ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বয়স ৬২, অপরাধ ১১২

শাহেদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ১৯ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বয়স ৬২, অপরাধ ১১২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুম্বাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রাক্তন ডন ছোটা শাকিল, ছোটা রাজন, অরুন গাউলিদের চেয়ে কোনো অংশে কম যান না তিনি। অর্থের বিনিময়ে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, অস্ত্র-মদের কারবার, চাঁদাবাজির মতো শতাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত। তিনি দিল্লির মহিলা ‘ডন’। আসল নাম বসিরন। অন্ধকার জগতে পরিচিতি ‘মাম্মি’ নামে। পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড। ভারতের ভয়ঙ্করতম পাঁচ নারীর অন্যতম ‘মাম্মি’র খাসতালুক সঙ্গম বিহার। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গ্যাং চালানোর পর ৬২ বছর বয়সে গ্রেপ্তার হলেন তিনি।

বারবার আদালতে হাজিরার নির্দেশ অমান্য করা ‘প্রক্লেমড অফেন্ডার’ বসিরনের সম্পত্তি সম্প্রতি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।  সেই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে সঙ্গম বিহারে নিজের আট ছেলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বসিরন।

দিল্লি পুলিশের ডিসি সাউথ রোমিল বানিয়া জানিয়েছেন, খবর পেয়েই অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়। সঙ্গম বিহারের পুলিশ অফিসার উপেন্দর সিংহের নেতৃত্বে গোপনে অভিযান চালানো হয়। জালে ধরা পড়েন বসিরন ওরফে মাম্মি।

খুন, অপহরণ, মারধরসহ সব মিলিয়ে পুলিশের খাতায় ১১২টি অভিযোগ রয়েছে বসিরনের বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রতিবারই আইনের জাল কেটে আর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছেন তিনি। অবশেষে মাস সাতেক আগে একটি খুনের পর থেকেই কার্যত হাত ধুয়ে বসিরনের পিছনে পড়ে পুলিশ।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে মিরাজ নামে এক ব্যক্তিকে খুনের জন্য অর্থ নেয় মাম্মি গ্যাং। তাকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সাত দিন পর উদ্ধার হয় দেহ। সাক্ষ্য প্রমাণ হাতে আসায় মাম্মির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয় পুলিশ। কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও হাজিরা না দেওয়ায় সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয় আদালত। আর সেই চাপেই শেষ পর্যন্ত লেডি ডনকে জালে ফেলা গেল বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা।

কী ভাবে লেডি ডন হয়ে উঠলেন বসিরন? পুলিশ সূত্রে খবর, বসিরণের আদি বাড়ি রাজস্থানে। রুজি-রুটির টানে সাদামাটা এই গৃহবধূ মাত্র ১৬ বছর বয়সে চলে আসেন দিল্লিতে। খাবার, আশ্রয়ের জোগান নিশ্চিত করতে প্রবেশ করেন অন্ধকার জগতে। ছোটখাটো ছিঁচকে চুরি দিয়ে অপরাধে হাতে খড়ি। বাকিটা আর পাঁচটা ডনের মতোই গ্যাং তৈরি করে নাটের গুরু হয়ে ওঠা।

আর বর্তমানে? বাঘে-মহিষে না হোক, তার দাপটে অন্তত কয়েক হাজার মানুষ একই ঘাটে জল খান। কারণ এলাকায় থাকতে গেলে তার কাছ থেকেই জল কিনে খেতে হবে। সঙ্গম বিহার এলাকায় একাধিক সরকারি জলের কুয়ো তার দখলে। সেখান থেকে চলে জলের ব্যবসা। সঙ্গম বিহার তো বটেই, লাগোয়া আরও কিছু এলাকাতেও একছত্র জলের কারবার ডন মাম্মির।

বসিরনের আট ছেলে। অর্থ নিয়ে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেটের মতো একাধিক অপরাধে পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে তাদেরও। তাই বসিরন গ্রেপ্তারের পরই যে মাম্মি গ্যাং নির্মূল হবে, বুকে হাত দিয়ে এমনটা বলতে পারছেন না অনেক পুলিশ কর্তাই।

সূত্র : আনন্দবাজার ও এনডিটিভি অনলাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ আগস্ট ২০১৮/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়