ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কন্যার মৃত্যু নিয়ে রহস্য, বাবার আত্মহত্যা

সাফিউল ইসলাম সাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ১৬ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কন্যার মৃত্যু নিয়ে রহস্য, বাবার আত্মহত্যা

সাফিউল ইসলাম সাকিব, সাভার : একমাত্র কন্যার মৃত্যু নিয়ে যখন রহস্যের জট খোলেনি, এর মধ্যে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সাভারের আমিন মোল্লা।

আজ বুধবার সকালে নিজ বাসা থেকে আমিন মোল্লার (৩৫) মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় ভ্যান চালক। সাভারের তালবাগ মহল্লায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।

গত ২৩ এপ্রিল আমিন মোল্লার পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে তিশার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আলোচিত এ মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা।

সাভার পৌরসভার রেডিও কলোনি মহল্লার ৮ তলার আবাসিক ভবনের ছাদ থেকে মাটিতে পড়ে তিশার মৃত্যু হয়। এটি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা, না দুর্ঘটনা তা ঘটনার চার মাসেও উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

তিশার মৃত্যুর বর্ণনা দিতে গিয়ে তার মামা ভাসান শেখ বলেন, রেডিও কলোনির যে ৮ তলার বাসার নিচে তিশার মরদেহ পাওয়া যায়, ওই ভবনে তিশার খালা রাত্রী বেগম ও খালু চান মিয়া ভাড়া থাকেন। ২৩ এপ্রিল বাবা-মাকে না জানিয়ে তিশা সেখানে যায়। তিশার খালা সেদিন বাসায় ছিলেন না। খালু চান মিয়া বাসায় ছিলেন। খালু চান মিয়ার দাবি, তিশা তাদের ফ্ল্যাটে না ঢুকে ছাদে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 



প্রথম দিকে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবেই নিয়েছিলেন তিশার বাবা-মা। কিন্তু তিশার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় তিশাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সংবাদ বের হয়।

ভাসান শেখ জানান, পত্রিকার সংবাদের সূত্র ধরে তিশার বাবা তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক সোহেল আল মামুনের কাছে যান। মামুন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেখান তিশার বাবাকে। সেখানে তিশার শরীরে আঘাতের চিহেৃর কথা আছে। কিন্তু এটি হত্যা, না আত্মহত্যা- সেটি পরিষ্কার করা হয়নি। পত্রিকায় সংবাদ বের হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিশার বাবা আমিন মোল্লা।

দরিদ্র এই বাবা মেয়ের হত্যার রহস্য উন্মোচনে মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকেরা ঝামেলায় না জড়াতে তাকে মামলা করতে দেননি। এ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে আমিন মোল্লার কথাকাটি হয়। এতে তিনি অভিমান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মহসিনুল কাদির বলেন, ‘‘এ ধরনের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিয়ে নির্ণয় সম্ভব নয়। যেহেতু তিশা আট তলা থেকে পড়ে মারা গেছে, তাই তার শরীরে আঘাতের চিহৃ থাকতে পারে। তাকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলেছেন কি না- এমন প্রমাণ কিংবা ঘাতক কেউ থাকতে পারেন, তা আমরা এখনো খুঁজে পাইনি।”

তিনি আরো বলেন, তিশার মৃত্যুর দিন সকালে স্কুলে না যাওয়ার কারণে তিশাকে বকা দেন তার মা। তদন্ত শেষে মনে হয়েছে, মায়ের বকুনি খেয়ে অভিমান করে তিশা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। স্থানীয় কিছু পত্রিকায় এটি হত্যা উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করায় তিশার বাবা বিভ্রান্তিতে পড়েন। এই বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার রাতে আমিন মোল্লা তার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় পরিবারের লোকদের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি রাতে ঘরে চলে যান। পরে সকালে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।




রাইজিংবিডি/সাভার/১৬ আগস্ট ২০১৭/সাফিউল ইসলাম সাকিব/বকুল 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়