ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘কিছু আর্থিক ও দাতব্য সংস্থাই ষড়যন্ত্রের অর্থদাতা’

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৫ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কিছু আর্থিক ও দাতব্য সংস্থাই ষড়যন্ত্রের অর্থদাতা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘সাধারণত যেকোনো ষড়যন্ত্র হয় অনুপার্জিত অর্থ দিয়ে। ওই অর্থের যোগানদাতা হচ্ছে কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং দাতব্য সংস্থা। যা ধরার আইনি দায়িত্ব দুদকের।’

মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আলোচনা সভায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘১৫ আগস্ট শুধু শোকের দিন নয়, এটি বাঙালি জাতির জন্য লজ্জারও দিন। কারণ, যে মহীরুহ ও মহান ব্যক্তিত্ব দেশের স্বাধীনতা তথা মানুষের মুক্তির জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন, এমনকি এই বাঙালি জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাকে কতিপয় বাঙালিই হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ড বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্কের।’

তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলতেন, আমাকে আমার বাঙালি মারবে কেন? তিনি বিশ্বাস করতেন না কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে। বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ কেমন অবিশ্বাস? আমরা সত্যিই লজ্জিত। আমরা তাকে রক্ষা করতে পারিনি। এই লজ্জা থেকে কীভাবে আমরা মুক্তি পাব তা আমার জানা নেই। তবে আমি মনে করি, এই লজ্জা থেকে বিন্দুমাত্র মুক্তি পাওয়া যেতে পারে, যদি আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু যা যা বলেছেন বা যা যা করেছেন তা করি।’

দুর্নীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, দুর্নীতির মাত্রা কমাতে হবে, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেছেন কৃষক, শ্রমিক দুর্নীতি করে না, দুর্নীতি করে শিক্ষিত লোকেরা। বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু। সরকারি কর্মকর্তারা যদি সৎ হন, বিশেষ করে মন্ত্রণালয়ের সচিব যদি দুর্নীতি না করেন বা দুর্নীতিকে প্রশয় না দেন, তা হলে ওই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি হতে পারে না। দুদকের কর্মকর্তারা যদি দুর্নীতিমুক্ত থাকেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুরণন ঘটবে এই প্রতিষ্ঠানে।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিশাল এক ব্যক্তিত্ব, তাই তার কীর্তি এবং কীর্তিময় জীবন আমাদেরকে অনুসরণ করতে হবে। আলোচনা সভায় অনেকেই বঙ্গবন্ধুর কীর্তি এবং তার আদর্শের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। এই ষড়যন্ত্রের নাগপাশ থেকে জাতিকে রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় দুদকেরও দায়িত্ব রয়েছে। কারণ, সাধারণত যেকোনো ষড়যন্ত্রই করা হয় অনুপার্জিত অর্থ দিয়ে। অনুপার্জিত অর্থ তথা অবৈধ সম্পদ ধরার আইনি দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের।’

তিনি বলেন, ‘অনেক গবেষক বলেছেন, কোনা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কোনো কোনো দাতব্য সংস্থাই ষড়যন্ত্রের অর্থের যোগানদাতা। আর তাদেরেকে  বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব যেহেতু দুদকের, তাই এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকতাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে এই সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমাদের শপথ হোক, আমরা কোনো দুর্নীতিবাজ কিংবা তদবিরবাজের চাপের কাছে মাথা নত করব না। আমরা কোনো অবস্থাতেই কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড়ব না। আমরা যে যে দায়িত্বে আছি, তা আইন অনুযায়ী সততা, নিষ্ঠা ও নির্ভিকচিত্তে পালন করব। তাহলেই হাজার বছরে শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন হবে বলে আমি মনে করি।’

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ ও এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, মহাপরিচালক ড. মো. শামসুল আরেফিন এবং মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ আগস্ট ২০১৭/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়