ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে হাইব্রিড ব্রি-৩ জাতের ধানের চাষ সফল

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২০ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গোপালগঞ্জে হাইব্রিড ব্রি-৩ জাতের ধানের চাষ সফল

পরীক্ষামূলক হাইব্রিড ব্রি-৩ ধানের বীজ উৎপাদনের প্লট

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে পরীক্ষামূলক ভাবে হাইব্রিড ব্রি-৩ জাতের ধানের চাষ সফল হয়েছে । উৎপাদন করা সম্ভব হবে সুস্থ-সবল বীজ। ফলে কৃষকেরা একদিকে যেমন আর্থিক লাভবান হবেন, অন্যদিকে বেশি দাম দিয়ে বিদেশি বীজ কিনে প্রতারিত হতে হবে না। এ ছাড়া দেশের প্রতিটি স্থানে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের চাল উৎপাদন বাড়বে।

 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী বোরো মৌসুমকে টার্গেট করে গোপালগঞ্জে হাইব্রিড ব্রি-৩ ধানের বীজ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে ।

 

দেশে প্রতি বছরই বোরো মৌসুমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে হাইব্রিড ধানের বীজ আমদানী করা হয়। কিন্তু জলবায়ু ও প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে চারা না গজালে লোকসানের মুখে পড়েন কৃষকরা। কৃষকদের কথা বিবেচনা করে সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামে কৃষক হাবিবুর রহমানের জমিতে ব্রী-৩ জাতের ধানের চাষ করা হয়। এতে ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। তাই আগামী বোরো মৌসুমে নিজের উৎপাদিত বীজ দিয়ে চাষাবাদ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন কৃষকেরা।

 

এ জাতের ধান আবাদ করলে ১৪৫ দিনেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। আর একর প্রতি ফলন পাবেন প্রায় ৯০ মন। নিজেদের প্রয়োজনীয় ধান রেখে বাড়তি ধান দিয়ে বীজ তৈরি করলে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিদেশি হাইব্রিড ধানের বীজ কিনতে হবে না

 

কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় চরবয়রা ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয়ের আয়োজনে এবং গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কিংকর চন্দ্র দাস। এসময় ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয়, ভাংগা অফিসের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আমীর হোসেন, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্রি গাজীপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ হাফিজার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

 

 

এতে জেলার ৫ উপজেলার ৪০ জন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরে কৃষক হাবিবুর রহমানের জমি থেকে কাটা হয় এ ধান। কৃষক মো: হাবিবুর রহমান জানান, বোরো মৌসুমে অধিক দামে বিদেশি বীজ কিনে রোপন করি। কিন্তু অনেক সময় চারা অঙ্কুরিত হয় না। এতে আমাদের লোকসান দিতে হয। যে কারণে এ বছর ব্রি উৎপাদিত ব্রি-৩ ধান রোপন করি। ধানও ভাল হয়েছে। এখান থেকে নিজের জন্য ধান রেখে বীজ তৈরি করব।

 

ব্রি’র গাজীপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: হাফিজার রহমান বলেন, ‘আমন মৌসুমে কৃষক তার নিজ জমিতে এ হাইব্রিড জাতের বীজ ধান উৎপাদন করে নিজ উৎপাদিত বীজ দিয়ে বোরো মৌসুমে আবাদ করতে পারবেন। এতে কৃষককে বেশি দামে হাইব্রিড ধানের বীজ কিনতে হবে না। কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে ও প্রতারণার হাত থেকে বেঁচে যাবে।

 

ব্রি’র আঞ্চলিক কার্যালয়, ভাংগা অফিসের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আমীর হোসেন বলেন, এ ধানের চাষ করে ১৪৫ দিনের মধ্যে কৃষক ফসল ঘরে তুলতে পারবে। হেক্টর প্রতি ফলন ৯ মে. টন অর্থাৎ একরে ৯০ মন ধান পাবেন কৃষকরা।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কিংকর চন্দ্র দাস জানান, খুব সহজ আর অল্প খরচে এ পদ্ধতিতে কৃষকরা বীজ উৎপাদন করতে পারবেন। এক একর জমিতে কৃষকদের ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। আর একরে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বীজ উৎপাদন সম্ভব হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/২০ নভেম্বর ২০১৬/বাদল সাহা/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়