ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

খেয়া নির্ভর দেড় লাখ মানুষের জীবন

বিলাস দাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৫ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খেয়া নির্ভর দেড় লাখ মানুষের জীবন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : খেয়ায় নির্ভর পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালীর দেড় লাখ মানুষের জীবন।দারছিরা নদীতে একটি ব্রিজের অভাবে নৌকায় করে খেয়া পার হতে হয় তাদের।

বঙ্গোপসাগরের উত্তর মোহনা আগুনমুখা নদীর একটি প্রশাখা এই দারছিরা নদী। বয়ে গেছে, উপজেলা সদর ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে ।নদীটি একসময় খরস্রোতা থাকলেও কালের স্রোতে নদীটি এখন প্রাণহীন হয়ে পরেছে।

দারছিরা নদীর একাংশ পলি মাটিতে ভরে সৃষ্টি হয় বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন। বর্তমানে এই ইউনিয়নে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। ওই ইউনিয়নের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে রাঙ্গাবালী উপজেলাকে কেন্দ্র করে।আবার রাঙ্গাবালী উপজেলায়ও অন্তত ১লাখ বিশ হাজার মানুষের বসবাস। প্রতিদিনই এসব মানুষকে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে এই নদী পার হতে হচ্ছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার অতিক্রম করে খালগোরা বাজার, যা এখানকার ব্যবসায়িক বন্দর হিসাবে পরিচিত। এছাড়াও রাঙ্গাবালী উপজেলা এবং খালগোড়া বন্দরকে ঘিরে রয়েছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, ব্যাংক-বীমা এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। খালগোড়া বাজারের পাশেই দারছিরা নদীর অবস্থান। এই দারছিরা পার হয়েই বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন।  খালগোড়া বাজার সংলগ্ন খেয়াঘাট দিয়েই এই ইউনিয়নবাসীদের নিত্য চলাচল। স্কুল- কলেজ শিক্ষার্থীদেরও নিত্য এই খেয়া পার হতে হয়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলে এই নদী পারাপার।

শীত মৌসুমে নদীটি শান্ত থাকলেও বর্ষা মৌসুমে দারছিরা ভয়াল রুপ ধারণ করে। বঙ্গোপসাগরে সঙ্গে নদীটির সংযোগ অত্যন্ত কাছা-কাছি হওয়ায় বর্ষাকালে নদীটি মূলস্রোতে ফিরে যায়। ফলে ওই মৌসুমে সব বয়সী মানুষ নদী পার হতে গিয়ে ভয়ে ভীত হয়ে পরেন। মাঝে মাঝে ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিগত এক দশকে খেয়া পার হতে গিয়ে অন্তত শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

সঙ্গতকারণে, তাই দারছিরা নদীর ওই অংশে একটি ব্রিজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরী হয়ে উঠেছে।

 

খালগোরা বাজারের ব্যাবসায়ী সমিতি নেতা রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘নৌকার পরির্বতে একটি ব্রিজ নির্মাণ রাঙ্গাবালী বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি। যোগাযোগের সু-ব্যবস্থা না থাকায় এ উপজেলার মানুষগুলো আজও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শুধু গ্রামবাসিই নয়, পুরো উপজেলার সর্বস্তরের লোকজন উপকৃত হবেন।

বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ  চেয়ারম্যান আবু হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এ ইউনিয়নে হাসপাতাল ক্লিনিক এমনকি কোনো এমবিবিএস ডাক্তারও নেই। গ্রামে মধ্যরাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা গর্ভবতীদের নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। এ দাবি কেউ আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। যার জন্য এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’ 

রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ব্রিজ না থাকায় বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন ও খালগোরা বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকার সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি ওখানে একটি ব্রিজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যথা সম্ভব তা শিগগিরই করা হবে।’




রাইজিংবিডি/পটুয়াখালী/৫ এপ্রিল ২০১৭/বিলাস দাস/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়