ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আবুর মুক্তিপণের টাকা নেয় অপহরণকারীরা

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০২, ২৩ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আবুর মুক্তিপণের টাকা নেয় অপহরণকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে মনোনয়ন চাইতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবু বকর আবু (৭০)।

শুক্রবার দুপুরে তার লাশ যশোরের কেশবপুরে এসে পৌঁছায়। দুই দফা নামাজে জানাজা শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

গত ১৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। এর দুই দিন পর ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে তার লাশ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ছবি দেখে লাশ সনাক্ত করেছে পরিবারের সদস্যরা। আবু কেশবপুরের মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।

পরিবারের সদস্য ও বিএনপি নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নের জন্য আবু বকর আবু গত ১২ নভেম্বর ঢাকায় যান। ঢাকার পল্টন এলাকার মেট্রোপলিটন হোটেলের চতুর্থতলায় ৪১৩ নং রুমে ছিলেন। সেখান থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে ও জমা দেন। সাক্ষাৎকার বোর্ডে অংশ নেওয়ার জন্য ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। ১৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে তার সঙ্গী মজিদপুর ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম ওষুধ কিনে ফিরে এসে তাকে রুমে পাননি। এ দিন সন্ধ্যারাতে হোটেলের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

পরে আবুর ভাগ্নের কাছে ফোন দিয়ে মামার মুক্তিপণ হিসেবে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ জন্য ওই রাতে কয়েকটি বিকাশ নম্বরও সরবরাহ করে অপহরণকারীরা। কিন্তু রাত গভীর হয়ে যাওয়ায় টাকা বিকাশ করতে না পারায় পর দিন সকালে অপহরণকারীরা পুনরায় যোগাযোগ করে। এরপর তাদের দেওয়া বিভিন্ন নম্বরে দেড় লাখ টাকা বিকাশ করা হয়। পরবর্তীতে আরো ২০ হাজার টাকা বিকাশ করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে অপহরণকারীদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, অপহরণের পর কেশবপুর ও ঢাকার সংশ্লিষ্ট থানায় বার বার ধর্না দিলেও পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ ও ঘটনার তদন্ত করতে গড়িমসি করেছে।

আবু বকর আবুর মৃত্যুর খবর কেশবপুরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। দুপুর ১২টার দিকে তার মরদেহ ঢাকা থেকে কেশবপুরে এসে পৌঁছায়। বাদ জুম্মা কেশবপুর পাবলিক মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, রাজনীতি ও সামাজিক কাজের কারণে জীবনে বিয়ে করেননি আবু। তিনি এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

আবুর মৃত্যুতে জেলা ও উপজেলা বিএনপি শোক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আবুর মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতা-কর্মীরা কালোব্যাজ ধারণ করেছে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/যশোর/২৩ নভেম্বর ২০১৮/বি এম ফারুক/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়