‘খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন হবে না’

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে তাকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে না বলেও সরকারকে সতর্ক করে দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ উপলক্ষে এর আয়োজন করে বিএনপি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। শুধু তাই নয়, যারা তাদের (সরকার) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কথা বলতে চায়, লিখতে চায়, তাদেরকে গুম করে দেওয়া হচ্ছে।’

‘একটি কথা স্পষ্ট, দেশে আগামী নির্বাচন হবে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। শেখ হাসিনার অধীনে এবং খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। ২০১৪ সালের মতো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা ২০১৪ সালে তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করেছে। এবারও যদি সেই ধরনের নির্বাচনের চেষ্টা করা হয় তাহলে সে চেষ্টা হবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চেতনাকে হত্যার চেষ্টা।’

আলোচনার উদ‌্যোগ নিন : ফখরুল
সংবিধানের দোহাই তুলে দলীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজনের উদ‌্যোগ থেকে সরে এসে সংলাপের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব‌্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সংসদ দ্বারা তৈরি সংবিধান দেশের মানুষ সমর্থন করে না। তাই সংবিধানের দোহাই না দিয়ে সংলাপ আলোচনার উদ্যোগ নিন। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ইসির পরিচালনায় নির্বাচন দিন।’

একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল একদলীয় শাসন চালাচ্ছে : মওদুদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু আজ সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ দূরের কথা, বরং একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল একদলীয় শাসন চালাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ দেশে আইনাঙ্গনে যে ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সরকার নিজের হাতে বিচারব্যবস্থাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে দিয়েছে। ফলে এখন সরকার ইচ্ছে করলে যেকোনো বিচারককে অপমান করতে পারবে, অজুহাত দিয়ে বিদায় করতে পারবে।’

সরকার বিএনপির আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় রাজপথে দাবির ফয়সালা করতে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান প্রবীণ এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বারবার সমঝোতার আহ্বান জানিয়ে সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। সেজন‌্য আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’

সভায় অন‌্যান্যের মধ‌্যে বক্তব‌্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সী বজলুল বাসিত আন্জু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ, ড. সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৭/রেজা/সাইফুল