ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৭ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

ডেস্ক রিপোর্ট : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। বাঙালি জাতি এই ৬ দফা’র পথ ধরেই স্বাধীকারের চূড়ান্ত পথে এগিয়ে যায়। আর এ পথেই অর্জিত হয় চির আকাঙ্ক্ষার স্বাধীনতা।

অবিস্মরণীয় সেই ঐতিহাসিক ছয়-দফা দিবস আজ। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১০ জন বাঙালি শহীদ হন।

এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোষহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।

রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে।

সকাল সাড়ে ৯ টা থেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে নানা কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা একটি অন্যতম মাইলফলক।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শাসনতান্ত্রিক কাঠামো, কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা, মুদ্রানীতি, রাজস্ব ও করনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য, আঞ্চলিক বাহিনী গঠন এই ৬-দফার মধ্যেই তিনি (বঙ্গবন্ধু) পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেন, যার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালির স্বাধিকার ও স্বায়ত্বশাসনের রূপরেখা।’

প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার ৬ দফার রূপকার বঙ্গবন্ধুকে ৮ মে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৬ দফার প্রতি বাঙালির অকুণ্ঠ সমর্থনে রচিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা।’

তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।’

সেদিন বঙ্গবন্ধুর ৬-দফার মূল বক্তব্য ছিল- প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দু’টি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর ও শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ৬-দফা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অস্ত্রের ভাষায় উত্তর দেওয়া হবে।

এদিকে ৬-দফা কর্মসূচি জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমগ্র পূর্ববাংলা সফর করেন এবং ৬-দফাকে বাঙালির বাঁচার দাবি হিসেবে অভিহিত করেন।

পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬-দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৮/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়