ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘জিএসপি প্লাস সুবিধা নিতে বাংলাদেশ সক্ষম’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৭, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘জিএসপি প্লাস সুবিধা নিতে বাংলাদেশ সক্ষম’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে উন্নত বিশ্ব থেকে জিএসপি প্লাসহ সব বাণিজ্য সুবিধা অর্জনে বাংলাদেশ সক্ষম।

উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সব শর্ত পূরণ হওয়ার কারণেই বিশ্ব ইকোনমিক ও সোস্যাল কাউন্সিল চলতি বছর মার্চ মাসে বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল (ডেভলপিং) দেশ হিসেবে ঘোষণা করবে।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এর আগে ডিসিসআইর প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম খানের নেতৃত্বে সংগঠটির নবনির্বাচিত পরিচালনা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের পর বাণিজ্য ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে সেজন্য বাংলাদেশ প্রস্তুতি। ইতোপূর্বেও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতে শিশুশ্রম বন্ধ এবং রপ্তানি ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের পর যে বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ এসেছিল তা সফলভাবে মোকাবিলা করে এগিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বেশির ভাগ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। অনেক দেশের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শ্রীলংকার সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, থাইল্যান্ডের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে প্রিফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলে বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না, বরং বাণিজ্য আরো বাড়বে। এজন্য ব্যবসায়ী সমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ পূরণ করেছে। প্রথমত, মাথাপিছু আয় ১২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৬১০ মার্কিন ডলার এবং গড় প্রায় ১৩০০ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত, মানবসম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের ৭২ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মাত্রা ৩০ ভাগের নিচে হতে হবে, বাংলাদেশে এ মুহূর্তে তা ২৬ ভাগ অর্জন করেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। উন্নয়নশীল দেশ কেনিয়ার রপ্তানি ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, শ্রীলংকার রপ্তানি ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাকিস্তানের রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩৫ বিলিয়রন মার্কিন ডলার। অনেক উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশের ধারে-কাছেও নেই। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বের মধ্যে বিরল। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া বাংলাদেশের জন্য গৌরবের বিষয়। এতে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি বা দরিদ্র দেশের রোলমডেল নয়। বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় দেশ। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হতে যাচ্ছি। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে।

মতবিনিময় সভায় বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়