ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ওয়ালটন টিভি কিনে কলেজছাত্রের ল্যাপটপের স্বপ্ন পূরণ

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৬, ৩ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়ালটন টিভি কিনে কলেজছাত্রের ল্যাপটপের স্বপ্ন পূরণ

ওয়ালটন টিভি কিনে নিজের জন্য মিলেছে স্বপ্নের ল্যাপটপ। আর মায়ের জন্য ফ্রিজ। কলেজছাত্র ফরহাদ এরতেজা সোহেল তাই মহাখুশি

নিজস্ব প্রতিবেদক : মো. ফরহাদ এরতেজা সোহেল। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন। পড়াশোনার জন্য একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তার ল্যাপটপের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছিল না। আবার বাসায় টিভিও প্রয়োজন। তাই পরিবারের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে ওয়ালটন থেকে ছোট একটি এলইডি টিভি কেনেন। যাতে পরে টিভি দেখার পাশাপাশি সেটি কম্পিউটারের মনিটর হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কী আশ্চর্য! সেই টিভি কিনেই তিনি পেয়েছেন ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। যা দিয়ে মিলেছে তার বহুদিনের স্বপ্নের ল্যাপটপ।

ফরহাদ এরতেজা সোহেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের মাওনার বাসিন্দা তিনি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই সবার ছোট। বাবা-মা সবাই বেঁচে আছেন। বড় ভাই ও বোনের বিয়ে হয়েছে। সাত সদস্যের যৌথ ও সুখী পরিবার তাদের। তার বাবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়লের প্রধান কার্যালয়ে চাকরি করেন। বড় ভাইও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন ৮ম শ্রেণিতে পড়ি, তখন আমার এক বন্ধুর কাছে একটি ল্যাপটপ দেখেছিলাম। অনেক ভালো লেগেছিল সেটি দেখে। আমারও একটি ল্যাপটপ থাকলে ভালো হতো। কিন্তু দাম অনেক বলে কেনা হয়নি। তবে বিভিন্নভাবে আমি ল্যাপটপে কাজ করা শিখেছি। ল্যাপটপের প্রায় প্রতিটি ফাংশন আমার জানা। কিন্তু সেটি প্র্যাকটিস না করলে ভালো লাগছিল না। এদিকে বাসায় একটি টিভিরও দরকার ছিল। তাই ভাবলাম একটি এলইডি টিভি কিনব। তাতে টিভিও দেখা যাবে। আবার মনিটর দিয়ে কম্পিউটারের কাজও করা যাবে।’

ফরহাদ এরতেজা সোহেল বলেন, ‘টিভি কেনার ক্ষেত্রে ওয়ালটন ব্র্যান্ডেরই কেনা হবে, এটা আগে থেকেই ঠিক ছিল। কারণ, এই কোম্পানির পণ্য মানে ও দামে একেবারে পারফেক্ট। সার্ভিস খুবই ভালো। এলাকার সবাই ব্যবহার করছে। তাছাড়া ওয়ালটনের লাখ টাকার অফার সম্পর্কে আমি আগে থেকেই জানতাম। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ ব্যাপারে প্রথমে জানতে পারি। পরে বিস্তারিত জানার জন্য ওয়ালটনের শোরুমেও গিয়েছিলাম। সে অনেক আগের কথা। তখন হাতে টাকা ছিল না। তাই তখন কেনা সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে তখন থেকে টাকা জোগাড় করতে থাকি। অবশেষে টাকা মিলেও গেল। কিন্তু ওয়ালটনের সেই অফার আছে কিনা এটা জানা ছিল না। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মাওনায় ওয়ালটনের শোরুম সেতু ইলেকট্রনিক্সে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি অফারটি আর মাত্র ২ দিন চলবে। ওয়ালটন কর্মকর্তাদের সেই কথায় কিছুটা ভালো লেগেছিল। আবার খারাপও লাগছিল যে আরো কিছুদিন আগে আসতে পারলে ভালো হতো। কারণ, দীর্ঘ ৫ মাস ধরে চলা অফার এখন শেষ পর্যায়ে। তাই শেষদিকে আর এতটা গুরুত্ব থাকবে কি না, সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল।’

