ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করপোরেট করের হার আরো কমানো প্রয়োজন : ডিসিসিআই

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৭, ৭ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করপোরেট করের হার আরো কমানো প্রয়োজন : ডিসিসিআই

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে করপোরেট করের হার আরো কমানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই বোর্ড রুমে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানায় সংগঠনটি। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান। এ সময় ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির করের হার ৪০ শতাংশ হতে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমিয়ে আনা এবং নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির করের হার ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ হতে ৪০ শতাংশ নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হলেও, পাবলিকলি ও নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি এবং মার্চেন্ট ব্যাংক খাতে বিদ্যমান করের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। যার কারণে পুনঃবিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। জিডিপিতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বিদ্যমান ২৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ২৫ দশমিক ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হলেও করপোরেট করের হার কমানো না হলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।

অথচ জিডিপিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১ শতাংশ বাড়াতে হলে প্রায় ২৪-২৫ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন। এমতাবস্থায় জিডিপিতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হলে করপোরেট সেক্টরের সকল খাতে করের হার নূন্যতম ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কমানো প্রয়োজন।

ডিসিসিআই সভাপতি কোম্পানির লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত করের হার কামানোর প্রস্তাবসহ ও বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি  (এডিপি) খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা কি না পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি এবং এডিপি খাতে বরাদ্দের প্রস্তাবকে ডিসিসিআই সাধুবাদ জানায়।

এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেট মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়োছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যার মধ্যে এনবিআরের উৎস হতে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য করের আওতা বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ ও পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি।

প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি অবকাঠামো খাতে ২৪ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা এবং যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৪৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে আমাদের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা প্রয়োজন এবং এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কাজের গুনগতমান নিশ্চিত করা আবশ্যক।

রেল খাতের উন্নয়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকার প্রস্তাব করেছে, যা ৩ শতাংশ এবং এটাকে ৭ শতাংশে উন্নীত করার প্রয়োজন। কারণ রেলপথ ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ পণ্য পরিবহন করা সম্ভব, যা ব্যবসার ব্যয় হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে বলেও জানান আবুল কাসেম খান।

তিনি আরো বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০ এর নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও টাষ্কফোর্স গঠনের উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং এলক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর মনিটরিং অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন’ শীষক কমিটিতে বেসরকারি খাতের প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রস্তাবিত ওয়ানস্টপ সার্ভিসের একই স্থান হতে অনলাইনভিত্তিক ১৫০টি সেবা প্রদানের কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার প্রয়োজন।

এ সময় তিনি মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দকে সাধুবাদ জানিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং গবেষণা পরিচালনায় বিনিয়োগ করলে তা ৫ শতাংশ হারে করমুক্ত সুবিধা প্রদানেরও আহ্বান জানান।

এদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাটের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে, যার ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে সক পণ্যের ওপর বিদ্যমান ভ্যাট হার বজায়ে রাখারও আহ্বান জানান তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৮/নাসির/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়