ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো অরাজকতা নয়’

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো অরাজকতা নয়’

বিশেষ প্রতিবেদক : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফয়েল আহমেদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে যেকোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় যা যা করার পুলিশ তাই করবে। যেকোনো মূল্যে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব। রায়কে কেন্দ্র করে কোনো অরাজকতা বরদাশত করবে না পুলিশ।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চাইনিজ একাডেমি অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে বিএনপি রাজপথে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নাশকতা সৃষ্টিতে ব্যবহারের  জন্য পেট্রোল বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরকদ্রব্যসহ বিএনপি-জামায়াতের বেশকিছু কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। বিএনপির দাবি, মামলার রায়কে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রায়ে কী হবে তা কেউ জানে না। খালেদা জিয়া সেই মামলায় খালাসও পেতে পারেন, আবার অন্য কিছুও হতে পারে। বিচারাধীন একটা মামলা, এটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। কারো কোনো হস্তক্ষেপ নেই।

তিনি আরো বলেন, দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আদালতের বিরুদ্ধে কারো পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়ানো উচিত নয়। আদালত ন্যায়বিচার করবে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে রায় হবে, সেটা পক্ষেই হোক আর বিপক্ষেই হোক।

তোফয়েল আহমেদ বলেন, আমার মনে হয় নির্বাচনের বছর হিসেবে রায় যদি বিপক্ষেও যায় তাহলেও তারা (বিএনপি) রাজপথে কোনো বিশৃঙ্খলা করবে না। এটা আমার ধারণা। যদি করে তবে আমরা কেন রাজপথে নামব? দল (আওয়ামী লীগ) কেন রাজপথে নামবে? নামবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার তারা তা করবে।

রায় নিয়ে সরকারের মধ্যে কোনো টেনশন আছে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে দেখে কী মনে হয়- কোনো টেনশন আছে? হাসি মুখে আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। এমওইউ সই করেছি। সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি এসেছেন, তার সঙ্গে বৈঠক করেছি। সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখার জন্য যাবেন। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন। এগুলো দেখলে কি আপনাদের মনে হয়, আমরা কোনো চিন্তায় আছি। বরং আমরা অত্যন্ত ভালো অবস্থানে আছি।

তিনি আরো বলেন, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপি ২০১৬ ও ২০১৭ সালে কোনো অরাজকতা করেনি। আগামীতেও তারা করবে না বলে আমার মনে হয়। সাধারণত নির্বাচনের বছরে একটু গোলমাল-টোলমাল হয়। আমি তো মনে করি এবার কিছুই হবে না। অত্যন্ত সুন্দরভাবে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।

সারা দেশে বিএনপির কর্মীদের ধরপাকড় হচ্ছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ধরপাকড় হয়নি। ২০০১ সালে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা তো ঘটছে না। যারা পুলিশের গাড়ি ভেঙেছে, আক্রমণ করেছে, আসামি ছিনতাই করেছে, যাদের বিরুদ্ধে স্পেসিফিক মামলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটা যদি না করে তবে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

খালেদা জিয়ার সিলেট সফরের সময় নেতাকর্মীদের রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ, এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কি না? এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় না। বিএনপি যেখানে যায় সেখানেই কোনো না কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে। আমরাও রাজনীতি করেছি, ছাত্র আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি, কতকিছু করেছি। আমাদের নিয়ে তো এমন পরিস্থিতি হয়নি। সবাই বিএনপিকে নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। খালেদা জিয়া যাতে নিরাপদে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন, রাস্তায় যাতে গোলযোগ সৃষ্টি না হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সে ব্যবস্থায় নিয়েছে। এটা দোষের কিছু না। পুলিশ যা করেছে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য করেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়