ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঘুমিয়ে থাকায় খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা যায়নি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঘুমিয়ে থাকায় খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে থাকার কারণে বুধবার তাকে আদালতে হাজির  করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। এজন্য নাইকো দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ৩ মার্চ ধার্য করেছেন আদালত।

পুরান ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতের এজলাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে চার্জ শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেন।

বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় মামলার কার্যক্রম শুরু হলে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছিলাম। আদালত এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ দাখিল করতে বলেছিলেন। আমরা দুইদিন পরে উচ্চ আদালতের আদেশ দাখিল করেছি। আজ (বুধবার) ম্যাডাম অসুস্থতার জন্যই আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।

ওই সময় বিচারক আদালতে উপস্থিত ডেপুটি জেলার শাহরিয়ারকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত করা হয় নাই? জবাবে তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) ঘুম থেকে এখনো ওঠেননি। তাই তাকে আনা সম্ভব হয় নাই।

এরপর মাসুদ আহমেদ বলেন, সুস্থ কোনো মানুষ ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকতে পারে না। অসুস্থতাজনিত ঘুমের কারণেই তিনি আদালতে আসতে পারেননি। তাই দ্রুত চিকিৎসার বিষয়ে আদেশ দেওয়া প্রয়োজন।

এ সময় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তিনি অসুস্থ থাকলে আমাদের চিকিৎসার বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। তবে আদালত জেলকোড আইনের বাইরে যেতে পারেন না। জেল কোড অনুযায়ী আদালত আদেশ দিতে পারেন।

এরপর বিএনপি নেতা এ মামলার আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ সেটা সবাই জানেন। কোনো সুস্থ মানুষ হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসবেন না এবং দুপুর ১২ পর্যন্ত ঘুমিয়েও থাকবেন না। আদালত তাকে দেখেছেন। তিনি দিন দিন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।

জবাবে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, ওনার (খালেদা জিয়া) ঘুম ভাঙেনি, তাই আদালতে হাজির করা যায়নি। অসুস্থতার কথা একবারও বলা হয়নি।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, যেহেতু আসামির অনুপস্থিতে চার্জ শুনানি করা যায় না। তাই পরবর্তী চার্জ শুনানির জন্য আগামী ৩ মার্চ ধার্য করা হলো। একই সঙ্গে তিনি চিকিৎসার বিষয়ে আদেশ পরে দিবেন বলে জানিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন।

এর আগে মামলাটিতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে ৭টি ধার্য তারিখ চার্জ গঠনের শুনানি হয়। তবে মামলাটিতে এখনো খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি হয়নি।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, বিতর্কিত ব্যবসায়ী তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, প্রাক্তন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একে এম মোশাররফ হোসেন ও প্রাক্তন সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, ঢাকা ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম),  জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বাপেক্সের প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক।

২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটির তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন  আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়