ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস

ঝুমকি বসু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস

ঝুমকি বসু : গর্ভাবস্থায় যে ডায়াবেটিস হয় তাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয়ে থাকে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস। এই সময় রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে যায়।

প্রায় ১-৩% গর্ভবতী মহিলাদের জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হয়। সাধারণত এই ডায়াবেটিস সন্তান জন্মানোর পর আর থাকে না। এ বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয় বারডেম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসুতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাসুমা জলিলের কাছে। তিনি কথা বলেন রাইজিংবিডির সঙ্গে। এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় তার কাছ থেকে।

এই ডায়াবেটিসে কি বাচ্চার ক্ষতি হয়?

রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে তা মায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চারও ক্ষতি করে। ঠিকমতো চিকিৎসা করা না হলে, সন্তান জন্মানোর সময় এবং পরবর্তীতেও সন্তানের সমস্যা হতে পারে। সন্তানের জন্ডিস হতে পারে, ওজন বেড়ে যেতে পারে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নেমে যেতে পারে। কখনো কখনো শ্বাস-প্রশ্বাসেও সমস্যা দেখা দেয়। বাচ্চা বেশি বড় হয়ে গেলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হয় না, সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রয়োজন হয়।

কাদের সমস্যা বেশি হতে পারে?

পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে।

২৫ বছরের বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে।

অতিরিক্ত মোটা হয়ে গেলে।

গর্ভধারণের আগেই ডায়াবেটিস থাকলে।

যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে।

কোনো মিসকারেজ হয়ে থাকলে।

চিকিৎসা

রক্তে শর্করার পরিমাণ কম রাখার চেষ্টা করতে হবে। এতে সন্তান জন্মানোর সময় জটিলতা কম হয়।

ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকা অনুসরণ করতে হবে। খাদ্যতালিকায় শর্করাজাতীয় খাবার কম এবং আমিষজাতীয় খাবার বেশি রাখতে হবে।

নিয়মিত রক্তের শর্করার পরিমাপ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। খালি পেটে, নাস্তা খাবার দুই ঘন্টা পর, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের দুই ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার পরিমাপ পর্যবেক্ষণ করে একটি নির্দিষ্ট ডায়েরিতে লিখে রাখতে হবে। সপ্তাহের শেষে নিজস্ব চিকিৎসককে তা জানাতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। তিনি যদি মনে করেন রক্তের শর্করা ওষুধে নিয়ন্ত্রণে থাকবে তাহলে নিয়মিত ওষুধ খাবেন। আবার তিনি যদি ইনসুলিন নেওয়ার জন্য বলেন তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে ওষুধে আপনার শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, সেক্ষেত্রে তার পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন নিন।

সতর্কতা

ডায়াবেটিস ধরা পড়লে যত দ্রুত সম্ভব স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে জানান। রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে চিকিৎসককে তা জানিয়ে দিন।

সন্তান হয়ে যাওয়ার ৫-৬ সপ্তাহ পর পরীক্ষা করে জেনে নিন আপনার ডায়াবেটিস রয়ে গেছে কি না। থাকলে চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন কোনো ওষুধ খেতে হবে কি না। সন্তান হয়ে যাবার পরও বছরে অন্তত একবার রক্তের শর্করার লেভেল দেখে নিন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ মে ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়