ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

জনপ্রিয়তা পেয়েছে ভাসমান খাঁচায় মাছ-সবজির চাষ

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১১ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জনপ্রিয়তা পেয়েছে ভাসমান খাঁচায় মাছ-সবজির চাষ

বগুড়া প্রতিনিধি : দেশীয় উদ্ভাবিত ‘ভাসমান খাঁচাতে মাছ ও সবজির সমন্বিত চাষ পদ্ধতি’দেশের বিভিন্ন স্থানেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চাষাবাদ অধিক লাভজনক হওয়ায় বেকার যুবকরাও এই পদ্ধতিতে আকৃষ্ট হচ্ছে । নারীরাও জড়িয়ে পড়ছে এই পদ্ধতির সাথে।

উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে এই পদ্ধতির চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে প্রয়োগিক  গবেষণা শুরু করেছে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড.মাহফুজুল হক ভাসমান খাঁচাতে মাছ ও সবজির সমন্বিত চাষের এই পদ্ধতি  (আইএফসিএএস) উদ্ভাবন করেন। বন্যাকবলিত নিম্নাঞ্চল, হাওর-বাওর-বিলসহ পরিত্যক্ত পুকুরকে কাজে লাগানোর লক্ষ্য নিয়েই এই পদ্ধতির উদ্ভাবন ।  এই পদ্ধতিতে একটি খাঁচায় এক হাজার  মাছ ও সবজি চাষ করা সম্ভব । উদ্ভাবনটি প্যাক্টিকেল অ্যাকশন বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, ঝিনাইদহ ও যশোর জেলায়। বিশেষ করে ওই অঞ্চলের নারীরাও এখন ঝুঁকে পড়েছে সমন্বিত চাষ পদ্ধতিতে।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গৃহিনী চন্দনা রাণী মুঠোফোনে জানান, সমন্বিত পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষ করে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। প্রথম দিকে একটি খাঁচা দিয়ে শুরু করলেও এখন তিনটি খাঁচায় চাষাবাদ করছেন। তিনি ওই আয় দিয়ে সন্তানদের পড়াশুনার খরচ জোগাচ্ছেন।

আরতী দাস নামে আরেক গৃহিনী জানান, কয়েক মাস আগেও তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। এখন সমন্বিত পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষ করে সংসারের অভাব ঘুচেছে। পাশাপাশি সারা বছরের আমিষের ঘাটতিও পূরণ হচ্ছে।

প্যাক্টিকেল অ্যাকশন বাংলাদেশ এর আঞ্চলিক কো-অডিনেটর এজিএম শফিকুল ইসলাম জানান, যশোরে এ পর্যন্ত ৫০জন গৃহিনী এই পদ্ধতির আওতায় চাষাবাদ শুরু করেছেন।  দিনদিন এসব অঞ্চলে তাদের আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

উদ্ভাবক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড.মাহফুজুল  হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভাসমান খাঁচাতে মাছ ও সবজির সমন্বিত এই চাষ পদ্ধতি  দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন ভারত, নেপাল, ভূটানসহ অফ্রিকার কয়েকটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পরেছে। এতে তারা লাভবানও হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘যদি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে এই পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে বেকারদের কর্মসংস্থান হবে।’
এরই মধ্যে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর মাঝে এই পদ্ধতির চাষাবাদ কার্যক্রম পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। ইতিমধ্যে ৬০০ মাছ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন খাঁচা তৈরির কাজ চলছে। প্রতি খাঁচার দৈর্ঘ্য ১১ ফিট এবং প্রস্থ সাড়ে ৭ ফিট। খরচ হবে প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা।

বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের উপ-পরিচালক মাকছুদ আলম খান বলেন, ‘স্বল্প খরচে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষ জনপ্রিয় করে তুলতে কাজ শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতিকে প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে আরও টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।’

 

 

রাইজিংবিডি/বগুড়া/১১ নভেম্বর ২০১৭/একে আজাদ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়