ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘তামাশা মনে করে নিজেই পেলাম লাখ টাকার ভাউচার’

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২৯ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘তামাশা মনে করে নিজেই পেলাম লাখ টাকার ভাউচার’

ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারের টাকায় কেনা পণ্য নিয়ে বিজয়চিহ্ন দেখাচ্ছেন আনোয়ার হোসেন এবং তার আত্মীয়-স্বজন

জাকির হুসাইন : ‘পরিবারের প্রয়োজনে ফ্রিজ কিনতে ওয়ালটন প্লাজায় যাই। প্লাজায় গিয়ে দেখি এক ভদ্রমহিলা মোবাইল কিনেছেন। ওয়ালটন কর্মকর্তারা ওই নারীকে বলছেন, আপনি ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের অফারে ২০০ টাকা ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন। তখন বিষয়টি আমার কাছে তামাশা বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু যখন নিজের জন্য ফ্রিজ কিনে লাখ টাকার ভাউচার পেলাম, তখন সব সংশয় দূর হয়েছে। এরকম ভাবনার জন্য নিজের কাছেই লজ্জা লাগছিল আমার।’

কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জের স্কুলশিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন। ফ্রিজ কিনে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় গত সোমবার এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পান তিনি। যা দিয়ে তিনি নিজের পরিবার এবং ভাগ্নে ও ভাগ্নির নতুন সংসার ইলেক্ট্রনিকস পণ্যে সাজিয়ে দিয়েছেন।

লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়া মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার চরমাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োজিত আছেন শিক্ষকতা পেশায়। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি মেজ। মা জীবিত থাকলেও বাবা বেঁচে নেই। ভাই-বোন সবার নিজস্ব পরিবার আছে। যৌথ পরিবার থেকে পৃথক হয়েছেন প্রায় চার বছর আগে। বর্তমানে মা, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তার ছোট পরিবার।

মানুষ গড়ার এই কারিগর বলেন, ‘যৌথ পরিবারের দুটি ফ্রিজ ছিল। তা দিয়েই এতদিন শেয়ার করে প্রয়োজন মিটিয়েছি। কিন্তু কত দিন আর শেয়ার করা যায়! প্রযুক্তির উন্নয়নে বর্তমানে সহজলভ্য হয়েছে ফ্রিজসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিকস পণ্য। তাই নিজের পরিবারে একটি ফ্রিজ খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়ে।’

ওয়ালটনের পণ্য আগে থেকে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থাকায় ফ্রিজের ব্র্যান্ড নিয়ে ভাবতে হয়নি তাকে।

বড়ভাইকে সঙ্গে নিয়ে গত সোমবার সিঙ্গাইর বাজারে ওয়ালটন প্লাজায় যান তিনি। সেখানে গিয়ে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের বিশেষ অফারের কথা জানতে পারেন। যা তার কাছে নিছক তামাশা বলেই মনে হয়। পরে শোরুম ঘুরে ১৯ সিএফটি সাইজের একটি ফ্রিজ পছন্দ হয় তার। ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে ফ্রিজটি কেনেন আনোয়ার হোসেন। মেমো করার পর বিক্রয়কর্মীরা তার মোবাইল নম্বর নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেন।

তিনি বলেন, ‘এর পর পরই একটা মেসেজ আসে। শোরুমের বিক্রয়কর্মীরা আমাকে মেসেটি দেখতে বলেন। আমি ফালতু বিষয় মনে করে মেসেজ দেখার আগ্রহ বোধ করিনি। তখন ওয়ালটন কর্মকর্তারাই আমার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে মেসেজ পড়ে বলেন, স্যার আপনি সত্যিই ভাগ্যবান। লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন।’

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি পুরোপরি নিশ্চিত হওয়ার পর আমার এত আনন্দ লেগেছে তা বলে বুঝাতে পারবো না। ক্যাশ ভাউচারের বিষয়টি নিয়ে আমার মধ্যে সন্দেহ ছিল। অথচ আমার ভাগ্যেই মিলে গেল সেই বড় মাপের পুরস্কার। এটা ভাবতেও আমার কেমন লাগছে। তখন কিছুটা লজ্জা পেলেও দারুণ খুশি হই। তবে বেশি খুশি হয়েছে আমার আট বছরের ছেলেটি।’

তিনি জানান, তার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার খবর মুহূর্তের মধ্যে সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। তার বাড়ি, গ্রাম, বন্ধু, সুধী মহল এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা চলছে বিষয়টি নিয়ে।

 

শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের হাতে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার তুলে দেওয়া হচ্ছে
 

এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে কী পণ্য কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সংসারে ফ্রিজ বাদে সবই আছে। যৌথ পরিবারে থাকার কারণে ফ্রিজ কিনিনি। সেই ফ্রিজ কিনেই যখন লাখ টাকার পুরস্কার পেলাম, তখন আত্মীয়দের কিছু উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার একমাত্র বোনের মেয়ের (ভাগ্নি) সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে। তার শ্বশুরবাড়িতে বড় একটি ফ্রিজ এবং একটি এলইডি টিভি দিয়েছি। বোনের ছেলে বউয়ের আবদারে তাকেও একটি এলইডি টিভি দিয়েছি। বাকি টাকা দিয়ে আমার নিজের পরিবারের জন্য একটি এলইডি টিভি, একটি রাইস কুকার, একটি গ্যাস স্টোভসহ কিছু টুকিটাকি পণ্য নিয়েছি।’

ওয়ালটনের ফ্রিজ কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, আধুনিক ও ডিজিটাল যুগে সহজলভ্য হয়েছে ফ্রিজসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিকস পণ্য। এটাকে আরো সহজ ও মানুষের হাতের নাগালে এনে দিয়েছে ওয়ালটন। বর্তমানে শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘরে ঘরে শোভা পাচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। এমনকি আমি দেখছি দেশের বেশিরভাগ মুদি ও চায়ের দোকনে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদের ফ্রিজ মানে ভালো, দামও সাশ্রয়ী। এক কথায় ফ্রিজে ওয়ালটনের বিকল্প নাই বললেই চলে। ফলে ফ্রিজ কেনার বিষয়ে ওয়ালটন বাদে দ্বিতীয় চিন্তা করার প্রশ্নই আসে না।’

ওয়ালটন পণ্যের দাম, মান ও গুণাগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষ করে আমি অনেক আগে থেকে দেশীয় হিসেবে ওয়ালটন পণ্য ব্যবহার করি। যে মোবাইলে কথা বলছি সেটিও ওয়ালটনের। গত বছর বাণিজ্য মেলা থেকে প্রিমো সিরিজের এই সেটটি কিনেছিলাম। ব্যবহার করছি এক বছর হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। ৬ মাস আগে একই প্লাজা থেকে আমার এক বন্ধুকে একটি ফ্রিজ কিনে দিয়েছিলাম। ভালোই চলছে বলে বন্ধুটি জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশীয় পণ্য, এরপর মান ও সাশ্রয়ী দামের কারণে আমার ও আমার আত্মীয় স্বজন সবাইকে ওয়ালটন পণ্য ব্যবহার করে।’

ওয়ালটনের কোটি টাকার অফার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কার্যক্রমকে আমি পজেটিভ হিসেবে দেখছি। এর ফলে যারা ওয়ালটন পণ্য সম্পর্কে জানত না তারাও এখন জানতে পারবে। আমি ওয়ালটনের কল্যাণ কামনা করছি।’

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ নভেম্বর ২০১৭/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়