ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শিশুর মৃত্যুতে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রুল

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৪, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শিশুর মৃত্যুতে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির সময় অ্যাম্বুলেন্স আটকের কারণে মৌলভীবাজারের বড়লেখা সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের সাত দিন বয়সী শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

১০ জানুয়ারির মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে ওই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় মেডিক্যাল সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় তথ্য আদালতে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল হালিম।

চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ‘অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় মৃত্যু নবজাতকের’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে রিট দায়ের কর করা হয়। 

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার ওসি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবিতে ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

কর্মবিরতি চলাকালে সাধারণ চালক, শিক্ষার্থীদের শরীরে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেয় শ্রমিকরা। এমনকি মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

২৯ অক্টোবর দৈনিকে আমাদের সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আন্দোলনরত পরিবহন শ্রমিকরা দাবি আদায়ের নামে মুমূর্ষু এক নবজাতককে বহনকারী গাড়ি আটকে দেওয়ায় সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। পথেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে সাতদিন আগে পৃথিবীর আলো দেখা শিশুটি।

গতকাল (২৮ অক্টোবর) মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের কুটন মিয়ার মেয়ে।

শিশুটির চাচা আকবর আলী বলেন, রাত থেকে বাচ্চাটা কোনো কিছু খাচ্ছিল না, শুধু কাঁদছিল। সকালে শিশুটিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত সিলেট নেওয়ার জন্য বলেন। চিকিৎসকের কথামতো বাচ্চাটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিই।

শ্রমিক ফেডারেশনের ৮ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের গতকাল ছিল প্রথম দিন। সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী শ্রমিকরা শিশুবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে দফায় দফায় আটকায়।

আকবর আলী অভিযোগ করেন, সিলেট যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার দরগাবাজারে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়। একইভাবে দাসেরবাজার এলকায় তাদের আটকানো হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে চান্দগ্রাম বাজারে আবার শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের চালককে মারধর করা হয়। শিশুটি এখানেই মারা যায়। পরে আমরা বিয়ানীবাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।

কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানান, ঘটনাটি অবশ্যই নিন্দয়ীয়। কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ ডিসেম্বর ২০১৮/মেহেদী/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়