ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গ্র্যাজুয়েট হল জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের চার স্টার্টআপ

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গ্র্যাজুয়েট হল জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের চার স্টার্টআপ

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচ সোমবার জিপি হাউজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে নিজেদের প্রকল্প উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যদিয়ে গ্র্যাজুয়েট হল জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের চার স্টার্টআপ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন বলেন, ‘এই উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পকে সমর্থন দেয় এবং আমি জিপি এক্সেলেরেটরে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে তারা চলতি পথে পার্কিং এর স্থান খুঁজে বের করার সমস্যা সমাধানে কাজ করছে যা আমাকে আনন্দিত করেছে।’

বিগত তিন বছরে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর কর্মসূচির অগ্রগতি এবং অংশগ্রহণকারী স্টার্টআপগুলোর ক্রমবর্ধমান দৃঢ় মান এর কথা বলতে গিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী স্টার্টআপ ইকো সিস্টেম গড়ে তুলেছে এবং দ্রুত দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মেন্টশিপ কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে।’

গত কয়েক বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এবং স্টার্টআপের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভুতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের বেশ কয়েকটি স্টার্টআপ বৈশ্বিকভাবে নিজেদের বিস্তৃতি ঘটিয়েছে এবং এর মধ্যে কয়েকটি স্টার্টআপ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে। যেসব স্টার্টআপ বাংলাদেশকে উদ্ভাবনের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে এসেছে তাদের অনেকগুলোই জিপি অ্যাকসেলেরেটর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ও অ্যালামনাই। 

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের হেড অব ডিজিটাল সোলায়মান আলম বলেন, ‘গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের রূপকল্প আর গ্রামীণফোনের রূপকল্প একই। আমরা এখানে, তরুণদের ক্ষমতায়নে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে সীমানা পেরিয়ে তাদের বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছি।’ 

জিপি অ্যাকসেলেরেটর একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম যা নির্বাচিত স্টার্টআপগুলোকে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রশিক্ষকদের সঙ্গে চার মাস মেয়াদী মেন্টরশিপ কর্মসূচির সুযোগ করে দেয়। নির্বাচিত স্টার্টআপরা ৮ শতাংশ ইক্যুইটির বিপরীতে সিডফান্ডিং হিসেবে পায় ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়াও, স্টার্টআপগুলো ১১ হাজার ২শ’ মার্কিন ডলার সমমূল্যের অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ক্রেডিট (এডব্লিউএস) ও জিপি হাউজে অফিস করার সুযোগ লাভ করে। চার মাসের এ কর্মসূচিতে দলগুলো দেশ ও দেশের বাইরের প্রশিক্ষক ও শিল্পখাত বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে টার্ম শিট, ভ্যালুয়েশন, ফাইন্যান্সিয়াল মডেলিং ও ব্র্যান্ডিং- এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রশিক্ষণের সুযোগ লাভ করে। এর বাইরেও, প্ল্যাটফর্মটি স্টার্টআপগুলোকে ব্যবসার অগ্রগতিতে সম্ভাব্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগে সহায়তা প্রদান করে।

দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরিতে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব ইকোসিস্টেম মিনহাজ আনোয়ার বলেন, ‘আপনি যদি বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করার কথা ভাবেন তাহলে দেখবেন আমাদের স্টার্টআপগুলোই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগযোগ্য। আমরা স্টার্টআপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি এবং স্টার্টআপগুলোর প্রশিক্ষণে দেশের এবং আঞ্চলিক প্রশিক্ষকদের সঙ্গে কাজ করেছি যাতে করে উদ্যোক্তারা অত্যন্ত দৃঢ়তা ও দ্রুততার সঙ্গে বাজারে প্রবেশ করতে পারে।’

জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের জন্য এক হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়ে সেখান থেকে কঠোর নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সেরা পাঁচটি স্টার্টআপ নির্বাচিত হয়। চার মাসের মেন্টরশিপ কর্মসূচি ও কেপিআই সেশনের পর চারটি স্টার্টআপ সফলভাবে পঞ্চম ব্যাচের কর্মসূচিতে গ্র্যাজুয়েট হয়। এ স্টার্টআপগুলো দেশের সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। এসব স্টার্টআপের মধ্যে কয়েকটির সম্ভাবনা রয়েছে বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের। 

আলাদা ও বৈচিত্র্যময় ডোমেইন ও শিল্পখাতে নিজেদের প্রবৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয় তার সমাধানে এ চারটি স্টার্টআপ কার্যকরীভাবে এগিয়েছে। স্টার্টআপগুলো হলো : 

সার্চ ইংলিশ
ভয় ও লজ্জা কাটিয়ে উঠে সাধারণ মানুষ যেন তাদের ইংরেজি দক্ষতা বাড়াতে পারে এরই প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ‘সার্চ ইংলিশ’। ‘জীবন পরিবর্তনে ইংরেজি শিক্ষা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ প্ল্যাটফর্ম ১৫ লাখের বেশি মানুষকে অনলাইনে ইংরেজি শেখার উন্নয়নে সহায়তা করছে। এক বছরের সময়ের মধ্যে ‘সার্চ ইংলিশ’র এক হাজারের বেশি সফলগাঁথা রয়েছে।  

পার্কিং কই
পার্কিং কই এর ‘পার্কিং কই’ অ্যাপের মাধ্যমে চালকদের সহায়তা করছে কাছাকাছি পার্কিং-এর জায়গা খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে। একইসঙ্গে, এটা মালিকদের জন্য যাদের পার্কিং-এর জায়গা এখনও খালি পড়ে আছে তাদের কাছে বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি করছে।

সিওয়ার্ক
‘সিওয়ার্ক’ মাইক্রো জব প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিয়োগদাতারা সহজেই যেকোনো বড় কাজের সমাধান করিয়ে নিতে পারেন। ‘সিওয়ার্ক’ কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে নির্বাচিত ডিস্ট্রিবিউটর পুলের মধ্যে দিয়ে দেয়। এখানের সহস্রাধিক ভেরিফায়েড কট্রিবিউটর তাদের কাজ শেষ করে অনলাইনেই কাজটি সাবমিট করে। ‘সিওয়ার্ক’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে কাজের মান যাচাই করে এবং নিয়োগদাতাদের কাছে সম্পন্ন কাজটি জমা দিয়ে দেয়।

অনুকিট
জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের অন্যতম অভিনব স্টার্টআপ হচ্ছে ‘অনুকিট’। অনুকিট অ্যাপ এসএমইগুলোকে তাদের দৈনন্দিন যোগাযোগকে কার্যকরী উপায়ে করার ব্যাপারে সহায়তা করে। অনুকিট অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্যবসার মালিকরা তাদের ব্যবসার পারফরম্যান্সের হিসাব রাখতে পারবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়