজাউদ্দিন রুবেল/রিশিত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়