ফরহাদ এরতেজা বলেন, ‘তারপরেও আশা ছিল, কিছু একটা তো পাব। তাই সেখান থেকে দেখে-শুনে ২৪ ইঞ্চি সাইজের একটি এলইডি টিভি মাত্র ১৫ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনি। টিভি কেনার পর নিয়ম অনুযায়ী আমার মোবাইল নাম্বারসহ মেমো করেন ওয়ালটন কর্মকর্তারা। একই সাথে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনও করে দেন। মেসেজ আসতে একটু দেরি হবে জেনে ক্রয়কৃত টিভিটি ওই শোরুমে রেখে বাজারে অন্য একটি কাজে যাই।’

মো. ফরহাদ এরতেজা সোহেলের হাতে ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অনান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে


তিনি বলেন, ‘ঠিক এর ৩০ মিনিট পর আমার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। ওপেন করে দেখি ১ লাখ টাকার মতো লেখা। আবার দশমিকও আছে। বিষয়টি ভালো বুঝতে পারছিলাম না। সাথে সাথে দৌড়ে শোরুমে যাই। মেসেজটি তাদের দেখালে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান যে সত্যিই আমার ভাগ্যে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার মিলেছে। কিন্তু তাদের কথায় আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না।’

ফরহাদ এরতেজা বলেন, ‘অফার যেহেতু আছে, উপহার যাহোক কিছু না কিছু পাব, এটা আমার বিশ্বাস ছিল। তাই বলে ১ লাখ টাকা পাব, এটা কখানো কল্পনাও করিনি। কিন্তু আমার কী ভাগ্য! আমি ১ লাখ টাকা পেলাম। অফারের একেবারে শেষপ্রান্তে এসেও ওয়ালটনের লাখ টাকা বিজয়ীদের তালিকায় আমার নাম উঠেছে। আমার এই ভাগ্য দেখে আমি যে কি খুশি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।’

ক্যাশ ভাউচারের এ টাকা দিয়ে কী কিনেছেন তা জানতে চাইলে ফরহাদ এরতেজা বলেন, ‘আমার প্রথম টার্গেট ছিল, একটি ভালো ল্যাপটপের। তাই ৭৪ হাজার ৫৫০ টাকা দিয়ে সর্বশেষ প্রযুক্তির কোর-আই সেভেন গেমিং ল্যাপটপ কিনেছি। যা বর্তমানে আমার কোনো বন্ধুর কাছে নেই। ওয়ালটনের কারণেই আমার দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন ল্যাপটপের স্বাদ পূরণ হয়েছে। আর বাকি টাকা দিয়ে মায়ের জন্য একটি ফ্রিজ কিনেছি।’

ওয়ালটন পণ্যের দাম, মান ও গুণাগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন পণ্য খুবই ভালো। এটা আমাদের দেশীয় কোম্পানি। আমার বাড়ির পাশেই কোম্পানির কারখানা। বিশাল এলাকা জুড়ে চলছে ওয়ালটনের কর্মযজ্ঞ। ওয়ালটন পণ্যের মান নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন নেই। আমি নিজে থেকে ২ বছর আগে বড় ভাইয়ের জন্য একটি ফ্রিজ কিনেছিলাম। কি দারুণ সার্ভিস! এখনো পর্যন্ত একদিনের জন্যও কোনো সমস্যা হয়নি। তাই আমরা ওয়ালটন পণ্যের ভক্ত। আমি ওয়ালটনের আগামী দিনে উজ্জ্বল সাফল্য কামনা করছি।’

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করে ওয়ালটন। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হয় নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার।

অফার চলাকালীন ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন ক্রেতারা। ৫ মাসব্যাপী চলা এ অফার শেষ হয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মার্চ ২০১৮/অগাস্টিন সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়