ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সচিবরা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০২, ৮ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সচিবরা

কেএমএ হাসনাত : মানুষের গড় আয়ু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা বাড়ানোর আবদার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে অবসরে যাওয়ার পর বিনিয়োগ খাত হিসেবে সঞ্চয়পত্রে ক্রয়ের সীমাও বাড়ানোর দাবি তাদের।

তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মতামত দেননি।

রোববার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে থাকা সচিবরা এ নিয়ে যুক্তিতর্কের অবতারণা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রুদ্ধদ্বার এই আলোচনায় মোট ৩১ জন সচিব উপস্থিত ছিলেন।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আজম, পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম, আইএমইডি সচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে কয়েকজন সচিব যুক্তি দেখান মানুষের আয়ু বেড়েছে। কিন্তু অবসরের বয়সসীমা আগের মতোই রয়েছে। তাই এই বয়সের সীমা ৬০ বছর করা হোক। অন্য পক্ষ বলছে, অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হলে প্রশাসনে পদোন্নতির বিষয়টি দীর্ঘায়িত হয়ে পড়বে। নতুন যারা চাকরিতে ঢুকতে চাচ্ছেন তাদেরও চাকরিতে প্রবেশ দীর্ঘসূত্রতায় পড়বে। তাই অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বেশ কয়েকজন সচিব সরকারি চাকরি জীবন থেকে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কথা বলেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে, বর্তমানে মানুষের আয়ুষ্কাল ৭০ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু চাকরির অবসরের বসয়সীমা সে অনুযায়ী বাড়েনি। এখন অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছরই রয়ে গেছে। তাই তাদের অবসরের বয়সসীমা অন্ততপক্ষে এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করা হোক। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন উপস্থিত বেশ কয়েকজন সচিব। তাদের যুক্তি হচ্ছে, দেশে কর্মহীন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক। এই মুহূর্তে যদি অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হয় তবে তাদের চাকরিতে প্রবেশ দীর্ঘাসূত্রতায় পড়বে। তাই অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই মতের সঙ্গে একমত পোষণ করা হয়।

সূত্র জানায়, সচিবরা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধির জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন। তারা বলেন, বর্তমানে সরকারি চাকুরেদের বেতন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা যখন অবসরে যাবেন তখন বেশ ভালো অঙ্কের টাকা পেনশন হিসেবে গ্রহণ করবেন। একেকজন সচিবের পেনশনের পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকা টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার অর্ধেক তারা নগদ উত্তোলন করতে পারবেন। বাকি অর্ধেকটা তাদের মাসিক পেনশন হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে পেনশনাররা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারেন। একইভাবে পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্রয়সীমা রয়েছে  একক নামে ৪৫ লাখ টাকা। এই দুই ক্রয় সীমাও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ এপ্রিল ২০১৮/হাসনাত/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়