ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চলনবিলে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত জেলেরা

অদিত্য রাসেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চলনবিলে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত জেলেরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : মৎস্য ভাণ্ডারখ্যাত সিরাজগঞ্জ জেলার চলনবিল অঞ্চলের পানি নামতে শুরু করায় জেলেদের জালে প্রতিদিন ধরা পড়ছে শত শত মণ মাছ।

এই মাছকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশসহ ৯টি উপজেলার প্রায় কয়েকশ’ শুঁটকি চাতালের শ্রমিকরা।

চলনবিল অঞ্চলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহাজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ বিলের পানি নামতে শুরু করেছে।

পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ টেংরা, পুঁটি, খলসে, বাতাসি, চেলা, মলা, টাকি, বাইম, শৈল, গুতুম, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কৈসহ নানা প্রজাতির মাছ। চলনবিলের হাট-বাজারে তাজা মাছও বিক্রি হচ্ছে।

আর উত্তরবঙ্গের মধ্যে দেশীয় প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরির অসংখ্য চাতাল চলনবিলে আছে। যা আশ্বিন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস পযর্ন্ত চালু থাকে। এসব চাতালে টেংরা, পুঁটি, খলসে, বাতাসি, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি ইত্যাদি মিঠা পানির মাছ শুঁটকি করা হয়।



চলনবিলের শুঁটকির কদর রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। চলনবিলের চাতালে তৈরি শুঁটকি সৈয়দপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এমনকি বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিদেশেও রয়েছে তার প্রচুর চাহিদা।

স্থানীয়রা জানান, এক দশক আগেও চলনবিলে প্রচুর পরিমাণ ছোট মাছ ধরা পড়ত। আর এ মাছ আশ্বিন থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত মিলতো তুলনামূলক বেশি। তাই এ অঞ্চলে তাজা মাছের চাহিদা পূরণের পর অতিরিক্ত মাছ স্বল্পমূল্যে কিনে শুঁটকি তৈরি করে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে অনেক শুঁটকি চাতালের মালিক উপার্জন করতেন লাখ লাখ টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে চলনবিল অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সকল ধরনের মাছই চলে যাচ্ছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থানে। তাতে পূরণও হচ্ছে দেশের জাতীয় আমিষের চাহিদা।

শুঁটকি চাতাল পল্লি ঘুরে দেখা গেছে, শুঁটকি তৈরির ভরা মৌসুমকে কাজে লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। চাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে অসংখ্য প্রজাতির মাছ।

শুঁটকি তৈরির শ্রমিক আমেনা খাতুন ও আয়শা বেগম জানান, প্রতি ৩ কেজি মাছে ১ কেজি শুঁটকি হয়ে থাকে। যার বাজার মূল্য প্রকার ভেদে ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত।

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, শহরাঞ্চলে এর দাম একটু বেশি। চলনবিলে শুঁটকি তৈরি শুরু হলেও তা বাজারজাত করতে আরো মাস খানেক সময় লাগবে। তারা শুঁটকি তৈরি করে প্যাকেটজাত করে। তারপর মৌসুমের চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এসব শুঁটকি। আবার কেউ কেউ চাতালে তৈরি শুঁটকি মাছগুলো ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে চাতাল থেকেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন।




রাইজিংবিডি/সিরাজগঞ্জ/২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/অদিত্য রাসেল/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়