ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বৃষ্টিকে হত্যা করেছে সুমন

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০১, ১৮ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বৃষ্টিকে হত্যা করেছে সুমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : আট বছর আগে বৃষ্টির মেজো বোনের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমনের। গত চার বছর ধরে বৃষ্টিকে উত্যক্ত করত সুমন। পরবর্তী সময়ে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কও হয়। বিষয়টি তাদের পরিবারে জানাজানি হয়ে যায় এবং বোনের সংসার রক্ষার জন্য বৃষ্টি দূরত্ব তৈরি করে সুমনের সঙ্গে।

সম্প্রতি বৃষ্টির বিয়ে কথাও চলছিল। বিষয়টি মানতে পারেনি সুমন। গত সোমবার সে বৃষ্টিকে নিয়ে ঢাকার রমনা থানা এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে তারা একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। সেখানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বৃষ্টিকে হত্যা করা হয়।

গত সোমবার মগবাজারে বৈকালী আবাসিক হোটেল থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বৃষ্টির বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় হত্যা মামলা (নং-২১) দায়ের করে। দু’দিনের মাথায় মো. সুমনকে ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করেন র‌্যাব সদস্যরা।

সুমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানিয়েছে, সুমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ীচালক। সে বৃষ্টিকে উত্যক্ত করত এবং একপর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়ায়। বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে তা নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়। অন্যদিকে বোনের সংসার বাঁচাতে বৃষ্টি সুমনের কাছ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে আসতে থাকে। ফলে সুমনের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির বিয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হলে বিষয়টি সুমনকে আরো ক্ষিপ্ত করে তোলে। সুমন বৃষ্টিকে হুমকি দেয় যে, তার সাথে বৃষ্টির ঘনিষ্ট সম্পর্কের অনেক ছবি এবং ভিডিও রয়েছে।

র‌্যাব-৩ এর সিও লে. কর্ণেল এমরানুল হাসান রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সুমন এ বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য বৃষ্টিকে গত সোমবার মগবাজারের বৈকালী আবাসিক হোটেলে নিয়ে আসে এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই হোটেলের ৪০৭ নম্বর রুম ভাড়া নেয়। হোটেল কক্ষে পূর্বের ঘটনা নিয়ে উভয়ের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে সুমন শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়। কিন্তু বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় সুমন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বৃষ্টির ওড়না বৃষ্টির গলায় পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।

এমরানুল হাসান বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে বৃষ্টির ওড়নাটি সুমন দাঁত দিয়ে কেটে ওড়নার এক প্রান্ত বৃষ্টির গলায় পেঁচিয়ে অন্য প্রান্ত ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে রেখে পালিয়ে যায়। আত্মগোপন করার জন্য সে ঢাকা ছাড়ার পরিকল্পনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে তাকে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

এদিকে সুমনকে ‍দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে নেয় রমনা থানা পুলিশ। আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হোটেলে কোনো রেকর্ড ছিল না
সোমবার বৃষ্টি ও সুমন বৈকালী আবাসিক হোটেলে উঠলেও সেখানে তাদের কোনো ‘রেকর্ড’ ছিল না। তবে হোটেল ম্যানেজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছেন তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠেছিলেন। হোটেল থেকে তাদের নাম বলা হয়েছিল রিয়াজ এবং প্রিয়া। এমনকি হোটেলে ওঠার পর তাদের ছবিও সংরক্ষণ করেনি কর্তৃপক্ষ।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, বাড়তি টাকার বিনিময়ে তাদেরকে রুম ভাড়া দেওয়া হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জুলাই ২০১৮/নূর/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়