ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ঢাকা-বরিশাল নৌ ও সড়ক রুট

যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া

জে.খান স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ১ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঢাকা-বরিশাল নৌ ও সড়ক রুটে বিশেষ সার্ভিসের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন রাজধানী ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরা একাধিক যাত্রী ।

এসব যাত্রীর দাবি, বাস কিংবা লঞ্চে কর্মস্থলে ফিরতে তাদের পূর্বের দেড়গুন ভাড়া বেশি গুনতে হয়েছে। তবে বাস ও লঞ্চ মালিকদের দাবি, ঢাকার যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বিশেষ সার্ভিস দিতে যাত্রীবিহীন বাহন নিয়ে ফের বরিশালে ফিরতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়েছে। তাই সামান্য ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নয়।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু বলেন, ‘ইতিমধ্যে লঞ্চে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ সার্ভিস। আজও এ সার্ভিস চলবে। আগামীকালও যাত্রী বেশি থাকলে সার্ভিস বহাল থাকবে।

সূত্র মতে, ঢাকা-বরিশাল নদী পথে জন প্রতি ডেকের ভাড়া সরকার নির্ধারিত ২৫৮ টাকা। এর চারগুণ হবে কেবিন ভাড়া। ওই হিসেবে এক হাজার ৩২ টাকা সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া হলেও নেওয়া হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকা করে। ডবল কেবিন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা করে। পূর্বে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ছিলো এক হাজার আর ডবল কেবিন ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

এ ব্যাপারে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে শুক্রবার সকালে বরিশালে পৌঁছানো সুন্দরবন-১০ লঞ্চে কেবল ২৪৭ জন যাত্রী হয়েছে। আজ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসবে সুন্দরবন-৮ লঞ্চ তাতেও তিনশ’র বেশি যাত্রী হবে না। এ অবস্থাতে লঞ্চ মালিকদের লোকসান গুনতে হয়। বিষয়টি বিবেচনায় এনে সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি করে লোকসান সমন্বয় করা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘লঞ্চের ভাড়া সরকার নির্ধারণ করার পর তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু ভাড়া সমন্বয় করা হয়নি। আশাকরি বিষয়টি যাত্রীদের বিবেচনা করা উচিৎ।’

এদিকে যাত্রীদের মৌখিক অভিযোগের কারণে বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, বরিশাল থেকে কাঠালবাড়ি (কাওড়াকান্দি) পর্যন্ত ভাড়া ১৮০ টাকা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ টাকায়।

হানিফ, সাকুরা, ঈগল, সিকদার ও গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের সময় ছাড়া বরিশাল ঢাকা রুটে ৪৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হলেও এখন ৫১০ টাকা করে টিকেট কাটা হচ্ছে। আর এসি বাসে প্রতি টিকেট নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার টাকা।

সেখানকার হানিফ পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার মো. রানা তালুকদার বলেন, ‘ঈদে আসা এবং যাওয়ার সময় এক পাশ থেকে যাত্রী হয় আরেক পাশ থেকে গাড়ি যাত্রীবিহীন চালিয়ে আসতে হয়। সে বিষয়টি বিবেচনা করেই বিআরটিএ’র নির্ধারণ করে দেওয়া ভাড়া ৫১২ টাকার চেয়ে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। একই কথা বললেন সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. শওকতও।

শুক্রবার বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী রেশমা বেগম আজ শনিবার সকালে অভিযোগ করে বলেন, ‘বরিশালে যাওয়ার সময় ৫০০ টাকায় জনপ্রতি টিকেট কাটি। আর আসার সময় ৬শত টাকা করে গুনতে হয়েছে আমাদের।’ এমনিভাবে একই অভিযোগ করেছেন যাত্রী মাহমুদ হাসান, আলি আজগর, লিটন খানসহ অনেকেই।

বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মো. আফতাব হোসেন বলেন, ‘বাড়তি ভাড়া রোধে প্রতিটি কাউন্টারে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকার চেয়ে বাড়তি ভাড়া রাখার কোন সুযোগ নেই। আর কেউ যদি এর বিপরীত কোন কাজ করে থাকে তার প্রতিবাদ করার সুযোগ রয়েছে যাত্রীদের। তাই যাত্রীদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’




রাইজিংবিডি/ বরিশাল/ ১ জুলাই ২০১৭/ জে. খান স্বপন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়