ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

টেরাবাইট ছাড়িয়ে পেটাবাইট!

মো. রায়হান কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৮ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টেরাবাইট ছাড়িয়ে পেটাবাইট!

মো. রায়হান কবির : তথ্য সংরক্ষণের জন্য আমরা অনেক ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করে এসেছি। ফিতা বা টেপ যুক্ত ক্যাসেট, ফ্লপি, সিডি, ডিভিডি, পেন ড্রাইভ কিংবা হালের মেমোরি কার্ড। তথ্য সংরক্ষণের ক্রমধারায় বেড়েছে এর ধারণ ক্ষমতাও।

কিলোবাইট থেকে মেগাবাইট, মেগাবাইট থেকে গিগাবাইট কিংবা গিগাবাইট থেকে টেরাবাইট। আমরা সাধারণত টেরাবাইটেই সীমাবদ্ধ ছিলাম। কারণ এর চেয়ে বড় ধারণ ক্ষমতার সঙ্গে খুব একটা পরিচিত ছিলাম না। কিন্তু দিন দিন অনেক ধরনের তথ্য সংরক্ষণ মাধ্যম আসছে। কিছুদিন আগে ক্রিস্টালে তথ্য সংরক্ষণ এবং তা স্থায়িত্বের দিক থেকেও যথেষ্ট টেকসই বলে প্রচার করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল এমন একটা ক্রিস্টাল মাধ্যম, যা পৃথিবীর ছাপা হওয়া সকল বই ধারণে সক্ষম! তখন ভেবেছিলাম এটাই বোধহয় সবচেয়ে উৎকৃষ্ট এবং ধারণ ক্ষমতার সেরা প্রযুক্তি।

কিন্তু প্রযুক্তি গতি হচ্ছে চলমান পৃথিবীর মতো। এর কোনো বিশ্রাম নেই। অবিরাম চলতেই থাকে। তাই প্রযুক্তিতে শেষ বলে কথা নেই। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন তথ্য সংরক্ষণের আরেক মাধ্যম ডিএনএ! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। আপনার ডিএনএ শুধু আপনার কোষের কোডিংই বলবে না। এখন থেকে এটা হতে পারে তথ্য সংরক্ষণের বিরাট আধার। গবেষণা অন্তত সেরকমই বলছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জর্জ ক্রাঞ্চ, ইউরোপিয়ান বায়োইনফরমেশন ইনস্টিটিউটের গবেষক নিক গোল্ডম্যান এবং ইওয়ান বার্নি প্রমুখ অ্যালগোরিদম সিস্টেমের ১ ও ০ কে রূপান্তর করেছেন এ, জি, সি এবং টি তে। ফলে নতুন ধরনের বাইনারি সিস্টেম আসতে যাচ্ছে, যা আগের চেয়ে আরো উন্নত প্রযুক্তিতে তথ্যধারণ করবে। এই কোডিং দিয়েই তথ্য ডিএনএতে সংরক্ষণ করা হবে।

কারণ আমাদের ডিএনএ অনেক কমপ্যাক্ট তথ্য সংরক্ষণে সক্ষম। আর এটা দীর্ঘস্থায়ী। কেননা হাজার বছরের পুরোনো মাথার খুলি বা কঙ্কাল থেকেও ডিএনএ সংগ্রহ করা যায়। ফলে এর স্থায়িত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। আর ধারণ ক্ষমতাও অনেক। বিজ্ঞানীদের মতে, মাত্র এক গ্রাম ডিএনএ ২১৫ পেটাবাইট তথ্য ধারণে সক্ষম। এক পেটাবাইট মানে ১০ লাখ গিগাবাইট! এবার ধারণা করুন আমাদের ডিএনএ কতো বড় তথ্যের আধার।

তবে এটা এখনও পর্যন্ত অনেক ব্যয়বহুল একটা ব্যবস্থা। বিজ্ঞানীরা মাত্র ২ মেগাবাইট তথ্য ডিএনএতে সংরক্ষণ করতে প্রায় ৭০০০ ডলার খরচ করেছে। আর সেখান থেকে এই তথ্য পড়তে খরচ পড়েছে ২০০০ ডলার! তবে এটা ভেবে ঘাবড়ালে চলবে না। শুরুর দিকে সকল প্রযুক্তি ব্যয়বহুল হয়, ধীরে ধীরে এটা নিয়ে গবেষণা চলতে থাকে। তখন এর খরচ সহনীয় মাত্রার চেয়েও অনেক কমে যায়।

যেমন একসময় আপনি ৬৪ মেগাবাইট ধারণ ক্ষমতার পেনড্রাইভ বা মেমোরি কার্ড কিনেছেন দুই বা আড়াই হাজার টাকায়। আর এখন আপনি ৬৪ গিগাবাইট ধারণ ক্ষমতার পেন ড্রাইভ বা মেমোরি কার্ড কিনতে পাচ্ছেন দেড় থেকে দুই হাজার টাকায়। চিন্তা করুন কতগুণ দাম কমেছে। এটাও একসময় এই ধরনের খরচে চলে আসবে। তার মানে সামনে তথ্য সংরক্ষণের একক হিসেবে চলে আসছে পেটাবাইট।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মার্চ ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়