ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইলিশ মৌসুম ঘিরে ট্রলার তৈরির ধুম

বিলাস দাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২২ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইলিশ মৌসুম ঘিরে ট্রলার তৈরির ধুম

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : সামনে বর্ষা মৌসুম। আর বর্ষা মৌসুম মানেই জেলেদের কর্মযজ্ঞে মহাব্যস্ততা।

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে ইলিশের আকাল চললেও বর্ষা মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ে প্রচুর। আর এই মৌসুমকে ঘিরে সাগর উপকূলের জেলেপল্লিতে চলছে ইলিশ মৌসুম বরণ করে নেওয়ার কর্মযজ্ঞ।

কেউ পুরান জাল সেলাই করছেন,কেউ পুরান নৌকা  অথবা ট্রলার মেরামত করছেন। আবার কেউ সাধ্যানুযায়ী নতুন ট্রলার তৈরী করছেন। বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট কর্মযজ্ঞ এখন সাগর উপকূলীয় প্রতিটি জেলেপল্লিতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দর রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া, মৌডুবী মৎস্য বন্দর এবং চরমোন্তাজসহ উপকূলীয় অঞ্চলের একাধিক জেলেপল্লিতে চলছে ইলিশ ধরার উপযোগী নৌকা অথবা ট্রলার তৈরীর ধুম।  উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেপল্লির ট্রলার মালিক ও জেলেদের মহা ব্যস্ততায় সময় কাটছে।

ট্রলার মালিক ও জেলে সূত্রে  জানা গেছে, এ বছর জেলার জেলেপল্লিতে অন্তত ১০০ মতো নতুন  ট্রলার নির্মিত  হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোট বাইশদিয়ার জেলে আলাল প্যাদা বলেন, ‘আমি আগে মাইনসের লগে (সঙ্গে) ইলিশের সাবারে (ট্রলারের দলে) কাম করছি। এ্যাহন আমি নিজেই জালের সাবার করার লাইগা নতুন বোট (ট্রলার) করতেছি। দেহি আল্লায় কিছু করতে দেয় কিনা। আজীবনতো মাইনষের লগে কাম হরছি। এ্যাহন নিজের বোট নামামু।’

 


রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া গ্রামের জেলে মিরাজ হাওলাদার জানান, তিনি এ বছর আট লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মাছ ধরার নতুন ট্রলার  নির্মাণ করছেন। ইতিমধ্য ট্রলার তৈরীর ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসের মধ্য তিনি তার নতুন ট্রলারটি নদীতে নামাতে পারবেন।

একই গ্রামের জেলে হিজবুল হাওলাদার  জানান, তার পূর্ব পুরুষরা সবাই মাছের ব্যবসা করে আসছেন। তিনিও এ পেশায় আছেন। দীর্ঘদিন তিনি মাছের গদি (আড়ৎ) করে ব্যবসা করছেন। এবার তিনি নিজেই ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ট্রলার নির্মাণ করেছেন।  তবে সাগরে জেলেদের উপরে জলদস্যুদের হামলার কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি জানান, নতুন তৈরী ট্রলারটি ব্যয়ের অর্ধেক টাকাই ধার এবং ঋণের।

মহিপুর ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহিপুর  মৎস্য  বন্দরের ট্রলার মালিক মো. জাকির হোসেন জানান, আগে  তিনি ভাড়াটে  ট্রলার নিয়ে  মৎস্য  ব্যবসা করতেন। এ বছর  তিনি নিজেই ১০  লাখ  টাকা ব্যয়ে  একটি মাছ ধরার ট্রলার নির্মাণ  করেছেন।

তিনি আরো  জানান, এ বছর মহিপুর এবং আলীপুর মৎস্য বন্দরে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি নতুন ট্রলার নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্য বেশ কিছু ট্রলার ডগ থেকে নদীতে নামানো হয়েছে এবং ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে নতুন ট্রলারটি নিয়ে সাগরে মাছ ধরার কাজে পাঠানো হবে।

মহিপুর মৎস্য বন্দরের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সাম্পাদক নিমাই চন্দ্র দাস জানান, বর্তমান সরকার ইলিশ নিয়ে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তাতে আগামী ইলিশ মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়বে বলে আমার ধারণা। তবে সে ক্ষেত্রে জল সীমান্ত বাহিনী অথবা কোস্টগার্ড জেলেদের প্রতি সহনশীল হতে হবে।  যাতে সমুদ্রগামী জেলেরা জলদস্যুদের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

 

 

রাইজিংবিডি/পটুয়াখালী/২২ এপ্রিল ২০১৭/বিলাস দাস/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়