ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জঙ্গি মাহফুজের প্রকৃত নাম হাসান

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৯ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জঙ্গি মাহফুজের প্রকৃত নাম হাসান

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সদ্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ। কিন্তু এই নামে এলাকার লোকজন তাকে চেনে না। তার প্রকৃত নাম হচ্ছে আব্দুর সবুর খান ওরফে হাসান।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা ও গড়াই নদী বেষ্টিত চর সাদিপুর ইউনিয়নের কাবলিপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক রেজাউল করিম ওরফে রাজেম শেখের দশ ছেলে-মেয়ের মধ্যে মাহফুজ ওরফে হাসান হচ্ছেন চতুর্থ। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষায় প্রথম ছাড়া কখনো দ্বিতীয় হয়নি হাসান।পঞ্চম শ্রেণিতে পেয়েছিল বৃত্তি। পাবনা জিলা স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ১০ জনের একজন ছিল সে।

বর্তমানে সে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ রয়েছে। অন্য তিন ভাই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করেন। বড় ভাই নজরুল ইসলামের এলাকায় চায়ের দোকান রয়েছে। আরেক ভাই মনিরুল ইসলাম একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন এবং আরেক ভাই হেলাল কুমিল্লায় কাঠ মিস্ত্রির কাজ করেন।

হাসানের বোন রহিমা বেগম জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে সে বৃত্তি পেয়েছিল।নিজের পড়াশোনার খরচ সে নিজেই চালাতো। প্রতিদিন সে বাড়ি থেকে পাবনায় নদী পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করত। সে যে জঙ্গি, এটা তারা প্রথম জানতে পারেন ২০০৫ সালে যখন র্যা ব-পুলিশ তাকে খুঁজতে বাড়িতে আসে।

রহিমা জানান, সে সময় হাসান পাবনা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। র্যা ব-পুলিশ বাড়িতে অভিযান চালানোর পর সে বাড়ি ছাড়া হয়। সে সময় মোবাইল ফোনে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। ২০০৮ সালে বউ নিয়ে শেষ বারের মত সে বাড়িতে এসেছিল। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সে কোনো যোগাযোগ রাখেনি।

গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থেকে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা চালানোর অন্যতম পরিকল্পনাকারী উত্তরাঞ্চলীয় জেএমবির কমান্ডার সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজসহ নব্য জেএমবির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল মাহফুজ। ২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়া গড় বিস্ফোরণের পর ভারত সরকার তাকে ধরতে ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে।

২০০৬ সালে সে ভারতে পালিয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সে জেএমবির ভারতীয় শাখার আমির ছিল। গুলশান হামলার পলাতক চার জঙ্গির একজন ছিল সে। গত বছর হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পরিকল্পনার সময় সে উপস্থিত ছিল। হামলার আগে সে অস্ত্র ও গ্রেনেড নিয়ে আসে। ২০১৪ সালে সে ফের ঢাকায় আসে। এরপর সে পুরোনো জেএমবি ছেড়ে যোগ দেয় নব্য জেএমবিতে।     



রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/৯ জুলাই ২০১৭/কাঞ্চন কুমার/রুহুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়