ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চাঁদে মানুষ পাঠাবে জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন

মোখলেছুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২০ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদে মানুষ পাঠাবে জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন

মোখলেছুর রহমান : অ্যামাজনের সফল প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ই-কমার্স শিল্পে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বিশ্বের ধনী ব্যক্তি হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। এছাড়াও নতুন ব্যবসায়ও নাম লিখিয়েছেন তিনি।

২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ব্লু অরিজিন নামের মহাকাশযান তৈরির কোম্পানি। আর এবার সেই কোম্পানি থেকে ব্লু মুন নামে নতুন একটি লুনার ল্যান্ডার তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছেন বেজোস।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক ইভেন্টে জেফ বেজোস এই ঘোষণা দেন। সাংবাদিক, মিডিয়া কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা এবং গবেষকদের উদ্দ্যশ্যে দেয়া এক বক্তৃতায় বেজোস জানান, ‘ব্লু মুন’ এর সাহায্যে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

ব্লু অরিজিন এ বছরের শেষ নাগাদ মহাকাশে মানুষ্যবাহী একটি মহাকাশযান পাঠাতে যাচ্ছে। মূলত চন্দ্র পৃষ্ঠে মানুষ পাঠানোর জন্যই এই নতুন ‘ব্লু মুন’ মহাকাশযানটি তৈরি করেছে কোম্পানিটি। বেজোস জানান, এই প্রকল্পের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো খরচ কমিয়ে মানুষের চন্দ্র অভিযানকে সহজ করে তোলা।

মুন ল্যান্ডার ছাড়াও ব্লু অরিজিন আরো দুটি মহাকাযান তৈরি করছে। এ দুটি মহাকাযান মূলত সাবর্বাটাল রকেট, যা স্বল্পকালীন ফ্লাইটের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এগুলো বড় উপগ্রহগুলোর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করবে না। এটি নিউ গ্লেন দ্বারা পরিচালিত হবে, যা ২০২১ সালে উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত এবং পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ৪৫,০০০ কেজি পণ্য উত্তোলন করতে সক্ষম হবে। উভয় রকেটকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন তা পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

গত সপ্তাহে ব্লু অরিজিন তাদের নতুন শেপার্ড রকেটটির পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ৩৮টি পরীক্ষা চালিয়েছে এবং এটি ইতিমধ্যে তার ১১তম মিশনটি সম্পন্ন করেছে। শেপার্ড রকেটগুলো ১০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর ক্যাপসুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার গতিতে উর্ধ্বগামী চলতে থাকে। এছাড়া নতুন শেপার্ড রকেট নিজেই তার স্থাপনাযোগ্য স্থানের উপর স্বাধীনভাবে নেমে আসে।

নিরাপদ রকেট উৎক্ষেপণের এই প্ল্যাটফর্মকেই বেজোস মহাকাশ ভ্রমণের অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে চান। গত বছরের রয়টার্সের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বেজোসের সংস্থার মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণের টিকেটের দাম পড়বে ২০০,০০০ ৩০০০,০০০ ডলার।

অবশ্য এক্ষেত্রে ভিন্ন পথে হাঁটছে এলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশযান নির্মাতা কোম্পানি স্পেসএক্স। এই মহাকাশযান প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি বৃহদাকার নকশা এবং রকেট উৎপাদনের দিকেই নজর দিয়েছে। ‘ফ্যালকন হেভি’ হচ্ছে কোম্পানিটির বর্তমান সময়ের সর্ববৃহৎ রকেট এবং এটি কমপক্ষে ৬৩,৮০০ কেজি ওজন নিয়ে পৃথিবী কক্ষপথে ভ্রমণ করতে সক্ষম।

স্পেসএক্স তার পরবর্তী প্রজন্মের রকেট প্ল্যাটফর্ম স্টারশিপ নিয়েও কাজ করছে, যা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ১০০,০০০ কেজি ওজনেরও বেশি পণ্য উত্তোলন করতে সক্ষম বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্টারশিপকে ২০২০ সালের মধ্যে কক্ষপথ উৎক্ষেপণের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে।

উভয় কোম্পানিরই মহাকাশ ভ্রমণ নিয়ে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানিরও এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। রকেট ল্যাব, ভার্জিন গ্যালাকটিক এবং ভেক্টরের মতো স্টার্টআপগুলো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এবং সরকারি সংস্থার দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার লক্ষ্যে নিজেদের রকেট প্ল্যাটফর্মগুলো উন্নত করছে।

তবে চাঁদে মানুষ পাঠানোর মতো উদ্যোগ এখনো কোনো বেসরকারি কোম্পানি নিতে পারেনি। আর তাই হয়ত বেজোস সেদিকেই নিজের লক্ষ্য স্থির করেছেন।

সূত্র: টেকক্রাঞ্চ



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়