ইউএসআইডি মিশন পরিচালকের যশোরে শুদ্ধ প্রকল্প পরিদর্শন
যশোর প্রতিনিধি: ইউএসএআইডি’র মিশন পরিচালক ডেররিক ব্রাউনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুরের ‘শুদ্ধ প্রকল্প’ পরিদর্শন করেছেন।
‘শুদ্ধ প্রকল্প’ হচ্ছে, জিএপির (গুড এগ্রিকালচার প্রাকটিসেস) মাধ্যমে সবজি চাষের পদ্ধতি। এরই বাস্তব প্রয়োগ চলছে যশোরের শাহবাজপুর গ্রামে। পরিদর্শনকালে এই প্রক্রিয়ায় চাষাবাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো সম্পর্কে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা। শ্রদ্ধ ব্র্যান্ডের ফসল ও সবজির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে যে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, সেজন্য প্রতিনিধি দল সাধুবাদ জানান।
ইউএসএআইডির কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সবজি ক্ষেত পরিদর্শন ও মতবিনিময়কালে স্থানীয় কৃষক, ‘স্বপ্ন’ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ‘স্বপ্ন-ইউএসএআইডি’র এভিসি প্রকল্পের সহায়তায় ২০১৭ সাল থেকে যশোরে কৃষককে সবজি এবং ফসল ফলনে স্থানীয় জিএপি (গুড এগ্রিকালচার প্রাকটিসেস) স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে চাষ করতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ‘স্বপ্ন’ কৃষকের উৎপাদিত এই নিরাপদ ফল ও সবজি তাদের রিটেইল শপে ‘শুদ্ধ’ নামে বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। সরাসরি নিরাপদ ফল ও সবজি ‘স্বপ্ন’ ক্রয় করায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কৃষকরা।
শাহবাজপুরের কৃষক ইমান আলী শেখ জানান, ১ বিঘা জমিতে লাউ ও শিম চাষ করেছেন। ‘স্বপ্ন- ইউএসআইডি’র এভিসি প্রকল্পের সহযোগিতায় অল্প কীটনাশক ব্যবহার করে সবজি উৎপাদন করছেন। কীটনাশকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কেও সচেতন হয়েছেন। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন।
একই গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন জানালেন, বিঘা প্রতি বেগুন চাষে ৫০ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করতেন। কিন্তু সচেতন হওয়ার পর কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে দিয়েছেন। পোকা ও কীট দমনে সেক্স ফেরোমন ও হলুদ ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এজন্য কম খরচে বেশি উৎপাদন হচ্ছে। দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
স্বপ্ন’র সিনিয়র ম্যানেজার (কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স) মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘শুদ্ধ’ শতভাগ নিরাপদ এবং ট্রেসেবল কৃষি শস্য ব্র্যান্ড, যা চাষ পদ্ধতিতে স্থানীয় জিএপি মানদন্ড বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ব্র্যান্ডের ফসলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য প্রি-হারভেস্ট ইন্টারভাল (পিএইচআই) বজায় রাখা। কীটনাশক/হার্বিসাইডস/ ফাঙ্গিসাইড এবং কোনও পিপিপি (প্ল্যান্ট প্রোটেকশন প্রোডাক্ট) কীট বা অন্যান্য রোগের যেকোন আক্রমণের বিরুদ্ধে উদ্ভিদগুলির জন্য ওষুধ, পিপি অ্যাপ্লিকেশনের তারিখের মধ্যে একটি ব্যবধান বজায় রাখা এবং প্রযোজ্য পিপিপিগুলোর অবশিষ্ট প্রভাবের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ফসল কাটার তারিখের বিষয়টি জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হয়েছে শাহবাজপুরের সবজি চাষিরা। তারা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কাজ করছে। তাদের কাছ থেকে নেওয়া নিরাপদ খাদ্য আমরা ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।’
রাইজিংবিডি/যশোর/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/বি এম ফারুক/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন