ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গেইন ট্যাক্স সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবি রিহ্যাবের

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১১ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গেইন ট্যাক্স সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবি রিহ্যাবের

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : আবাসন খাতকে এগিয়ে নিতে ও অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ এবং রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর দাবি করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

শনিবার রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীতে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর যৌথ সভায় এসব দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

বৈঠকে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে আর্থিক সরবরাহের অভাবে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যথাযথ গৃহঋণ না থাকায় বিক্রীত ফ্ল্যাটের রিপ্লেসমেন্ট হচ্ছে না। সময়মতো ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ঋণ খেলাপি হচ্ছে, উচ্চ রেজিস্ট্রেশন ব্যয়ের ফলে ক্রেতারা রেজিস্ট্রেশনে আগ্রহ হারাচ্ছে, তাই রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা আরো জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় সাড়ে ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৪ শতাংশ, স্ট্যাম্প ডিউটি ৩ শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ এবং ভ্যাট দেড় থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ। তাই রেজিস্ট্রেশন ব্যয় সাড়ে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশে কমিয়ে আনা জরুরি।

এছাড়া ডেভেলপারদের জন্য ৫টি শ্রেণিতে আবাসিকে প্রতি বর্গমিটারে ৩০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা আয়কর দিতে হচ্ছে। এছাড়া বাণিজ্যিকে প্রতি বর্গমিটারে দিতে হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ৬৫০০ টাকা। আয়করের এ হারকে প্রতি বর্গমিটারের আবাসিকের জন্য ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং বাণিজ্যিকের জন্য প্রতি বর্গমিটারে ৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকায় নামিয়ে আনার দাবি করেন। গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবিও জানানো হয়।

দেশের ফ্ল্যাটের সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা নেই। সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠলে নতুন একটা পেশাজীবী গড়ে উঠবে। এই সেক্টরে কর্মচাঞ্চল্য তৈরি হবে। সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন একদিকে যেমন এই শিল্পকে এগিয়ে নেবে তেমনি বাজারে অর্থের লেনদেনও বাড়াবে। অন্যদিকে সরকারও তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, আমরা বৃত্তের বাইরে আসছি। জনগণের কাছে আমাদের সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। ২০১৯-এর জুলাইতে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে। নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে যেন ব্যবসায়ীদের জটিলতা না থাকে এজন্য ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এনবিআর কাজ করছে বলে জানান নজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, আমরা যুগোপযোগী কর আইন করছি। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করছি। নতুন আয়কর আইন বাংলায় করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, পল্লী উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গ্রামে আবাসন ব্যবস্থা উন্নয়ন। এক্ষেত্রে রিহ্যাব কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে দেশের আবাসন শিল্প নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। নানা করারোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। কর্মসংস্থানের বড় খাত হওয়া সত্ত্বেও গত চার-পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিগুলো কেবল লোকবল ছাঁটাই করছে।

সভাপতির বক্তব্যে রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল বলেন, আবাসন খাতের জন্য সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার চালু প্রয়োজন। আর এজন্য সেকেন্ডারি বাজারে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানো প্রয়োজন। আলমগীর শামসুল এ সময় সেকেন্ডারি বাজারে সর্বমোট ৩ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ করাসহ অ্যাপার্টমেন্টে বিক্রয়ের মূল্য ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবি জানান।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূইয়া, এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, পারভেজ ইকবাল প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ নভেম্বর ২০১৭/নাসির/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়