ক্রাইস্টচার্চে হামলার শিকার যারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, দাদা, কন্যা, আবার কেউবা পুত্র। তারা শরণার্থী, অভিবাসী এবং নিউ জিল্যান্ডে জন্ম নেওয়া। শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলাঅয় এদের কেউ নিহত হয়েছে, কেউবা এখনো নিখোঁজ।
মুসাদ ইব্রাহিম (৩)
মুসাদের ভাই আব্দি ইব্রাহিম জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলার পর মুসাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সেও গিয়েছিল আল-নূর মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য। আব্দি হামলার সময় মসজিদ থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল। হাসপাতালে আহতদের তালিকায় খোঁজা হয়েছে মুসাদের নাম। কিন্তু নেই মুসাদ। সবাই ধরে নিয়েছে ছোট্ট মুসাদ ভয়ংকর বুলেটের আঘাতে মারা গেছে।
আব্দুল্লাহি দিরি (৪)
দার আল হিজরা মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান হাশি জানিয়েছেন তার চার বছরের ভাগ্নে নিহত হয়েছে আল-নূর মসজিদে। শুক্রবার তিনি তার বোনের স্বামী আদান ইব্রাহিমের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। আদান নিজেও আহত হয়েছে। তার চার সন্তান অক্ষত থাকলেও বেঁচে নেই চার বছরের দিরি। ১৯৯০ সালে সোমালিয়া থেকে পালিয়ে এই পরিবারটি আশ্রয় নিয়েছিল নিউ জিল্যান্ডে।
সৈয়দ মিলনে (১৪)
বাবার কাছে সে সাহসী সেনা। ফুটবলের ভক্ত সে। ক্যাশমেয়ার স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র মিলনে মা ও বন্ধুদের সঙ্গে মসজিদে গিয়েছিল। পরিচিতদের একজন তাকে জানিয়েছেন, মসজিদের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছিল মিলনে। তার শরীরের নিম্ম অংশ থেকে বের হচ্ছিল রক্তের ধারা। আবেগ আপ্লুত বাবা জন মিলনে নিউ জিল্যান্ডের এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি আমার ছোট্ট সন্তানটিকে হারিয়েছি। তার বয়স মাত্র ১৪ ছিল। আমাদের আবার দেখা হবে।’
খালেদ মুস্তফা ও তার ছেলে হামজা
মাত্র কয়েক মাস আগে সিরিয়া থেকে প্রাণে বাঁচতে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন খালেদ। নিউ জিল্যান্ডের আসার সময় সঙ্গে ছিল পরিবারের সদস্যরা। খালেদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে নিখোঁজ আছে তার ছেলে ১৬ বছরের হামজা। খালেদের আরেক ছেলে ১৩ বছরের জাইদ এ তথ্য জানিয়েছে। সে নিজেও আহত হয়েছে। শুক্রবার ছয় ঘন্টা সে ছিলো অপারেশনের টেবিলে।
নাইম রাশিদ ও তালহা
আল-নূর মসজিদে বন্দুকধারীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেছিলেন নাইম রশিদ। পাকিস্তান থেকে আসা নাইম একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন। হামলায় তার ছেলে ২১ বছরের তালহাও নিহত হয়েছে।
হুসনে আর পারভিন (৪২)
স্বামী ফরিদ উদ্দিনকে হুইল চেয়ারে করে মসজিদে নিয়ে গিয়েছিলেন হুসনে আর। হামলার আগ মুহূর্তে মসজিদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত কক্ষে ছিলেন তিনি। বন্দুকের গুলির শব্দ পেয়ে তিনি স্বামীর কাছে ছুটে আসছিলেন। হামলাকারীর গুলিতে পথেই নিহত হন তিনি।
মোজাম্মেল হক
ফেসবুক প্রোফাইল অনুযায়ী, বাংলাদেশের চাঁদপুরে বাড়ি তার। ডেন্টিস্টি নিয়ে পড়তে গিয়েছিলেন নিউ জিল্যান্ড। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ক্রাইস্টচার্চে রয়েছেন। এখনো খোঁজ মেলেনি তার।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মার্চ ২০১৯/শাহেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন