ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সময় এখন সেন্টমার্টিন যাওয়ার

এস এস জামিল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২০, ১০ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সময় এখন সেন্টমার্টিন যাওয়ার

এসএস জামিল : বালি, পাথর, প্রবাল আর জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে গড়া সেন্টমার্টিন অনন্য রূপে ধরা দেয়। প্রবাল সমৃদ্ধ এই দ্বীপের স্বচ্ছ পানির জেলি ফিশসহ হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ যেন প্রবাল রহস্যের জীবন্ত পাঠশালা! কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সেন্টমার্টিনের অবস্থান। এর আয়তন ১৭ বর্গ কিলোমিটার।

সেন্টমার্টিনের পূর্ব নাম ‘জাজিরা’। আরব বণিকেরা দিয়েছিল এই নাম। পরবর্তীকালে জাজিরা স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ বলে খ্যাত হয়ে ওঠে। তারও অনেক পরে ইংরেজরা এই দ্বীপটিকে ‘সেন্টমার্টিন’ নামে অভিহিত করে। দ্বীপের অধিবাসীদের প্রায় সবারই পেশা মৎস্য শিকার।

তবে ইদানীং পর্যটন শিল্পের বিকাশের কারণে অনেকেই রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল কিংবা গ্রোসারি শপের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজ-সরল, তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের আকর্ষণও বটে। স্বল্প খরচে পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।

কীভাবে যাবেন : সেন্টমার্টিন যেতে হলে আগে যেতে হবে কক্সবাজার। সেখান থেকে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে সি-ট্রাক, জাহাজ কিংবা ট্রলারে চড়ে পৌঁছতে হবে সেন্টমার্টিনে। তবে যে কোনো সমুদ্রযাত্রায় ট্রলার কখনও নিরাপদ বাহন হতে পারে না। কথাটি মনে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে জাহাজ শেষ ভরসা। প্রতিদিন ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় দূরপাল্লার বেশ কিছু বাস। ভাড়া পরিবহন ভেদে এক থেকে দেড় হাজার এবং নন-এসি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কক্সবাজার থেকে বাসে টেকনাফের ভাড়া ৯০ টাকা, ট্যাক্সিতে ১৫০ টাকা। প্রতিদিন কক্সবাজার-টেকনাফ রুটে চলাচল করে এসব গাড়ি। সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাস অবশ্য সরাসরি ঢাকা থেকে টেকনাফ যায়। এই পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া দেড় হাজার টাকা।

সেন্টমার্টিন যেতে হলে আপনাকে টেকনাফ থেকেই সি-ট্রাক, কেয়ারি সিন্দাবাদ অথবা নাফসিতে চড়ে যেতে হবে। আগেই বলেছি নিরাপদ জলযান হিসেবে জাহাজ নির্ভরযোগ্য। জাহাজে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। অন্যদিকে প্রতিদিনই বিকাল ৩টায় এসব জাহাজ সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে টেকনাফের উদ্দেশ্যে। সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য শীতকাল নিরাপদ, এসময় সাগর শান্ত থাকে।

কোথায় খাবেন : দিনে দিনে ফিরতে চাইলে অবশ্যই ৩টার আগে ফিরতি জাহাজে আরোহণ করতে হবে। দ্বীপ এলাকা ঘুরে দেখতে ৩ ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট। তবে ছেড়া দ্বীপে যেতে চাইলে সময় নিতে হবে। দ্বীপে পেট পূজার জন্য ঘাটের পাশেই পাবেন অনেক হোটেল। যেমন-

কেয়ারি মারজান রেস্তোরাঁ, বিচ পয়েন্ট, ফোন ১৮৮৮১০৮০৬, ০১৮৬৫২৮১১০ অথবা হোটেল আল্লার দান, বাজার বিচ-০১৮৯০৮৪২০৩।

এছাড়া রিয়েল রেস্তোরাঁ, হাজী সেলিম পার্ক, আসাম হোটেল, সি বিচ, সেন্টমার্টিন, কুমিল্লা রেস্টুরেন্ট, সেন্টমার্টিন টুরিস্ট পার্ক, হোটেল সাদেক ইত্যাদি তো আপনার ক্ষুধা মেটানোর জন্য রয়েছেই।

 



কোথায় থাকবেন : হোটেল বা কটেজের বাইরেও অনেক বাড়ি রয়েছে সেখানে পর্যটকদের থাকার জন্য। ভাড়া কিন্তু আগে থেকেই মিটিয়ে নিতে হবে। ভাড়া পড়বে ৩০০-৫০০ টাকা প্রতি রাতের জন্য। শীত মৌসুমে পর্যটকের চাপ বেশি থাকায় ইচ্ছা মতো ভাড়া নিতে চাইবে এর মালিকেরা। এছাড়াও হোটেল-মোটেল তো রয়েছেই। যেমন-

সীমানা পেরিয়ে : ১০টি রুমের প্রতি রুমে ৪ জন থাকার ব্যবস্থা আছে। ভাড়া রুম প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা, তাঁবুতে ৪ জন করে ৩০০ টাকা। খাবার খরচ জনপ্রতি ৫০-৭০ টাকা। যোগাযোগ : জাহাঙ্গীর ০১৮৯০১৮০২৭

প্রিন্স হেভেন : রুম সংখ্যা ১৮টি, ডাবল রুমের ভাড়া ৬০০-৮০০ টাকা। একসঙ্গে ৪ জনের থাকার ব্যবস্থা। সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা। যোগাযোগ : ০১৮৯৩০৮০৫৮

সমুদ্র বিলাস : ৪ রুমের এই বাড়িতে প্রতি রুমের ভাড়া ৫০০-১০০০ টাকা। যোগাযোগ ০১৭১১-৯৬৯৮৩৩

ব্লু মেরিন রিসোর্ট : এখানে ১৮টি ডাবল বেডরুম, ট্রিপল বেডরুম ১৩টি, ছয় জনের বেডরুম ৫টি এবং কটেজ রয়েছে ২টি। ভাড়া ডাবল ১০০০ টাকা, ট্রিপল ১২০০ টাকা, ৬ বেড ১৫০০ টাকা, ৫ বেডের কটেজ ২৫০০ টাকা। এর বাইরেও বিচ ক্যাম্প, ০১৮৮০৪১৮৯৯; হোটেল সাগর পাড় ০১৮৭০০৬৬৬৪ এবং রিয়াদ গেস্ট হাউজ ০১৮৯০৮৪২০৩ চমকপ্রদ সেবা দিয়ে থাকে। হোটেল স্বপ্ন প্রবাল, শ্রাবণ বিলাস, সরকারি ব্যবস্থাপনায় মেরিন পার্কের নামও কিন্তু প্রসিদ্ধ।

সেন্টমার্টিনের অধিবাসীরা অতিথিপ্রবণ। সেখানে বেড়াতে ভালো লাগবে এতে সন্দেহ নেই। তবে জোয়ার-ভাটা মেনে চলতে হবে। সমুদ্রে নামার আগে জেনে নিতে হবে জোয়ার চলছে, না ভাটা চলছে। ভাটার সময় সমুদ্রে নামা বিপজ্জনক। খুব বেশি নিরুপায় হলে এ সময় বড়জোর পায়ের গোড়ালি ভেজাতে পারেন, এর বেশি নয়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জানুয়ারি ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়