ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

খুলনার নির্মাণাধীন রেলস্টেশনের ছাদে ফাটল

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১৬ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খুলনার নির্মাণাধীন রেলস্টেশনের ছাদে ফাটল

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : খুলনায় নির্মাণাধীন আধুনিক রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে।

২ নম্বর প্লাটফর্মের পাঁচটি স্থানে এ ফাটল ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। তবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অতি গোপনে প্লাস্টার দিয়ে ফাটলগুলো ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। রেল প্রকল্প এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে, ফাটল দেখতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রেল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রেল মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান। পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষণিক বিষয়টি রেলমন্ত্রীকে জানানো হলে তিনি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, আধুনিক রেলস্টেশন প্রকল্পের মূল স্টেশন ভবন এবং তিনটি প্লাটফর্মের নির্মাণ কাজ চলছে। এর মধ্যে স্টেশন ভবনের কাজ প্রায় শেষের পথে থাকলেও প্লাটফর্মগুলোর কাজ বেশ বাকি। তবে ২ ও ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ছাদের ৭০০ থেকে ৮০০ ফুট করে ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। মূল স্টেশন ভবন থেকে ২ নম্বর প্লাটফর্মের দিকে কয়েকফুট এগোতেই কয়েকটি অংশে চোখে পড়ে পাঁচটি ফাটল। এর মধ্যে ডান দিকে তিনটি এবং বাম দিকে দুটি। যদিও ফাটলগুলোর ওপর প্লাস্টার করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবুও স্পষ্ট হয়ে রয়েছে চিহ্নগুলো।

আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোসাব্বির হক বিপ্লব ফাটলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে আঁশ জাতীয় ফাটল (হেয়ার ক্রাক) হতে পারে। এটি তেমন কোনো সমস্যা নয়।

তিনি জানান, প্রতিটি প্লাটফর্মের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২০০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট করে। এক নম্বর প্লাটফর্মের ছাদের কাজ এখনো শুরু হয়নি। তবে ২ ও ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ছাদের ৭০০ থেকে ৮০০ ফুট করে ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে।

খুলনা রেলওয়ের সিনিয়র সাব-অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমানও ফাটলের বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, বৈদ্যুতিক পাইপ লাইনের কারণেই ফাটল ধরেছে। বিষয়টি তারা মনিটরিং করছেন। এভাবে আর ছাদ দিয়ে পাইপ নিতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামীতে আর এ ধরনের সমস্যা হবে না।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে রেল মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, বিষয়টি তিনি রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে ফোনে জানিয়েছেন। বিষয়টি শুনে রেলমন্ত্রী সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর বহুপ্রতিক্ষিত স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষের আগেই ফাটল দেখা দেওয়ায় নির্মাণ কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

খুলনার আধুনিক রেলস্টেশন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০১৫ সালের এপিলে শুরু হয়। ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাস মেয়াদে গত বছরের অক্টোবরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিদাকারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পে নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। নতুন রেল স্টেশনটি হচ্ছে তিনতলা বিশিষ্ট। প্রথম তলায় স্টেশন ভবনে থাকছে ছয়টি টিকেট কাউন্টার, বিশ্রামাগার ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় স্টেশন মাস্টারের কক্ষ, রেস্টুরেন্ট, তফসিরি ব্যাংকের শাখা, নারী-পুরুষের জন্য আলাদা বিশ্রামাগার, ফাস্ট ফুডের দোকান এবং রেল কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা কক্ষ। তৃতীয় তলায় রেলওয়ের প্রকৌশলীদের কক্ষ। স্টেশন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে একসঙ্গে ছয়টি ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ এবং বের হতে পারবে। ফলে প্রায় ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/১৬ মে ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/এসএস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়