ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আলোচিত ‘বৃদ্ধ শিশু’ বায়োজিদ মারা গেছে

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০১, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আলোচিত ‘বৃদ্ধ শিশু’ বায়োজিদ মারা গেছে

মাগুরা সংবাদদাতা : দেশে-বিদেশে আলোচিত মাগুরার সেই ‘বৃদ্ধ শিশু’ বায়োজিদ (৬) দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর অবশেষে মারা গেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

২০১৬ সালের ২২ মে রাইজিংবিডিডটকমে ‘মায়ের কোলে বৃদ্ধ শিশু’ শিরোনামে সর্বপ্রথম বায়োজিদকে নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দেশ-বিদেশের বহু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হলে সরকার বায়োজিদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। গত এক বছর ধরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলে। বেশ কিছু দিন সুস্থ থাকার পর সে সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

পেশায় রাজমিস্ত্রী বায়োজিদের বাবা লাভলু শিকদার জানান, বায়োজিদ সর্দি, কাশি এবং শ্বাস-কষ্টসহ নানান জটিলতায় ভুগছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা যায়। সঙ্গে বাড়তে থাকে অসুখের প্রকোপ। বিরল রোগ ‘প্রজেরিয়া’য় আক্রান্ত অশীতিপর বৃদ্ধের মতো দেখতে বায়োজিদ কিছু দিন আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

রোববার রাতে বায়োজিদকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সে মারা যায়। বায়োজিদের লাশ মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামে আনা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।



লাভলু শিকদার কথা প্রসঙ্গে জানালেন, ২০১২ সালের মে মাসে মাগুরার মাতৃসদন হাসপাতালে তার স্ত্রী তৃপ্তি খাতুন বায়োজিদের জন্ম দেন। দিনে দিনে বায়োজিদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ প্রকট হতে থাকে। জন্মের তিন মাসের মধ্যে তার দাঁত ওঠে। জন্মের পর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের স্মরণাপন্ন হলেও স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসেনি শিশুটি। 

গত বছর ২৯ মে মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড জানায়, বায়োজিদ বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও দেড় মাস ধরে চিকিৎসা করানোর পর কোনো ফল না পেয়ে দরিদ্র লাবলু শিকদার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশীষ বিশ্বাস জানান,   প্রজেরিয়া রোগ বিরল জেনেটিক অসঙ্গতি। এক কোটি শিশুর মধ্যে একজনের শরীরে এর অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। পৃথিবীতে এই পর্যন্ত প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত ১০০টির মতো রোগী শনাক্ত হয়েছে।



রাইজিংবিডি/মাগুরা/১১ ডিসেম্বর ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়