ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ইউপি চেয়ারম্যান হত্যার প্রধান আসামি গণপিটুনিতে নিহত

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 ইউপি চেয়ারম্যান হত্যার প্রধান আসামি গণপিটুনিতে নিহত

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কে এম মোশাররফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য জলিল গাইন গ্রেপ্তারের পর গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।

শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে কৃষ্ণনগর বাজারে যুবলীগ কার্যালয়ের সম্মুখে এই ঘটনা ঘটে।

আব্দুল জলিল গাইন কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের হাবিবুল্যাহ গাইনের ছেলে।

কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, জনতার সহায়তায় ঢাকার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালায় সরকার মার্কেট থেকে শুক্রবার দুপুরে মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশ জলিল গাইনকে গ্রেপ্তার করে। পরে জলিল গাইনকে সাতক্ষীরায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র কৃষ্ণনগরে বাড়ির পাশে লুকানো রয়েছে বলে জানালে পুলিশ রাত ৯টার দিকে জলিল গাইনকে নিয়ে সেখানে যায়। কৃষ্ণনগর বাজারে অবস্থিত যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে কিছু বুঝে উঠার আগেই হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে জলিল গাইনকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালালেও শেষ রক্ষা হয়নি। এ সময় কয়েকজন পুলিশও আহত হয়।

রাত পৌনে ১১টার সময়ও পুলিশ অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিল জানিয়ে ওসি হাসান হাফিজুর বলেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। মৃতদেহ তখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে উদ্ধার করা হয়।’

ওসি জানান, আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা, দুটি চাঁদাবাজি, একটি ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতিসহ আটটি মামলা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেল থেকে এলাকাবাসী জলিল গাইনসহ সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে কৃষাণ মজদুর স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে থাকে। প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে পুলিশ জলিল গাইনকে নিয়ে কৃষ্ণনগরের শংকরপুরে তার বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। পরে তাকে নিয়ে কৃষ্ণনগর বাজারে অবস্থিত যুবলীগ কার্যালয়ের পাশে পৌঁছানোর পরপরই হঠাৎ উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে জলিল গাইনকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয়। এ সময় বেশ কিছু গুলির শব্দ শোনা যায়। জলিল গাইনের মৃত্যু হওয়ার পর উত্তেজিত জনতা তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে কৃষ্ণনগর ইউপির জনপ্রিয় চেয়ারম্যান কে এম মোশাররফ হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের মেয়ে সাফিয়া পারভীন বাদী হয়ে ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি জলিল গাইনকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যাকাণ্ডের পরপরই জলিল গাইন আত্মগোপন করে। সর্বশেষ তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালায় অবস্থান করছিলেন, যেখান থেকে তাকে আটক করা হয়।




রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮/এম. শাহীন গোলদার/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়