ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গলে স্কুবা ডাইভিংয়ের রোমাঞ্চ

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গলে স্কুবা ডাইভিংয়ের রোমাঞ্চ

গল থেকে ইয়াসিন হাসান : সৈকতের বালুকায় দাঁড়ালে চোখে পড়বে দিগন্তজোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জলরাশি। ছোট ছোট ঢেউ আছড়ে পড়ছে কিনারায়। অদ্ভুত এক সৌন্দর্য, অদ্ভুত এক অনুভূতি।

রুপালি বালু, নীল সমুদ্রের জন্য বিখ্যাত ভারত মহাসাগর। এটি দক্ষিণ এশিয়াকে ঘিরে রেখেছে এবং আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়াকে বিভক্ত করেছে। ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার গল আরো সুন্দর, আরো মনোমুগ্ধকর। গল, সমুদ্রে পাওয়া এক শহর। পুরো শহরটিকে সমুদ্র ঘিরে রেখেছে তিন দিক থেকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অংশ সমুদ্র। মহাসাগর মোট আয়তনের ৭০ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে। অর্থাৎ চোখের দেখার চারপাশ থেকে পানির নিচের জগৎটা অনেক বড়, অনেক বিস্তৃত।

পানির নিচের এ জগৎটাকে খুঁজে বের করে দুঃসাহসিক কিছু অভিযাত্রী। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপে স্কুবা ডাইভিংয়ের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। স্কুবা ডাইভিং কি? Self Contained Underwater Breathing Apparatus-(Scuba diving) 'স্কুবা ডাইভিং'। অর্থাৎ পানির নিচে ডুব দিয়ে সাঁতরানোকে বলা হয় 'স্কুবা ডাইভিং'। দুঃসাহসিক অভিযাত্রীদের বলা হয় স্কুবা ডাইভার।

স্কুবা ডাইভিং সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কার গলে। সারা বছর শ্রীলঙ্কায় পর্যটকদের অানাগোনা থাকে। পর্যটকদের পছন্দের এক কাজ স্কুবা ডাইভিং। গলের ওয়ানাটুনা ডিকওয়ালা বিচ স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য সমাদৃত। এখানে স্কুবা ডাইভিং নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকান কোম্পানি প্যাডি। গলে প্যাডির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এনজেল ডাইভিং প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও সহকারী ডাইভিং প্রশিক্ষক সুনঞ্জিত পারেরা রয়ালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শীতকাল স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের প্রচুর ভিড় থাকে। সে সময়ে প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে দেড়শ পর্যটক স্কুবা ডাইভিং করে থাকেন। এ ছাড়া বছরের বাকিটা সময় গড়ে ৩০ থেকে ৫০ পর্যটক স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য পাওয়া যায়।

ডাইভিংয়ের লাইসেন্স থাকলে ৭ থেকে ৮ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপি খরচ পড়বে। তবে লাইসেন্স না থাকলে ১৩ হাজার রুপি খরচ হবে। তবে সাত দিন অপেক্ষা করে প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স নিয়ে ডাইভিং করা ভালো। এতে সমুদ্রের অনেক তলদেশেও যাওয়া যাবে। প্রশিক্ষণের সময় ৫ ফুট পানির নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। লাইসেন্স পেয়ে গেলে ১৮ থেকে ২০ ফুট গভীরে ডাইভিং করা যায়। কূল থেকে প্রথমে একটি বোটে করে সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। রয়াল জানালেন, পর্যটকের চাহিদামতো দূরে যান তারা। কেউ এক কিলোমিটার চাইলে এক কিলোমিটার। কেউ দেড় কিলোমিটার চাইলে দেড় কিলোমিটার। তবে সাগরের যত গভীরে যাওয়া যাবে ততই রোমাঞ্চ পাওয়া যাবে।

ডাইভিংয়ের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই দিয়ে থাকে এনজেল ডাইভিং কোম্পানিটি। অক্সিজেন সিলিন্ডার, চোখের মাস্ক, পায়ে পরার ফিন্স, ওয়েট স্যুট (ডুবুরিদের জন্য ব্যবহৃত রবারের পোশাক), রেগুলেটরস, ওয়েইটস ও লাইফ জ্যাকেট। আপনি স্কুবা ডাইভিংয়ে যাবেন আর ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণ করবেন না? এমনটা হতে পারে না। যে খরচে আপনি স্কুবা ডাইভিং করবেন সেই খরচের সঙ্গে মাত্র ৫০০ রুপি বেশি খরচ করলে ছবি এবং ১০০০ রুপি বেশি খরচ করলে ভিডিও সংরক্ষণ করতে পারবেন। ভিডিও কিংবা ছবি আপনাকে তুলতে হবে না। পানির নিচে আপনার প্রশিক্ষক ছবি তুলে দেবেন।

স্কুবা ডাইভিং বিশ্বের প্রথম সারির রোমাঞ্চকর পর্যটন-বিনোদন। পানির নিচের সৌন্দর্য দেখার জন্য স্কুবা ডাইভিংয়ের বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণে এলে স্বচ্ছ নীল সাগরে স্কুবা ডাইভিং করে পানির তলের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!




রাইজিংবিডি/গল (শ্রীলঙ্কা)/৯ মার্চ ২০১৭/ইয়াসিন/সাইফুল/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়