ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘কাউন্সেলিং নিয়ে বই লিখতে চাই’

সাইফ বরকতুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কাউন্সেলিং নিয়ে বই লিখতে চাই’

রাইজিংবিডির স্টলে শিল্পী রহমান : (ছবি : সাইফ রাজু)

সাইফ বরকতুল্লাহ : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে শিল্পী রহমানের দুটি বই। ভাষাচিত্র থেকে  (সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে স্টল নম্বর ৬১০-৬১১)  প্রকাশিত বই দুটো হলো কাব্যগ্রন্থ ‘পথের অপেক্ষা’। আরেকটি নিবন্ধ সংকলন ‘সম্ভাবনার প্রতিচ্ছায়া’।

শিল্পী রহমান পেশায় কাউন্সেলর বা সাইকোথেরাপিস্ট। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষকে শ্রদ্ধা এবং প্রকৃত মর্যাদা দেওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তিনি। মানুষে মানুষে যে বৈচিত্র্য তা নিয়েও ভাবতে ও লিখতে পছন্দ করেন।

বইমেলা আসলেন কেমন দেখলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভালো লাগছে। গত বছরও এসেছিলাম, বইমেলা প্রাণের মেলা। এত মানুষ, এত বই অনেক ভালো লাগে।

‘সম্ভাবনার প্রতিচ্ছায়া’ গ্রন্থটি সম্পর্কে শিল্পী রহমান জানান, এখানে কয়েকটি নিবন্ধ আছে। মূলত বাংলাদেশের সমকালীন ঘটনা নিয়ে লেখা নিবন্ধগুলো। আত্মহত্যা, ঐশির ঘটনা, সোস্যাল যে ঘটনাগুলো হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায়, আহত করে- এসব নিয়ে ভাবনাগুলো চিত্রায়িত করা হয়েছে। সমাজ পরিবর্তনের চিন্তা থেকেই এ ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

পরিবর্তনের চিন্তা কীভাবে এলো এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্পী রহমান বলেন, ‘আমি কাউন্সেলিং করি। মানুষের সঙ্গে কথা বলি। মানুষের সুখ-দুঃখ আমার সঙ্গে শেয়ার করে। আমার ভাগ্নি আমাকে বলে, ‘আমি হচ্ছি মানুষের ডায়েরি।’ আমি সবার সুখ-দুঃখের কথা বহন করি। এজন্য এ ব্যাপারগুলো আমাকে টাচ করে। যে ঘটনাগুলো ঘটে, এগুলো দেখে মনে হয় আমাকে কিছু করা দরকার। সে ভাবনা থেকেই মূলত কাজগুলো করি।

আপনি তো একসঙ্গে অনেক কাজ করেন, লেখালেখি, কাউন্সেলিং- কাজের সমন্বয় সম্পর্কে শিল্পী রহমান বলেন, ‘সময় বের হয়ে যায়। আমার ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গেছে। ব্যস্ততা কমে গেছে। আসলে কবিতা আমার লিখতে খুব ভালো লাগে।’

কবিতা কেন লিখেন এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘অনুভূতিতে যখন কিছু একটা ছুঁয়ে যায় তখন কবিতা লিখি। কবিতা লিখতে লিখতে আর কাউন্সেলিং করতে করতে ‘সম্ভাবনার প্রতিচ্ছায়া’ গ্রন্থটি লিখেছি। আমার ইচ্ছে আছে ভবিষ্যতে কাউন্সেলিং এর ওপর একটা বই লিখব। আমি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়েও লিখেছি।’

আপনি তো অস্ট্রেলিয়াতে দীর্ঘদিন ধরে থাকছেন, সেখানকার বইমেলা আর একুশে বইমেলা নিয়ে কী পার্থক্য দেখেন- এর উত্তরে শিল্পী রহমান বলেন, ‘অনেক পার্থক্য। এত বড় বইমেলাতো আমি জীবনেও দেখিনি। মাসব্যাপী বইমেলা পৃথিবীর আর কোথাও হয় না- এটা ভীষণ গর্বের ব্যাপার। আমি অস্ট্রেলিয়াতে বাংলা স্কুলের শিক্ষকতা করেছি প্রায় আঠার বছর। সেখানে বাচ্চাদের বাংলা শিখিয়েছি। বড়দের বাংলা শিখিয়েছি। এটা আমার অহংকারের বিষয়। যারা বাংলাদেশে কাজ করতে আসে তাদেরও বাংলা শিখিয়েছি।’

বিদেশে বাংলা ভাষা নিয়ে কোনো কাজ করছেন কি না এর উত্তরে শিল্পী রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছে আছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা শহীদের মেয়ে। আমার বাবাকে পাকিস্তানী আর্মিরা মেরে ফেলে। গত বছর আমার একটা বই বেরিয়েছে ‘যুদ্ধ শেষে যুদ্ধের গল্প’। এটা যুদ্ধ নিয়ে নয় যুদ্ধ পরবর্তী মানুষের জীবন সংগ্রাম নিয়ে লেখা। এসব নিয়ে দেশে-বিদেশে কথাও বলেছি। আমি চাই বাংলাদেশের মানুষ কাউন্সেলিংটাকে সহজভাবে নেবে। এতে ডিপ্রেশন কমে যাবে, বিষণ্ণতা কমে যাবে, অনেক কিছু থেকে মানুষের মুক্তি আসবে। শান্তি আসবে জীবনে। সেটার জন্যই এটা প্রমোট করা দরকার।’

বইমেলা নিয়ে প্রত্যাশা সম্পর্কে তিনি জানান, চা খুব মিস করছি। বইয়ের সঙ্গে চায়ের এত সুন্দর একটা সম্পর্ক কিন্তু চা খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। আর আড্ডাটা আর একটু বেশি জমলে ভালো লাগত।





রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/সাইফ/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়