ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

পবিত্র ঈদুল ফিতর

ছড়িয়ে পড়ুক সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৯, ১৬ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ছড়িয়ে পড়ুক সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য

‘ও মন্ রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ্।/ তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্ আসমানি তাগিদ্/...’। দীর্ঘ এক মাসের সংযম সাধনার শেষে ঘরে ঘরে আনন্দ ও খুশির বার্তা বয়ে নিয়ে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। রমজানের শুরু থেকে এই দিনটির জন্য মুসলিম বিশ্ব অপেক্ষা করে থাকে। মুসলিম সমাজে দিনটি বিশেষ আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপন করা হয়। বিশ্বের মুসলিম সমাজকে ঐক্যের পথে, কল্যাণের পথে ত্যাগ ও তিতিক্ষার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত করে এই ঈদুল ফিতর। রাসুল (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘প্রত্যেক জাতিরই নিজস্ব আনন্দ-উৎসব রয়েছে, আমাদের আনন্দ-উৎসব হচ্ছে এই ঈদ।’ -(বোখারী ও মুসলিম)

মাহে রমজান আমাদের আত্মশুদ্ধির যে শিক্ষা দিয়েছে, ঈদুল ফিতর সেই শিক্ষা কাজে লাগানোর দিন। এক মাসের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজেদের অতীত জীবনের সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হতে পারার পবিত্র অনুভূতি ধারণ করেই পরিপূর্ণতা লাভ করে ঈদের খুশি। এই দিনে ধনী-গরিব সবাই দাঁড়াবে এক কাতারে। ঈদ একটি আনন্দ উৎসব হলেও এই উৎসব তখনই তাৎপর্যময় হয়ে ওঠে যখন তা সর্বজনীন রূপ নেয়। তাই ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। এখানে ধনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই।

রমজান মাসে আমরা যে সংযমের অনুশীলন করেছি, তা আমাদের জীবন চলার সব ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘনের নেতিবাচক প্রবণতা থেকে রক্ষা করবে—এমনটিই প্রত্যাশা। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা মানুষকে যেমন ত্যাগের শিক্ষা দেয়, তেমনি ঈদ উৎসবকে ধনী-নির্ধন-নির্বিশেষে আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগাভাগির তাগিদ দেয়। স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কার্পণ্য থাকা উচিৎ নয়।

ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করা প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। একই সঙ্গে সামর্থ্যবানদের জন্য জাকাত আদায় করাও ফরজ। ফিতরা ও জাকাত আদায়ের মাধ্যমে শ্রেণিভেদ ভুলে সবাই একত্রে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারলেই সার্থক হয়ে ওঠে ঈদ। এতে অর্থনৈতিক বৈষম্য যেমন দূর হয়, তেমনি সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকাশ পায়। অন্যদিকে ঈদগাহে ধনী-গরিব নির্বিশেষে এক কাতারে নামাজ আদায় শেষে কোলাকুলির মাধ্যমে স্থাপিত হয় মহান ও সুদৃঢ় সামাজিক বন্ধন।

ঈদের ছুটিতে অনেক কর্মজীবী মানুষ রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহর থেকে পরিবার-পরিজনসহ গ্রামের বাড়িতে যান। কিন্তু দেখা গেছে প্রতি বছরই ঘরমুখো মানুষকে যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন ও বাড়তি বগি সংযোজন করার পরও অনেককে ট্রেনের ছাদে চড়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। বাস, ট্রেন ও লঞ্চের যাত্রীদের টিকিটের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হতে পারে টিকিট কেনাবেচা ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা উন্নত করার মাধ্যমে। এছাড়া সড়ক যানজট ও দুর্ঘটনার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।

সবাই নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করবেন এ  প্রত্যাশা আমাদের। সবার ঘরে ঘরে ফিরে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি। ছড়িয়ে পড়ুক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য। ঈদের আনন্দ হোক সর্বজনীন- পবিত্র ঈদুল ফিতরে এটাই আমাদের কামনা। ঈদে আমরা সবার নিরাপত্তা, স্থিতি, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করি। রাইজিংবিডির সব পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, শুভানুধ্যায়ী সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুন ২০১৮/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়