ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ওয়ালটনের লাখ টাকা পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন রাজমিস্ত্রি রনি মিয়া

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২১, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়ালটনের লাখ টাকা পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন রাজমিস্ত্রি রনি মিয়া

কান্নামাখা মুখে হাসির ঝিলিক। ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়ে এখন দারুণ খুশি রনি মিয়া (বায়ে)

জাকির হুসাইন : ‘ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ১ লাখ টাকা পেয়েছি। এর চেয়ে আনন্দ আমার জীবনে আর নেই। এত বড় পাওয়া, অথচ এ খবর কাউকে বলতে পারছি না। কারণ পৃথিবীতে মা-বাবা ও ভাই-বোনসহ নিকট আত্মীয় বলতে কেউ নেই। শুধুমাত্র স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে কোনোমতে জীবন কাটাচ্ছি।’ এ কথাগুলো বলছিলেন আর অঝোরে কাঁদছিলেন রাজমিন্ত্রি মো. রনি মিয়া।

চলমান ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারপ্রাপ্তদের একজন রনি। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার নবাবগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মারা যাওয়ার পর বাবা আর একটি বিয়ে করেন। তখন থেকেই যেন দুর্ভাগ্য তাদের পেয়ে বসে। একে একে তার সব ভাই বোন মারা যায়। বাবার সঙ্গে এখন কোনো সম্পর্ক নেই। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রনি মিয়ার সংসার।

ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার প্রাপ্তি নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলার সময় কেঁদে ফেলেন রনি মিয়া। তিনি বলেন, ‘মা, ভাইবোনেরা মারা গেছে। বাবা থেকেও নেই। বর্তমানে স্ত্রী আর দুই মেয়ে ছাড়া পৃথিবীতে আমার আপন আর কেউ নেই। অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছি। আমার দুঃখের জীবনে সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা ওয়ালটনের লাখ টাকার পুরস্কার পাওয়া। আনন্দ যেমন লাগছে, তেমন কষ্টও হচ্ছে। আমার আনন্দ কারো সঙ্গে শেয়ার করতে পারছি না। মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।’

তিনি বলেন, ‘সারা দিন রাজমিস্ত্রির কাজ করে যে টাকা রোজগার হয়, তাতে চারজনের সংসার ভালোভাবে চলে যায়। বাড়ির আশপাশের প্রায় সবার ফ্রিজ আছে। কিন্তু আমাদের নেই। তা ছাড়া বর্তমানে ফ্রিজ সব পরিবারের জন্য খুবই দরকার। তাই স্ত্রী ও মেয়েদের আবদারে একটি ফ্রিজ কেনার সিদ্ধান্ত নিই।’

রনি জানান, ওয়ালটন ফ্রিজ কিনবেন বলে আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন। তাই রোজগারের টাকা কিছু কিছু জমিয়ে গত ২৯ নভেম্বর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নবাবগঞ্জের একতা ইলেক্ট্রনিক্সে যান। সেখান থেকে স্বামী-স্ত্রী মিলে যাচাই-বাছাই করে ২২ হাজার টাকা দিয়ে ১১ সিএফটির একটি ফ্রিজ কেনেন।

পরে রনির মোবাইল নম্বর নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেন শোরুমের বিক্রয়কর্মীরা। ফ্রিজ নিয়ে বাসায় চলে যান রনি মিয়া ও তার স্ত্রী। রাতেই লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার মেসেজ যায় তার মোবাইলে। কিন্তু কাজে ব্যস্ত থাকায় পরের দিন সন্ধ্যায় মেসেজ দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য শোরুমে ফোন দেন। তারা রনিকে বলেন বিষয়টি তাকে জানানোর জন্য সারা দিন মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন।

রনি বলেন, ‘ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে কোটি কোটি টাকার অফার চলছে এটা আমার আগে থেকে জানা ছিল। বিভিন্ন টিভি ও পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জেনেছি। তবে আমি পুরস্কার পাব তা কখনো আশা করিনি। উপহারের আশায় নয়, শুধুমাত্র নিজের প্রয়োজনে ফ্রিজ কিনতে যাই। কিন্তু কপালে থাকলে তা ঠেকায় কে? আল্লাহ আমার ভাগ্যে রেখেছিলেন, তাই পেয়েছি। আমার স্ত্রী ও মেয়েরা মহা খুশি। এখন আমাদের সংসার প্রয়োজনীয় সব পণ্যে ভরে গেছে।’

ওয়ালটনের ফ্রিজ কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মিস্ত্রির কাজ করি। অনেকের সঙ্গে আমার উঠা-বসা। ফ্রিজ কেনার কথা বললে সবাই ওয়ালটন ফ্রিজের কথা বলত। তা ছাড়া ওয়ালটনের জিনিস আমরা আগে থেকে ব্যবহার করি। এই কোম্পানির জিনিসের দাম কম কিন্তু টেকে বেশি দিন।’

১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে কী কী পণ্য কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ক্যাশ ভাউচার দিয়ে তিনি আরো একটি ফ্রিজ, একটি ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি, একটি স্মার্টফোন, ওয়ালপ্যাড, ব্লেন্ডার, রাইস কুকার, এয়ার ফ্রাইয়ার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক ফ্যান ইত্যাদি পণ্য নিয়েছেন। এখন তার ঘর প্রয়োজনীয় সব ইলেকট্রনিক্স পণ্যে ভরপুর।

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ ডিসেম্বর ২০১৭/অগাস্টিন সুজন/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়