ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অনন্য কীর্তি অধিনায়ক মাশরাফির

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৬ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অনন্য কীর্তি অধিনায়ক মাশরাফির

ক্রীড়া প্রতিবেদক : আগামী ৩০ মে পর্দা উঠবে দ্বাদশ বিশ্বকাপের। ২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন।

মাশরাফি বিন মুর্তজাকে অধিনায়ক করে আজ বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করেছেন নির্বাচকরা। সবকিছু ঠিক থাকলে মাশরাফির নেতৃত্বে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ।  এ নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাশরাফি। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি যোগ হচ্ছে মাশরাফির নামের পাশে।

২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলেছিল মাশরাফির নেতৃত্বে। সেবার দলকে বিশ্বমঞ্চে সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দিয়েছিলেন মাশরাফি। দলকে তুলেছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে। দুই বছর পর অবশ্য ‘মিনি বিশ্বকাপ’ খ্যাত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেটাও মাশরাফির হাত ধরে।
 


১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেবার ৫ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। জিতেছিল ২টি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে নর্দাম্পটনে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল। হেরেছিল নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দায়িত্ব ছিল খালেদ মাসুদ পাইলটের কাঁধে। সেবারই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বাজে সময় কাটায় বাংলাদেশ। নিজেদের ছন্দ হারায় বিশ্বকাপের শুরুতে।  ম্যাচ হেরে বসে কানাডার মতো দলের বিপক্ষে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিকের লজ্জা।  বাংলাদেশ ম্যাচ হারে কেনিয়ার বিপক্ষেও। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজয় তো অনুমিতই ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছিল।  ৬ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৫টিতে।

চার বছর পর বাংলাদেশ হয়ে ওঠে তারুণ্য নির্ভর। মুশফিক, সাকিব, তামিমদের আগমন হয় ওই বিশ্বকাপে। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেবার প্রথম ম্যাচেই হারায় ভারতকে। এরপর বারমুডার বিপক্ষে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো লিগ পর্বের বাধা টপকায়। সুপার এইটে বাংলাদেশ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যদি ক্রিকেট বিশ্বের অন্য বড় দলগুলোর বিপক্ষে হেরে যায় টাইগাররা। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৯ ম্যাচে জিতেছিল ৩টিতে। হেরেছিল ৬টিতে।
 


২০১১ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ।  ঘরের মাঠে বাংলাদেশের যেমন সাফল্য ছিল, ছিল ব্যর্থতা।  বিশ্বকাপ শুরুর আগেই মাশরাফির সঙ্গে শুরু হয় ইনজুরির নিষ্ঠুরতা। অক্টোবরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলার সময় পায়ে চোট পান অধিনায়ক মাশরাফি। সাকিবকে দেওয়া হয় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। মাশরাফি ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ে সিরিজে ফিরেছিলেন ঠিকই। কিন্তু অধিনায়কত্ব পাননি।  বিশ্বকাপের ঠিক আগে মাশরাফি লিগের খেলা চলাকালীন আবার ইনজুরিতে পড়লে ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে। সাকিব বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন বিশ্বকাপে। ৬ ম্যাচে মাত্র ৩ জয় বাংলাদেশের। হারিয়েছিল ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসকে। হেরেছিল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হার বিশেষভাবে স্মৃতিতে আটকে আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ৭৮ রানে।

২০১৫ বিশ্বকাপে নাটকীয়ভাবেই মাশরাফি পেয়ে যান অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। বিশ্বকাপের ঠিক আগে ১২ ওয়ানডেতে পরাজিত বাংলাদেশ। মুশফিকের থেকে দায়িত্ব নিয়ে বোর্ড মাশরাফিকে করে অধিনায়ক। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে মাশরাফির দল জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে ৫-০ ব্যবধানে। ঘরের মাঠে সাফল্য বাংলাদেশ ধরে রাখে বিশ্বকাপে।  ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে বাংলাদেশ নাম লেখায় কোয়ার্টার ফাইনালে।  নকআউটে ভারতের বিপক্ষে পারেনি বাংলাদেশ।
 


চার বছর পর আবার বিশ্বকাপ। আবার বিশ্বমঞ্চ রাঙাবে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। মাশরাফির কাঁধে টিম বাংলাদেশের দায়িত্ব। শেষ চার বছরে খেলার ধরন পাল্টেছে বাংলাদেশ।  চোখে-চোখ রেখে লড়াই করে বাংলাদেশ। বলে-কয়ে হারিয়ে দিতে পারে যে কাউকে। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাবিবুল বাশার, ৯টি।  ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে প্রথম পর্বে মাশরাফিরা খেলবে ৯ ম্যাচ।  ৫ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফি বিশ্বকাপে সবগুলো ম্যাচে অধিনায়কত্ব করলে ছাড়িয়ে যাবেন হাবিবুলকে। অধিনায়ক হিসেবে এরই মধ্যে গড়েছেন অনন্য কীর্তি। তার হাত ধরে সাফল্য পাতায় নতুন কোনো পালক যোগ হয় কি না, সেটাই দেখার।





রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ এপ্রিল ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়