ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

খালেদাকে গণতন্ত্রের পথে আসার আহ্বান মতিয়ার

এনআর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ৩ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদাকে গণতন্ত্রের পথে আসার আহ্বান মতিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘২০১৯ সালের শেষে সংবিধান অনুসারে জাতীয় নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আসতে বাধ্য হবেন। হুঙ্কার বাদ দেন,গণতন্ত্রের পথে আসেন।’

 

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে যুবলীগ।

 

বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশে মতিয়া চৌধুরী আরো বলেন, ‘আবার আপনি এখন বলতেছেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। আপনার তো পদ্মা সেতুর করার খেয়ালও হয় নাই। শেখ হাসিনার সরকার ‘৯৬ তে এসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল। কিন্তু আপনি এরপর আপনার ৫ বছরেও কিছু করেন নাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও করে নাই। তারপর যখন আবার শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে উদ্যোগ নিল, তখনো নানা কলকাঠি নেড়েছেন। আপনার হায়া, লজ্জা, ঘৃণা- এর কোনোটাই নেই। আবার সেদিন বলেছেন, বসে থাকলে হবে না, যেকোনো উপায়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। ঢাল নাই, তলোয়ার নাই, খামচি মারেন গায়।’

 

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকও বলেছিল দুর্নীতি হয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে মামলা মোকাবিলা করি, দেশের মাটিতে না, কানাডার মাটিতে। সেখানেই রায় হয়েছে, পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয় নাই।’

 

বিএনপির ৫ তারিখের কর্মসূচি নিয়ে যুবলীগকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এরা বিষধর সর্প। বেড়াল যদি বলে আমি ভাজা মাছ খাব না, আর হায়েনারা যদি বলে পচা লাশ খাব না, এটা বিশ্বাস করলে ঠকতে হবে। তাই যুবলীগ অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দেবে, যাতে তারা কোনো অঘটন ঘটাতে না পারে।’

 

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের মৃত্যু নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আপনার অবরোধের সময় ওই সুন্দরগঞ্জে পুলিশ পুড়িয়ে মারা হয়েছে। লিটন আপনার অত্যন্ত পছন্দের লোক গোলাম আযমকে সুন্দরগঞ্জে মিটিং করতে দেয়নি। ওই এলাকা আজও জঙ্গিদের নানা কর্মকাণ্ডে ক্ষত-বিক্ষত। সেই জায়গায় একজন সিটিং এমপি নিহত হলো। কোথায় আপনি সহানুভূতি জানাবেন, সেখানে আপনি বাঁকা বাঁকা কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর উদারতায় ও বিশাল হৃদয়ের কারণে আপনি ঘর ফেরত পেয়েছিলেন। আর আজকে সেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলেন, এটা বাংলার মানুষ দেখে আর অবাক হয়। কিন্তু আমরা অবাক হই না। কারণ আপনার রুচি, রাজনীতি, আপনার সবকিছুই দেশের মানুষের কাছে ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়েছে। ক্ষমতায় থাকতেও আপনি পার্লামেন্টভিত্তিক রাজনীতি করেন নাই। তখনও ষড়যন্ত্র, খুন এবং হত্যার রাজনীতি করেন, আর এখনো সংসদের বাইরে থেকে একই ধারায় চলছেন।’

 

গুলশানের হর্টি আর্টিজানে হামলা এবং সুন্দরগঞ্জের এমপি লিটন হত্যার ঘটনার সামঞ্জস্য তুলে ধরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘গত রোজার ঈদে ছয় দিন ছুটির সাথে একদিন ছুটি বাড়িয়ে সাত দিন ছুটি মঞ্জুর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে চারদিকে শান্তি ও উৎসব বিরাজ করছিল। সে অবস্থায় হোটেল আর্টিজানের ঘটনা। আবার থার্টি ফার্স্ট নাইট যখন সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে, তখন সুন্দরগঞ্জের ঘটনা। কাজেই্ বেগম জিয়া মনে করেন, মানুষ এগুলো বোঝে না। আপনার মতলব, আপনার জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির খেলা মানুষ বুঝে গেছে। আপনি লিটনের হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপহাস করেন। বাংলার মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার পক্ষে রায় দিয়ে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে, যেমন দিয়েছিল ২০১৪ সালের নির্বাচনে।’

 

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান হিরণ, শহীদ সেরনিয়াবাত, আতাউর রহমান আতা, আবদুস সাত্তার মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ জানুয়ারি ২০১৭/এনআর/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়