ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আগামী বাজেটে ভর্তুকি বাড়ছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৯, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগামী বাজেটে ভর্তুকি বাড়ছে

কেএমএ হাসনাত : আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এ কারণে আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে ভতুর্কি বাড়তে পারে বলে মনে করছে সরকার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি খাতে প্রাক্কলিত ব্যয় দেড় হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি ব্যয় সাড়ে ২৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখার চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি খাতে আরো অতিরিক্ত দেড় হাজার কোটি টাকা যোগ হতে পারে।

জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে বাজেট সমন্বয় সভায় আগামী অর্থবছরের ভর্তুকি খাতে প্রাথমিকভাবে ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। মনে করা হয়েছিল, গত তিন অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও জ্বালানি তেল খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হবে না। কিন্তু চলতি জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। প্রতি ব্যারেল তেল ৬০ ডলারের ওপরে উঠে গেছে। এই দামের ঊর্ধ্বগতি যদি অব্যাহত থাকে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে যদি তেলের দাম সমন্বয় না করা হয় তবে এ খাতে ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজন হবে। এ ভর্তুকির অর্থ দেওয়া হবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসিকে।  তাই সবকিছু বিবেচনা করে ভর্তুকি হিসেবে জ্বালানি খাতে আগামী অর্থবছরে দেড় হাজার কোটি টাকা রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী এপ্রিলে মাসে নেওয়া হবে।

এদিকে, অন্যান্য বারের মত এবারও আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দেওয়া হবে কৃষি খাতে। এ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, চলতি ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে কৃষি খাতে ভতুর্কির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। এর আগের বছরের সংশোধিত বাজেটে যা ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা।

আগামী বাজেটে ভর্তুকির দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতকে। এ খাতের আওতায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) ভর্তুকির অর্থ দেওয়া হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ভর্তুকি থাকবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া, আগামী অর্থবছরে বরাবরের মতো রপ্তানি খাতেও নগত সহায়তা দেওয়া হবে। এ খাতের মধ্যে তৈরি পোশাকখাতসহ আরো ডজনখানেক রপ্তানিমুখি পণ্যের রপ্তানির বিপরীতে নগত সহায়তা দেওয়া হবে। সাধারণত এই সহায়তা রপ্তানির বিপরীতে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাজেটে ‘অন্যান্য খাত’ বলে বিবেচিত কয়েকটি খাতে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব রাখা হবে। এর পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, নগদ সহায়তা, প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ দেওয়া আছে ২৮ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ৩ ভাগ। এর আগের অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ২ ভাগ। যদিও সংশোধিত বাজেটে এ ভর্তুকির পরিমাণ ২৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য খাতে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া রয়েছে। এর আগের বছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে রপ্তানি খাতে প্রণোদনা হিসেবে ৪ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। পাটজাত পণ্যে প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ রয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।

পিডিবির জন্য বাজেটে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ রাখা হয়েছে। এর আগের বছর যা ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়