ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গলার ক্যানসারের পাঁচ প্রাথমিক উপসর্গ

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৭ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গলার ক্যানসারের পাঁচ প্রাথমিক উপসর্গ

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : সাধারণত গলার ক্যানসার শেষ পর্যায়ে না পৌঁছা পর্যন্ত উপসর্গ সৃষ্টি করে না। কিন্তু কখনো কখনো প্রাথমিক পর্যায়েই এ ক্যানসারের উপসর্গ প্রকাশ পেতে পারে। এ প্রতিবেদনে উল্লেখিত এক বা একাধিক উপসর্গ আপনার থাকলে কালবিলম্ব না করে চিকিৎসকের কাছে যান। মনে রাখবেন, ক্যানসার যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যাবে, কার্যকর চিকিৎসার মাধ্যমে বেঁচে থাকার হার তত বৃদ্ধি পাবে।

গলায় পিণ্ড
যদি আপনি গলায় এমন পিণ্ড লক্ষ্য করেন যা পূর্বে কখনো অনুভব করেননি, তাহলে এটি গলার ক্যানসারের একটি লক্ষণ হতে পারে। নিউইয়র্কে অবস্থিত মাউন্ট সিনাই হেলথ সিস্টেমের নাক, কান ও গলা বিভাগের সভাপতি এরিক জেনডেন বলেন, ‘গলায় পিণ্ড প্রকাশের মানে হতে পারে যে টিউমারটি গলা থেকে ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পিণ্ড অনুভবের সবচেয়ে কমন স্থান হলো চোয়ালের ঠিক নিচে।’

 কণ্ঠস্বর পরিবর্তন
ভোকাল কর্ডে গঠিত ক্যানসার প্রায়ক্ষেত্রে কর্কশতা সৃষ্টি করে অথবা কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আনে। এটি হলো গলার ক্যানসারের অন্যতম প্রাথমিক উপসর্গ এবং এই উপসর্গ তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যায়। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির গবেষণা অনুযায়ী দুই সপ্তাহের মধ্যে কর্কশতা বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন চলে না গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

কিছু আটকে থাকার অনুভূতি
যদি আপনি সবসময় গলায় কিছু একটা আটকে আছে অনুভব করেন, তাহলে এটি লক্ষণ হতে পারে যে- একটি টিউমার আপনার গলার কোনো অংশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। মেডিক্যাল পরিভাষায় এই অনুভূতিকে ‘ফরেন বডি সেনসেশন’ বলে। ডা. জেনডেন বলেন, ‘এটি হলো গলার ক্যানসারের খুব কমন একটি লক্ষণ। রোগীরা অনুভব করে যে গলায় কিছু একটা আটকে আছে, কিন্তু তারা তা দেখতে পায় না।’ কোনো কিছু গিলতে কাঠিন মনে হলেও সেটি গলার ক্যানসারের আরেকটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।

কাশির সঙ্গে রক্ত
ক্যানসার ছাড়াও অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য দশায় কাশির সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে, যেমন- নিউমোনিয়া অথবা ব্রঙ্কাইটিস। গলার ক্যানসারের কারণে কাশির সঙ্গে বের হওয়া রক্ত সাধারণত উজ্জ্বল লাল রঙের হয়ে থাকে। এই রক্তে বায়ু ও শ্লেষ্মার মিশ্রণজনিত বুদবুদ থাকতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী গলাব্যথা
আপনার কোনো অসুস্থতা না থাকা সত্ত্বেও গলায় ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হলে তা হতে পারে অনির্ণীত গলার ক্যানসারের অন্যতম প্রাথমিক উপসর্গ। ভোকাল কর্ডের নিচের স্থানে সৃষ্ট টিউমারের ক্ষেত্রে প্রায় সময় এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে, আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি অনুসারে।

গলার ক্যানসারে আরো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়
এটা জানা কথা যে, হিউম্যান পাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু গত দশকের অনেক গবেষণায় মুখের ক্যানসারের সঙ্গেও এইচপিভির যোগসূত্র পাওয়া গেছে এবং এ সময়টাতে নারী ও পুরুষের মধ্যে এ ভাইরাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ক্যানসার চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে- দ্য মাউন্ট সিনাই হসপিটালের প্রতিবেদন বলছে একথা।যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ৭০ শতাংশ গলার পেছনে সৃষ্ট টিউমার হয়ে থাকে এইচপিভি দ্বারা। ডা. জেনডেন বলেন, ‘এইচপিভির সঙ্গে সম্পৃক্ত ক্যানসার বিপজ্জনক হারে বেড়ে চলেছে। এখন পুরুষদের গলার ক্যানসার বেশি হচ্ছে।’ এইচপিভি ও মুখের ক্যানসারের মধ্যকার যোগসূত্র সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি, কিন্তু যা বোধগম্য হয়েছে তা হলো- পুরুষদের গলায় অধিকাংশ এইচপিভি ইনফেকশন হচ্ছে ওরাল সেক্স থেকে। পুরুষদের এ ভাইরাস টেস্টের উপায় নেই বলে যৌনসঙ্গিনীর এইচপিভি স্ট্যাটাস জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এইচপিভি সম্পৃক্ত গলার ক্যানসারের কিছু উপসর্গ হলো- খাবার চাবানোর সময় ব্যথা, গলায় নিরাময় হচ্ছে না এমন ক্ষত, গিলতে সমস্যা অথবা কর্কশ কণ্ঠস্বর।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন : *




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৯/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়