ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

চলতি বছর ১ কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেবে ক্যানসার

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চলতি বছর ১ কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেবে ক্যানসার

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইএআরসি)  অনুমানে বলা হয়েছে, চলতি বছর ক্যানসারে বিশ্বের প্রায় ১ কোটি মানুষ মারা যাবে।

আইএআরসি’র এই গবেষণাপত্রটি ১৯ সেপ্টেম্বর, সিএ (ক্যানসার জার্নাল ফর ক্লিনিশিয়ানস) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বের ১৮৫টি দেশের ক্যানসারের তথ্যের ওপর নির্ভর করে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষকরা অনুমান করেছেন যে, ২০১৮ সালে ১ কোটি ৮১ লাখ মানুষের ক্যানসার নির্ণয় হবে এবং ক্যানসারে মৃত্যু ঘটবে ৯৬ লাখ মানুষের। গবেষণাপত্রটি বলা হয়েছে, আটজন পুরুষের মধ্যে একজন এবং এগারো জন নারীর মধ্যে একজন ক্যানসারে মারা যাবে।

গবেষণাপত্রের তথ্যানুসারে, বিশ্বব্যাপী এ বছর ফুসফুস ক্যানসার নির্ণয় (২১ লাখ) এবং এই ক্যানসারে মৃত্যু (১৮ লাখ)- উভয় ক্ষেত্রেই শীর্ষ কারণ। ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এখনো নারীদের তুলনায় পুরুষদের অনেক বেশি। এ বছর ফুসফুস ক্যানসারে যেখানে নারীদের আক্রান্তের সংখ্যা হবে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার, সেখানে পুরুষদের আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। তবে আইএআরসি জানিয়েছে, নারীদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসার উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সম্ভবত এমন দেশগুলোতে যেখানে জনসাধারণের মধ্যে ধূমপান বন্ধের প্রচারাভিযান এখনও জোড়ালো করা হয়নি।

ফুসফুস ক্যানসারের পরে সর্বাধিক কমন ক্যানসার হিসেবে দেখা গেছে ব্রেস্ট ক্যানসার, কলোরেকটাল ক্যানসার (কোলন ক্যানসার এবং বাওয়েল ক্যানসার), প্রোস্টেট ক্যানসার এবং স্টমাগ ক্যানসার। শুধু এক ব্রেস্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে, গবেষকরা চলতি বছর প্রায় ২১ লাখ নির্ণয়ের আশঙ্কা করছেন এবং ৬ লাখ ২৭ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে, যদিও ব্রেস্ট ক্যানসারের কার্যকরী চিকিৎসা রয়েছে (উন্নত দেশগুলোতে)।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ভৌগলিক এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ওপর নির্ভর করে ক্যানসারের ধরণ এবং প্রকোপ পরিবর্তিত হয়। গবেষণার তথ্যমতে, বিশ্বে এ বছর ১ কোটি ৮১ লাখ নতুন ক্যানসার রোগীর প্রায় অর্ধ সংখ্যক এবং অর্ধ সংখ্যকের বেশি মৃত্যু এশিয়ায় দেখা যেতে পারে, যেহেতু বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশের বসবাস এ অঞ্চলে। এদিকে বিশ্বে ক্যানসারের ক্ষেত্রে আফ্রিকায় আক্রান্তের হার মাত্র ৫.৮ শতাংশ কিন্তু মৃত্যুহার ৭.৩ শতাংশ হতে পারে, কারণ প্রগতিশীল রোগগুলো সেখানে সাধারণ এবং অনেক অঞ্চলে চিকিৎসা সেবার অভাব রয়েছে।

বিভিন্ন দেশে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে জীবনযাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্যানসারের ঘটনা বেড়ে চলেছে, যেমন কলোরেকটাল ক্যানসার। দারিদ্রতা ও রোগ সংশ্লিষ্ট ক্যানসারের ঘটনা হ্রাস পাচ্ছে, যেমন সার্ভিক্যাল ক্যানসার, যা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারণে হয়। উন্নত স্ক্রিনিং ও টিকার মাধ্যমে এ ধরনের ক্যানসার জনসাধারণের মধ্যে হ্রাস পাচ্ছে।

গবেষকরা বলেন, ‘ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলার বিষয়টি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের গুরুত্ব বোঝাচ্ছে। যেহেতু নিশ্চিতভাবে ক্যানসার প্রতিরোধ করার কোনো উপায় নেই, তাই ৪০ শতাংশ নতুন ক্যানসারের ঘটনা পরিবেশগত ও আচরণগত ঝুঁকিগুলো কমিয়ে এড়ানো যেতে পারে, যেমন: ধূমপান ও অ্যালকোহল পান।

তথ্যসূত্র : টাইম



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়