ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘এইসব দিনরাত্রি’র স্ক্রিপ্ট পড়ে রেগে গিয়েছিলাম: ডলি জহুর

কবি স্বরলিপি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৮ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘এইসব দিনরাত্রি’র স্ক্রিপ্ট পড়ে রেগে গিয়েছিলাম: ডলি জহুর

‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের মাধ্যমে আমি হুমায়ূন আহমেদের কাজের সঙ্গে যুক্ত হই। এর আগে আমি তাকে সেভাবে চিনতাম না। বিটিভির প্রডিউসার মোস্তাফিজুর রহমান আমার নাম প্রস্তাব করেছিলেন নিলু চরিত্রটির জন্য। আমার সাথে মোস্তাফিজ সাহেবেরই নাটকটি নিয়ে প্রথমে কথা হয়। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমি বিটিভিতে যাই। আমি কোনো কিছু সেভাবে না জেনেই কাজ করতে রাজী হয়েছিলাম। কারণ নাটকটি ছিল ধারাবাহিক।

মোস্তাফিজ স্যারের অফিস রুমে ঢুকে দেখি এক কোণায় সোফায় পা তুলে একেবারে আরাম করে বসে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। আমি তার সঙ্গে কথা বললাম না। অন্যদের সঙ্গে বসে স্ক্রিপ্ট দেখছিলাম।
স্ক্রিপ্ট পড়তে গিয়ে খুব অবাক হচ্ছিলাম। বলা যায়, ভেতরে ভেতরে রেগে গিয়েছিলাম। কী অবস্থা! ছোট ছোট দৃশ্য! ছাড়া ছাড়া সংলাপ! আমার কাছে একটু অন্যরকম লাগছিলো। আমি মোস্তাফিজ সাহেবকে বলেই বসলাম, এ আবার কেমন নাটক, এ নাটক কে লিখেছে?

মোস্তাফিজ সাহেব আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থাকলেন, কিছু বললেন না।

ওখানে আসাদুজ্জামান নূর, ডা. এনামুল হকসহ আরো অনেকেই ছিলেন।

এনামুল ভাই বলে উঠলেন, ডলি তোমার তো বোধহয় হুমায়ূন সাহেবের সঙ্গে  পরিচয় নাই, তাই না?

আমি বুঝে গেলাম তিনি কি বোঝাতে চাইলেন। এরপর আমি আর কোনো কথা বললাম না। হুমায়ূন সাহেবকে দেখে একটু থতমত খেয়ে গেলাম। তারপর সালাম দিলাম। কথাবার্তাও হলো টুকটাক।

তার সমালোচনা ছিল সামনাসামনি। যা বলার বললেন। তো যাই হোক, তিনি  আমার অভিনয় পছন্দ করলেন। পরবর্তীতে ‘শঙ্খনীল কারাগার’ নির্মাণ করলেন, সেখানে আমাকে রাখলেন।

আমি তার একক নাটক ‘জননী’তে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম। কাজটা ছিল ওয়ার্ল্ড ভিশনের। ওদের কন্ডিশন ছিল- আমাকে আর আসাদুজ্জামান নূরকে নিয়ে কাজটা করতে হবে। এই নাটকের শুটিং হয়েছিল ময়মনসিংহে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। আর যে বাড়িটি শুটিংয়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল আমরা শুটিংয়ের পুরো সাতদিন ওই বাড়িতেই ছিলাম।

আমার মেয়ের ভূমিকায় ছিল শাওন। টিমে মাহফুজও ছিল। আমরা যে বাড়িতে ছিলাম তার চারপাশ ছিল নোংরা। খোলা শৌচাগার ব্যবস্থা, বাড়ির ভেতর গরুর ঘর। চারপাশ থেকে গন্ধ আসতো। এ নিয়ে হুমায়ূন সাহেব কখনো কোনো উচ্চবাচ্য করতেন না। যদিও আমাদের খুব কষ্ট হতো। কিন্তু আমরাও কিছু বলতাম না। সাত দিন ছিলাম। সে কথা আমার এখনো মনে পড়ে। সে অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে, হুমায়ূন সাহেব জীবনকে খুব সহজভাবে দেখতেন।


অনুলিখন : স্বরলিপি



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জুলাই ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়