ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

কবরে দাঁড়িয়ে সেলফি!

সাফিউল ইসলাম সাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কবরে দাঁড়িয়ে সেলফি!

সাফিউল ইসলাম সাকিব, সাভার : সেলফি নিয়ে কত কাণ্ডই না ঘটছে সারা দেশে। ঝুঁকিপূর্ণ কসরতে সেলফি তুলতে গিয়ে জীবন হারিয়েছেন, এমন খবরও হরহামেশাই শোনা যায়। তাতেও যেন কিছুতেই কমছে না সেলফি ব্যাধির উন্মাদনা। সেলফিপ্রেমীরা এবার কবরে দাঁড়িয়েও সেলফি তুললেন। তাও আবার জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কবরে, যারা কি না বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। যাদের অনেকের নাম-পরিচয় কিছুই জানা যায়নি। সেই অজ্ঞাত বীর সন্তানরা ঘুমিয়ে আছেন সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের কবরস্থানে। সারা বছরই এই কবরস্থানটির পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে স্মৃতিসৌধের দর্শনার্থীদের পদচারণায়।

আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসেও কবরস্থানটির পবিত্রতা নষ্ট হতে দেখা গেছে। কবরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে দেখা গেছে তরুণ সেলফিপ্রেমীদের। কেউ তুলেছেন দলবদ্ধ হয়ে, আবার কেউবা একান্তে নিজের সেলফি তুলেছেন।



দলে দলে পায়ে মাড়িয়ে কবরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত হেঁটে পার হয়েছেন। কবরটির পবিত্রতা নিয়ে সামান্যতমও মাথা ব্যথা দেখা যায়নি তাদের মধ্যে।

জুয়েল মাহমুদ (২৫) নামের একজন সেলফিপ্রেমীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কবরস্থানটি সম্পর্কে তার জানা নেই। ইসমাঈল হোসেন নামের অপর একজনও কবরস্থানটি সম্পর্কে না জানার দোহাই দেন।

তবে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সেলফিপ্রেমীদের ‘না-জানা’র দোহাইকে একটি কৌশল হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘স্মৃতিসৌধ উৎসবের জায়গা নয়। এখানে প্রবেশের আগেই সব দর্শনার্থীর স্থাপনাগুলো সম্পর্ক ধারণা নেওয়া উচিত। তা ছাড়া কবরস্থানটির সামনেও বড় অক্ষরে “অজ্ঞাত শহিদদের কবরস্থান” লেখা রয়েছে। এরপরেও যদি কেউ না জানার দোহাই দেয় তাহলে সেটি ইচ্ছাকৃতই বলা যায়।’



তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর এমন ঘটনা ঘটে বলে আমাদের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধের মূল মিনার এবং কবরস্থানটির পবিত্রতা রক্ষার জন্য পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তারাই বলতে পারবেন।’

এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য জানতে স্মৃতিসৌধের মূল ফটকে স্থাপিত ঢাকা জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যাওয়া হলে দুপুর ১টার দিকে সেখানে দায়িত্ববান কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলমের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের এই কবরস্থানটির পবিত্রতা রক্ষায় কবরস্থানটি উন্মুক্ত না রেখে এর চারপাশ ঘিরে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।




রাইজিংবিডি/ সাভার/১৬ ডিসেম্বর ২০১৭/সাফিউল ইসলাম সাকিব/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়