ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য পড়ে দেখুন’

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪১, ১৬ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য পড়ে দেখুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণের কিছু অংশের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা একজনের নেতৃত্বে হয়নি, তারা পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য পড়ে দেখুন।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াত জোটের বিভিন্ন অপরাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, এটাই ছিল তাদের কাজ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যটা যখনই পরিবর্তন হতে যায়, দেশের মানুষ যখন একটু সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, আশার আলো দেখে, আর যারা এই মানুষের জন্য কাজ করে তাদের ওপরই বারবার আঘাত হানতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কিছু কিছু মানুষ তাদেরই দোসর। নিজেদের জ্ঞানী-গুনী-বুদ্ধিমান, বুদ্ধিজীবী অনেক কিছুই ভাবেন। আর কাজের সময় যত রকমের অপকর্মকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এবং তাদের উৎসাহিত করে কেন?

এদেশের মানুষের কি একটু বেঁচে থাকার অধিকার নেই, ভালো থাকার অধিকার নেই’ এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। তখনি আবার কেন এই চক্রান্ত? কেউ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আর কেউ যদি নির্বাচনে না আসে থাকে, সেখানে আমাদের করার কি আছে? এটা তো যার যার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কেউ যদি রাজনৈতিক পদক্ষেপে ভুল করে, সেই ভুলের খেসারত সেই দলকেই দিতে হবে। তার জন্য এই দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে হবে কেন? আজকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলেই দেশের আর্থ সামাজিক উন্নতি হচ্ছে।’

জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের খণ্ড খণ্ড দিকগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইয়াহিয়া খান ২৬মার্চ বক্তৃতায় একজনকেই দোষারোপ করেছিল। কেউ কেউ বলতে চেষ্টা করে যে, একজনের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়নি। হ্যাঁ, একজন তো নেতৃত্ব দিয়েছে। জাতির পিতা শেখ মুজিব শুধু নেতৃত্ব দেননি, এই আওয়ামী লীগ সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। এই সংগঠন গড়ে তোলার জন্য তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এই সংগঠন গড়ে তুলেই সমস্ত বাংলাদেশে চারণের মতো ঘুরিয়ে বেড়িয়েছেন। তিনি এই বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। আর তাই ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালায়, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তখন ওই পাকিস্তান বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু নিয়ে যায়নি, ইয়াহিয়া খান যিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যেও একজনকেই দোষারোপ করেছিলেন, সেটা হচ্ছে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। তাহলে যারা এই কথা বলেন, কোনো একক ব্যক্তির দ্বারা দেশ স্বাধীন হয়নি। তারা কি ইয়াহিয়া খানের ভাষণটা পড়েন নাই। আমি তাদেরকে বলবো, ইয়াহিয়া খানের ভাষণটা একটু পড়ে দেখেন, কাকে দোষারোপ করেছে এবং কাকে গ্রেপ্তার করেছে।’

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সিমিন হোসেন রিমি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।





রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ আগস্ট ২০১৭/নৃপেন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়