ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এমপিডাঙ্গী থেকে পণ্যবাহী জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এমপিডাঙ্গী থেকে পণ্যবাহী জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি : পদ্মায় নাব্যতা সংকটের কারণে পণ্যবাহী মাঝারি ও বড় জাহাজ ফরিদপুর নদীবন্দরে ভিড়তে না পারায় কিছু দিন ধরে জাহাজগুলো নদীবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ফরিদপুর চরভদ্রাসন উপজেলার এমপিডাঙ্গীতে নোঙর করে পণ্য খালাস করছিল। কিন্তু এমপিডাঙ্গী গ্রামে নতুন করে নদীভাঙন দেখা দেওয়ায় ওই এলাকায় কার্গো জাতীয় ভারী নৌযান নোঙর না করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এতে নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ নৌরুটে মালামাল আনয়নকারী ব্যবসায়ীরা।

নতুন করে নদীভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া ভাঙনের কারণ অনুসন্ধান করে তা প্রতিরোধে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুন নাহার ও পাউবোর উপবিভাগীয় প্রোকৌশলী একেএম জহিরুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করে তদন্তে পাঠান।

গত বৃহস্পতিবার ওই টিম সরজমিনে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন ও তদন্ত শেষ করেন। তারা জানান, পদ্মায় বিআইডব্লিউটিএর চলমান ড্রেজিংয়ের কারণে পানির গভীরতা বেড়ে যাওয়ায় ওই এলাকায় কার্গো জাতীয় ভারী নৌযান চলাচল ও নোঙর করার কারণে নতুন করে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা নদীর পাড়ে নোঙর করে রাখা কার্গো দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভাঙন এলাকায় কোনো ভারী নৌযান নোঙর না করতে নির্দেশ দেন।

শুক্রবার ভাঙনের বিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘যেখানে ঘাট না সেখানে সম্প্রতি জেলার সিঅ্যান্ডবি ঘাটের মালামালবাহী কার্গো নোঙ্গর করা ও সেই পণ্য ভাঙনকবলিত নদীর পারে শত শত ট্রাকে করে আনলোড করার ফলে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
 


তিনি বলেন, ‘চরভদ্রাসন উপজেলায় ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জয়দেব সরকারের ডাঙ্গীতে ১৮শ মিটার, হাজীগঞ্জ বাজারে ছয়শ মিটার ও এমপিডাঙ্গীতে ১৫শ মিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের তিনটি প্রকল্প চলতি মাসে সংশ্লিষ্ট অ্যাপরাইজাল সভায় অনুমোদিত হয়ে প্রি-একনেকে আছে ও পরবর্তীতে একনেক সভায় অনুমোদনের পর প্রকল্প তিনটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’ যেহেতু এমপিডাঙ্গী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি প্রি-একনেকে আছে সেহেতু বর্তমানে ভাঙন রোধে নতুন করে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব না বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে নাব্যতা সংকটের কারণে ফরিদপুর নদীবন্দরে মালামালবাহী কার্গো ও জাহাজ নিতে না পারায় ব্যাবসায়ীরা এমপিডাঙ্গীতে জাহাজ নোঙর করে মালামাল খালাস করে আসছিলেন। তারা জানান, জাহাজ নোঙর করে মালামাল খালাস করতে না পারায় তারা নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একদিকে বন্দরে জাহাজ ভিড়তে না পারায় ১০ কিলোমিটার দূরে থেকে পণ্য খালাস করায় ব্যয় বৃদ্ধি পায়। তাদের দাবি, জেলা প্রশাসন জাহাজ নোঙরের কোনো জায়গা নির্ধারিত করে না দেওয়ায় এখন মাঝনদীতে বা দূরে কোথাও জাহাজ দাঁড় করিয়ে রেখে ছোট নৌকায় পণ্য নামিয়ে পাড়ে আনতে হবে, এতে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

অপরদিকে ঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরই মধ্যে ফরিদপুর নদী বন্দরে ৮০ ভাগ জাহাজ আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এবার জেলা প্রশাসন এমপিডাঙ্গীতে জাহাজ নোঙ্গর করতে নিষেধ করায় নতুন করে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

এ অবস্থা চলতে থাকলে শিগগিরই ফরিদপুর নদীবন্দর দিয়ে মালামাল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে দাবি করে ঠিকাদার প্রতিনিধি এমএ সালাম জানান, রাজস্ব আদায় না থাকলে আগামীতে এই ঘাটের ইজারায় অংশ নিতে সাহস পাবে না কোনো প্রতিষ্ঠন, এতে রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার।



রাইজিংবিডি/ফরিদপুর/২৭ জানুয়ারি ২০১৮/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়