ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘ওয়ালটনের কারণে সবাই টিভি-ফ্রিজ ব্যবহার করতে পারছে’

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ওয়ালটনের কারণে সবাই টিভি-ফ্রিজ ব্যবহার করতে পারছে’

মো. শাহাদাৎ হোসেন সবুজের হাতে ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ওয়ালটনের কারণে গ্রামের মানুষও এখন টিভি-ফ্রিজের মতো দামি পণ্য ব্যবহার করতে পারছে। কারণ, দেশেই এসব পণ্য তৈরি করছে ওয়ালটন। এ কারণে এসব পণ্যের দাম সবার সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।’

কথাগুলো নোয়াখালীর মাইজদির মতিপুরের মো. শাহাদাৎ হোসেন সবুজের।

মাইজদি পৌর বাজারের ইজারাদার শাহাদাৎ হোসেন সবুজ। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মাইজদির ওয়ালটন প্লাজা থেকে বড় বোনের জন্য ফ্রিজ কিনে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পান তিনি। ক্যাশ ভাউচার প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলার সময় রাইজিংবিডির কাছে ওয়ালটন সম্পর্কে এভাবেই মতামত দেন শাহাদাৎ হোসেন সবুজ।

শাহাদাৎ হোসেন সবুজ বলেন, ‘একসময় দেশের সব ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিদেশনির্ভর ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পাল্টে গেছে। অনেক উন্নতি হয়েছে আমাদের। গরিব মানুষরাও এখন টিভি ও ফ্রিজের মতো বিলাসী পণ্য ব্যবহার করছে। ওয়ালটন এসব পণ্য উৎপাদন না করলে দাম হয়তো আরো বেড়ে যেত। কারণ, তখন একচেটিয়া বাজার বিদেশিদের হাতে থাকত। ওয়ালটন আসাতে সে সুযোগ বন্ধ হয়েছে। এতে দেশের অর্থনীতিতে যেমন লাভ হচ্ছে, তেমনই ক্রেতাদেরও সেবাপ্রাপ্তি সহজ হয়েছে।’

তিনি জানান, দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা-মা সবাই বেঁচে আছেন। বড় ভাই বিদেশে থাকেন। বোনদের বিয়ে হলেও নিজে এখনো বিয়ে করেননি। সবমিলিয়ে সাত সদস্যের যৌথ পরিবার তাদের। নয় বছর ধরে ইজারাদারের কাজ করছেন। এতে বেশিরভাগ সময়ই বাজারে থাকতে হয় তাকে। ফলে বাজারের প্রতিটা দোকান-পাট ও অলি-গলি তার জানা। তাছাড়া কারা বা কোন কোম্পানি কী ধরনের পণ্য বিক্রি করে এটাও তার নখদর্পণে।

শাহাদাৎ হোসেন সবুজ বলেন, ‘আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কারোর কোনো পণ্য কেনার দরকার হলে অন্তত একবার হলেও আমার সাথে যোগাযোগ করেন। ওয়ালটন কোম্পানির জিনিস আমার কাছে ভালো মনে হয়। তাই সবাইকে ওয়ালটন পণ্য কেনার ব্যাপারে পরামর্শ দেই। শুধু তাই না, নিজে সাথে থেকে তাদের কিনেও দিতে হয়। আমার হাত দিয়ে এখন পর্যন্ত অসংখ্য কাস্টমারকে ওয়ালটন পণ্য কিনে দিয়েছি। এখনো পর্যন্ত কেউ খারাপ হয়েছে বলে আমার কাছে আসেনি। উল্টো অনেকেই আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমার ওপর সবাই নির্ভর করে। ওয়ালটনের জন্যই এই আস্থা অর্জন করতে পেরেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার বোনের একটা ফ্রিজের খুবই প্রয়োজন ছিল। তার ছোট ছোট দুটি ছেলে-মেয়ে। দুলাভাই ঢাকায় চাকরি করেন। হুটহাট বাড়ি আসার সময় পান না। তাই তাকে ফ্রিজ কিনে দেওয়ার দায়িত্ব আমার ওপর পড়ে। দুলাভাইয়ের পাঠানো টাকা হাতে পেয়ে আপা আমাকে ফ্রিজ কেনার বিষয়টি জানায়। তাকে সাথে নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মাইজদির ওয়ালটন প্লাজায় যাই। সেখান থেকে আপা নিজেই যাচাই-বাছাই করে ১১ সিএফটি সাইজের ফ্রিজটি পছন্দ করে। ২৪ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে সেটি তাকে কিনে দেই।’

সবুজ বলেন, ‘বাজারে থাকার সুবাদে আগেই জানা ছিল যে, ওয়ালটন কাস্টমারদের জন্য মেগা অফার ঘোষণা করেছে। তাদের ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে ক্রেতার ভাগ্য যাচাইয়ের সুযোগ রয়েছে। ভাগ্য ভালো হলে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। তবে আমাদের ভাগ্য এতো ভালো না। জীবনে কোনো দিন কোনো উপহার পাই নাই। এর আগে কখনোই আমার কেন, আমার কোনো ভাইবোনের কপাল খোলেনি। তাছাড়া, ওই প্লাজাতে চার মাসে কাউকে লাখ টাকা পেতে শুনিনি। তবে ম্যানেজর মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ১০ হাজার টাকা করে কয়েকজন পেয়েছে। আর সর্বনিম্ন ২০০ টাকা তো আছেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘উপহার পাওয়ার আশা না করেই ফ্রিজ কেনার পর নিয়ম অনুযায়ী আমার মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করি। আমার নাকি আমার বোনের সৌভাগ্য তা বলতে পারব না। তবে ভাগ্য যারই হোক না কেন, আমাদের অবাক করে দিয়ে আমার মোবাইলে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারের মেসেজ আসে। ওয়ালটনের এই উপহার আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার। আল্লাহ আমার ভাগ্যে এমন উপহার রেখেছিল বলেই আমি তা পেয়েছি।’

সবুজ বলেন, ‘আমার এ প্রাপ্তিতে আমার সব আত্মীয়-স্বজন মহাখুশি। নোয়াখালী এলাকায় এর আগে উপহার পাওয়ার মতো ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। আমার বোনের ফ্রিজ কিনতে গিয়ে ঘটেছে। ওয়ালটন আমার মুখ উজ্জ্বল করেছে। একই সাথে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত ভ্রান্ত ধারণাও দূর হয়েছে। সবাই এখন বিশ্বাস করছে, শত শত খারাপ কোম্পানির মাঝে এখনো ভালো কোম্পানি আছে।’

তিনি জানান, লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে আরেকটি ফ্রিজ, দুটি এলইডি টেলিভিশন, দুটি মোবাইল ফোন, ব্লেন্ডার, সিলিং ফ্যান ইত্যাদি পণ্য কিনেছেন।

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/অগাস্টিন সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়