ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এ বছরই পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুর সংঘর্ষ?

মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২৫ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এ বছরই পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুর সংঘর্ষ?

প্রতীকী ছবি

মোখলেছুর রহমান : এই দৃশ্যটি আমরা কল্পনা করতেই ভয় পাই যে, যদি কখনো আমাদের এই প্রাণপ্রিয় পৃথিবীর সঙ্গে বৃহৎ একটি মহাকাশীয় শিলার সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে এবং আমাদের এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যায়?

সত্যি বলতে পৃথিবীর সঙ্গে মহাকাশের অন্য কোনো গ্রহের সংঘর্ষ বাঁধবে-এটা আমরা ভাবতেও চাই না।

কিন্ত আমরা ভাবতে না চাইলেও বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন যে, এই বছরের মধ্যেই এই ভয়ংকর দৃশ্যটি বাস্তবে রুপ নিতে পারে।

নাসার একজন নেতৃস্থানীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আগামী বছরের মধ্যে পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে পারে এমন প্রত্যাশিত পাঁচটি গ্রহাণুর একটি তালিকা টুইট করেছেন। রন বালককে নামের ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসাদেনার নাসা জেট প্রপ্লেশন ল্যাবরেটরির একজন স্পেস এক্সপ্লোরার এই উদ্বেগজনক পূর্বাভাসগুলো টুইট করেছেন।

তিনি বলেন, আগামী বছরের মধ্যে এই পরিচিত গ্রহাণুগুলো পৃথিবীর খুব সন্নিকটে চলে আসবে। তখন এরা পৃথিবী থেকে পাঁচ লুনারেরও কম দূরত্বে অবস্থান করবে।

বালককে এর মতে, এ ধরনের প্রথম ঘটনাটি ঘটবে আগামী ২৩ জুলাই যখন ৪০-৯০ মিটার ব্যাসের একটি গ্রহাণু ‘২০১৭ বিএস ৫’ পৃথিবী থেকে ৩.১৫ লুনার (৭৫২,৯৩৭ মাইল) দূরত্বে অবস্থান করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

তবে অনুমান করা হচ্ছে যে, সবচেয়ে বড় আঘাতটি আসবে আগামী ১২ অক্টোবর যখন ‘২০১২টিসি৪’ গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে ০.১৫ লুনার (৩৫,৮২৮ মাইল) দূরত্বে চলে আসবে। যদিও সৌভাগ্যক্রমে গ্রহাণুটির ব্যাস মাত্র ১২-২৭ মিটার।



আর অবশিষ্ট তিনটি আঘাত আসবে যথাক্রমে ৩ ডিসেম্বর, ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং ২ এপ্রিল তারিখে।

বস্তুত বিগত কয়েক বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা এই গ্রহাণুর হুমকি মোকাবেলা করার চেষ্টা করার চেষ্টা করে আসছে, যা কিনা আমাদেরকে সামান্য বা কোনো সতর্কতা ছাড়াই এই পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে।

যেমন ২০১৩ সালে কোনো সতর্ক বার্তা ছাড়াই রাশিয়ার চেলিয়াবিংক্সে একটি ৫৬ ফুট (১৭ মিটার) উল্কা আঘাত হানে যাতে ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়।

এ লক্ষ্যেই হোয়াইট হাউস ‘ন্যাশনাল নিরীক্ষা-আর্থ অবজেক্ট প্রস্তুতির কৌশল’ নামে একটি অফিসিয়াল ডকুমেন্ট প্রকাশ করে, যাতে একটি উল্কা বা গ্রহাণু আমাদের দিকে ধেয়ে আসার পরিকল্পনা বর্ণনা করা হয় এবং এটি দেখায় যে আমরা এখনো প্রস্তুত নই।

ডকুমেন্টটিতে বিদ্যমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পদের সমন্বয় সাধন এবং বর্তমান ক্ষমতায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলো যোগ করে পৃথিবীর কাছাকাছি বস্তুর (এনইও) প্রভাবগুলোর মোকাবেলা করার জন্য আমাদের জাতীয় প্রস্তুতির উন্নতি করার কথা বলা হয়েছে।

এই ডকুমেন্টটি বড় এবং ছোট উভয় এনইও দ্বারা পরিচালিত ঝুঁকিকে হ্রাস করার এবং পরিচালনার চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি পদক্ষেপ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং হাইটেক-স্পেস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে চায়, যা হুমকিকে ধ্বংস করতে পারে।

গত বছরের শেষেই নাসা সতর্ক করেছিল যে, আমরা গ্রহাণু আঘাত মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত নই।

গত ডিসেম্বরে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের বার্ষিক সভায় ম্যারিল্যান্ডের নাসার গডডার স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের একজন গবেষক ড. জোসেফ নথ এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মূলত এই মুহূর্তে এটি মোকাবেলা করতে আমাদের তেমন কিছুই করার নেই।

তবে ডকুমেন্টটিতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ সমস্যা মোকাবেলায় ভবিষ্যতে দেশগুলোর একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়